কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে দেশজুড়ে সহিংস পরিস্থিতির পর শৃঙ্খলা ফেরা শুরু করলেও বিএনপি–জামায়াত ফের খারাপ পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, এই পরিস্থিতি আজকে শান্তিপূর্ণ, এটাই কিন্তু শেষ নয়। তারা কিন্তু ঘাপটি মেরে বসে আছে। এরা ঘাপটি মেরে বসে আছে আরও খারাপ পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে। বিএনপি আগুন সন্ত্রাস করে না? ১৩ সালে কে করেছে? ১৪ সালে কে করেছে? ১৫ সালে কে করেছে? বিএনপি সেই পুরোনো দিনের চেহারা আবারও তুলে ধরেছে এবং তারা নির্বাচন চায় না, গণতন্ত্র চায় না। তারা ক্ষমতায় যেতে চায় সন্ত্রাসী কায়দায়, চোরাগোপ্তা পথে অগ্নিসন্ত্রাস করে তাণ্ডব চালিয়ে তারা ক্ষমতায় যেতে চায়। শান্তিপূর্ণ গণতন্ত্রের পথ বিএনপি–জামায়াতের পথ নয়। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে দলের নেতাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন কাদের। খবর বিডিনিউজের।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি নজিরবিহীন তাণ্ডবে আমাদের দেশ ও মাতৃভূমি আক্রান্ত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর সারা জীবনের ত্যাগ সংগ্রাম ও লড়াইয়ের ফলে যে বিজয়ী বাংলাদেশ, সেই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ, স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব আক্রান্ত হয়েছে। পদ্মা সেতু, ঢাকা এলিভেটেট এঙপ্রেস, মেট্রোরেলসহ বাংলাদেশের মেগা প্রজেক্টগুলো আজকে আক্রান্ত। বিদেশিরাও পরিদর্শন করে স্তম্ভিত হয়েছে এরকম ধংসযজ্ঞ কী করে সম্ভব তা বলেছে। এ থেকে এটাই প্রমাণিত হয় ছাত্রদের কোটা আন্দোলনের উপর ভর করে বিএনপি–জামায়াত তাদের সেই চির পরিচিত আগুন সন্ত্রাস নিয়ে মাঠে নেমেছে। অর্জনগুলোকে ধংস করতে পাঁয়তারা করছে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে দেশে ধংসযজ্ঞ হয়েছে দাবি করে কাদের বলেন, তার নির্দেশে সারা দেশ থেকে নাশকতা মামলার আসামি, সন্ত্রাসীদের ঢাকায় জড় করেছে এবং তারাই শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে এই সকল নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের এবং হত্যাযজ্ঞের দায় তাদের। যারা সারি সারি লাশের ওপর দাঁড়িয়ে ক্ষমতা দখলের স্বপ্নে বিভোর।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এই আন্দোলনে যতক্ষণ শিক্ষার্থীরা ছিল, ততক্ষণ কোনো সহিংসতা বাংলাদেশে হয়নি, পুলিশও সহনশীল ভূমিকা পালন করেছে। সকল পক্ষ ধৈর্য ধারণ করেছে। এই অন্দোলন বিএনপি–জামায়াতের সশস্ত্র ক্যাডাররা টার্গেট করে হামলা চালিয়েছে। এটা পুরোপুরি পরিকল্পিত, কোথায় কোথায় আক্রমণ করবে, এটা তারা আগে থেকে নীল নকশা তৈরি করেছে এবং তার মহড়া দিয়েছে মাসের পর মাস। কিছু দিন আগে ঢাকা মহানগরসহ বিভিন্ন জায়গায় বিএনপির কমিটিতে পদায়ন করেছে। এই হামলা পরিচালনার জন্য তাদেরকে পদায়ন করেছে। পরিকল্পিতভাবে তাদের পদায়ন করা হয়েছে, কোথায় কে আক্রমণ করবে, কারা সহযোগিতা করবে, সব নীল নকশা আগে থেকে করে রেখেছে। মির্জা ফখরুল মিথ্যা তথ্য দিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আবারও উসকানি দিচ্ছে।
গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, গুজব সন্ত্রাস ও মাদকের মত। গুজব আপনার সন্তানকে সর্বনাশের দিকে ঠেলে দিতে পারে। কাজেই এই গুজব প্রতিরোধ করতে হবে। আওয়ামী লীগের সকল সংসদ সদস্য নেতৃবৃন্দ দায়িত্বপ্রাপ্তদের নিজ নিজ এলাকাতে অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি যেকোনো পরিস্থিতিতে।
দেশে কারফিউ চলাকালে সেনাবাহিনী কোথাও গুলি ছোড়েনি দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, সেনাবাহিনী অত্যন্ত দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করছে। কারফিউতে সেনাবাহিনী কোথাও পরিস্থিতি শান্ত করতে একটা গুলি ছুড়েছে, এমন নজির আমাদের কাছে নেই।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক আব্দুস সবুর, উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন।