এগার মাস পর ফের শুরু হচ্ছে সাক্ষ্যগ্রহণ

কোকেন মামলা

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ at ৬:৩৮ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বন্দরে কোকেন আটকের ঘটনার মামলায় ১১ মাস পর ফের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হচ্ছে। এর আগে খানজাহান আলী লিমিটেডের চেয়ারম্যানসহ ১০ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর কয়েক মাসের মাথায় হাই কোর্টের আদেশে দীর্ঘ সময় মামলাটির বিচার কার্যক্রম স্থগিত ছিল। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি মামলাটির পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ ধার্য হয়েছে।
চট্টগ্রাম মহানগর আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী আজাদীকে বলেন, এ মামলায় কারাগারে থাকা এক আসামি হাই কোর্টে জামিন আবেদন করেছিলেন। হাই কোর্ট আসামির জামিন শুনানির প্রশ্নে মামলাটি অধিকতর তদন্তের নির্দেশনা দিয়ে রুল জারি করেন। হাই কোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে পরবর্তীতে সুপ্রিম কোর্টে একটি আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। আপিলের প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ হাই কোর্টের দেয়া আদেশের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নির্দেশনার পর বর্তমানে মামলার বিচার কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে বাধা নেই। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি মামলাটির পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ ধার্য করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, একই সাথে আপিল বিভাগ আগামী ৬ মাসের মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তির আদেশ দিয়েছেন। এ সময়ের মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তি না হলে আসামিকে জামিন দেয়া যাবে বলে উল্লেখ করেছেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা ধারণা করছেন, মামলাটির চার্জ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচার শুরুর পর ইতিমধ্যে চারজন গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীর সাক্ষ্য নেয়া হয়েছে। হাই কোর্টের নির্দেশনার আলোকে নতুন করে মামলাটি তদন্তে গেলে বিচার কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটবে। ইতিপূর্বে দুই দফা মামলাটির তদন্ত সম্পন্নের পর বিচার কার্যক্রম শুরু হয়।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালে ২৯ এপ্রিল চার্জ গঠনের মাধ্যমে মহানগর দায়রা আদালতে মামলাটির বিচার শুরু হয়। ২০২০ সালে ১৮ ফেব্রুয়ারি মামলার বাদী ওসমান গণির সাক্ষ্যগ্রহণের মাধ্যমে মামলাটির প্রথম সাক্ষ্যপর্ব শুরু হয়। ওই বছরের ৩ মার্চ আলামত জব্দ তালিকা প্রস্তুতকারী শাহাদাত হোসেনের এবং ১৮ মার্চ মামলাটির সর্বশেষ দুজন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ নেয়া হয়। ১৮ মার্চ পুলিশ সদস্য বদিউর রহমান ও সাইফ পাওয়ারটেকের সুপারভাইজার জসিম উদ্দিনের সাক্ষ্য নেয়া হয়েছিল। এরপর ১ মাস ধরে সাক্ষ্যগ্রহণ বন্ধ ছিল। এ মামলার অভিযোগপত্রে মোট ৬৭ জন সাক্ষী রাখা হয়েছে।
মামলার নথিপত্রে জানা গেছে, হাই কোর্টে চট্টগ্রাম কারাগারে বন্দি মো. গোলাম মোস্তফা সোহেল জামিন চেয়ে একটি মিস মামলা (৭১৯১৩/২০১৯) করেন। ২০১৯ সালে ৯ ডিসেম্বর হাই কোর্ট মামলাটির শুনানি শেষে আদেশ দেন। গত বছর সুপ্রিম কোর্টের আপিলেট ডিভিশনে রাষ্ট্রপক্ষ হাই কোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল (১০৭৪/২০২০) করে। একই বছরের ১৭ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ আপিলের শুনানির জন্য আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর তারিখ নির্ধারণ করে আদেশ দেন। গত মাসে সুপ্রিম কোর্টের আদেশের কপি চট্টগ্রাম আদালতে এসে পৌঁছে।
২০১৫ সালের ৭ জুন চট্টগ্রাম বন্দরে থাকা একটি কন্টেনার জব্দ করে সিলগালা করে দেয় কাস্টমসের শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর। পরে পরীক্ষা করে সেখানে কোকেনের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। ২৮ জুন বন্দর থানায় আমদানিকারক খানজাহান আলী লিমিটেডের চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ ও সোহেলকে আসামি করে মাদক আইনে একটি মামলা করে পুলিশ। পরে আদালত মামলায় চোরাচালানের ধারা যুক্ত করার নির্দেশ দেয়।
২০১৯ সালে কোকেন মামলায় চার্জ গঠনের তারিখের আগে পালিয়ে যায় মামলার প্রধান আসামি খানজাহান আলী লিমিটেডের চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ। তার ভাই মোস্তাক আহমেদ এবং অপর দুই আসামি লন্ডন প্রবাসী ফজলুর রহমান ও বকুল মিয়া শুরু থেকেই পলাতক থাকে। বাকি ছয় আসামির মধ্যে গোলাম মোস্তফা সোহেল ও আতিকুর রহমান বর্তমানে চট্টগ্রাম কারাগারে রয়েছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধতিন দফা দাবিতে আন্দোলনে নার্সিং ও মিডওয়াইফের শিক্ষার্থীরা
পরবর্তী নিবন্ধঅভয় দিলেন তারা