এখনো বৈষম্যের শিকার শিক্ষকরা

বিশ্ব শিক্ষক দিবস আজ

ইমাম ইমু | শনিবার , ৫ অক্টোবর, ২০২৪ at ৫:৪৫ পূর্বাহ্ণ

দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি এবং সমাজ বিনির্মাণে শিক্ষকের ভূমিকা অনস্বীকার্য। সমাজকে সুন্দরভাবে গড়ে তোলার কারিগরও শিক্ষক। বাবামা জন্ম দেওয়ার পর সন্তানের বিকশিত বা শিক্ষার দীক্ষা দেওয়ার দায়িত্ব শিক্ষকের। এজন্য মাবাবার পরেই শিক্ষকের স্থান। শিক্ষক সমাজ মূল্যবোধ সম্পন্ন শিক্ষা ব্যবস্থা বিস্তারের মাধ্যমে পরিবার, সমাজ তথা রাষ্ট্রের সংকট উত্তরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। কিন্তু যারা শিক্ষা দেয় তাদের অনেকেই এখনো আর্থিক অবস্থার দৈন্যতা কাটিয়ে উঠতে পারেনি। সামাজিকভাবে বেশ অবহেলিত। অনেক শিক্ষক পারিবারিক জীবনে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে শখআহ্লাদগুলো দিতে হয় জলাঞ্জলি।

জানা যায়, এ দেশের ৯৫ শতাংশ শিক্ষার্থী লেখাপড়া করে মাধ্যমিক স্কুলকলেজ ও মাদ্রাসায়। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক ও কর্মচারীর সংখ্যা প্রায় ৬ লাখ। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বেশিরভাগে নেই লাইব্রেরি, গবেষণাগার ও খেলার মাঠ। যেগুলোতে আছে তেমন একটা মানসম্মত নয়। নেই প্রয়োজনীয় সংখ্যক শ্রেণিকক্ষ, শিক্ষা উপকরণ ও আসবাবপত্র। অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত নন। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকের অবস্থা আরও করুণ।

আজ বিশ্ব শিক্ষক দিবস। ১৯৬৬ সালের ৫ অক্টোবর ফ্রান্সের প্যারিসে শিক্ষকদের একটি সম্মেলনে শিক্ষকদের অধিকার দায়িত্ব এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে কথা হয়েছিল। সে দিন শিক্ষকদের কথা চিন্তা করে ইউনেস্কো এবং আইএলও কিছু পরামর্শে স্বাক্ষর করেন। তারপর ১৯৯৪ সালে

ইউনেস্কোর ২৬তম অধিবেশনে ৫ অক্টোবরকে বিশ্ব শিক্ষক দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হলে ১৯৯৪ সাল থেকে প্রতিবছর ৫ অক্টোবর শিক্ষকদের অসামান্য অবদানকে স্বীকৃতি দিতে শিক্ষকদের স্মরণে শিক্ষকদের অধিকার কল্যাণে সম্মানার্থে বিশ্বব্যপী বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালিত হয়ে আসছে। ইউনেস্কোর মতে বিশ্ব শিক্ষক দিবস শিক্ষা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে শিক্ষকদের অসমান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ পালন করা হয়। বিশ্বের ১০০টি দেশে এ দিবস পালন করা হয়।

জানা যায়, নীতিমালা অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সব উপজেলাজেলা ও জাতীয় পর্যায়ে আজ ‘বিশ্ব শিক্ষক দিবস’ উদযাপন করার নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। নির্দেশনায় বলা হয়, জাতি গঠনে শিক্ষকের অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ তাদের সম্মাননা জানানোর মাধ্যমে সকল শিক্ষককে উৎসাহিত ও অনুপ্রাণিত করার লক্ষে ‘বিশ্ব শিক্ষক দিবস’ উদযাপন করা হবে। এবারের শিক্ষক দিবসেরর প্রতিপাদ্য হলো ‘শিক্ষকের কন্ঠস্বর : শিক্ষায় একটি নতুন সামাজিক অঙ্গীকার’।

স্বাধীনতার ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও শিক্ষকরা আজও বঞ্চনার শিকার বলে জানান বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় সহসভাপতি অধ্যাপক মো. আবু তাহের চৌধুরী। তিনি বলেন, স্বাধীনতার এতো বছর পরেও নানাভাবে শিক্ষকরা বৈষম্যের শিকার। বিশেষ করে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা। সম্প্রতি দেশে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন হয়েছে, সর্বত্র বৈষম্য দূর করার কথা উঠছে, আমি মনে সবার শিক্ষা ব্যবস্থায় বিদ্যমান সকল বৈষম্য দূর করা হোক।

বাকশিস, চট্টগ্রাম : বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতিবাকশিস চট্টগ্রাম জেলা শাখা ও মহানগর শাখার যৌথ উদ্যোগে আজ বিকাল ৪ টায় এনায়েত বাজার মহিলা কলেজ থেকে র‌্যালি বের করা হবে। পরে কলেজ মিলনায়তনে প্রতিপাদ্য বিষয়ে আলোচনা সভা এবং বাকশিস সাংস্কৃতিক ফোরামের পরিবেশনায় সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। বাকশিস চট্টগ্রামের কর্মসূচি সফল করার জন্য চট্টগ্রাম জেলা সভাপতি অধ্যক্ষ সমীর কান্তি দাশ ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, মহানগর সভাপতি অধ্যক্ষ আ ন ম সরওয়ার আলম ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবু বকর সিদ্দিকী শিক্ষকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রথম দিন আজ বিএনপি ও জামায়াতের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক
পরবর্তী নিবন্ধভারতে ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা পেল বাংলা