এখনো বিশ্বকাপ ট্রফি জয়ের স্বপ্ন দেখেন আকরাম খান

ক্রীড়া প্রতিবেদক | বুধবার , ৯ আগস্ট, ২০২৩ at ১১:০৯ পূর্বাহ্ণ

এখনো পর্যন্ত বাংলাদেশ আইসিসির কোন ইভেন্টে একটি ট্রফি জিতেছে সেটি হচ্ছে ১৯৯৭ সারের আইসিসি ট্রফি। ১৯৯৯ সাল থেকে বাংলাদেশ খেলছে বিশ্বকাপ। ২০০৭ সাল থেকে খেলছে টিটোয়েন্টি বিশ্বকাপ। কিন্তু স্বপ্নের সে বিশ্বকাপ ট্রফি এখনো স্বপ্নই থেকে গেছে। আকরাম খান বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক। শুধু তাই নয় ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশ যে আইসিসি ট্রফি জিতেছিল সে ট্রফি জয়ের অন্যতম নায়ক ছিলেন আকরাম খান। ছবিতে তার সাথে থাকা বাংলাদেশ দলের অপর দুই সাবেক অধিনায়ক নাইমুর রহমান দুর্জয় এবং খালেদ মাহমুদ সুজনরাও খেলেছেন একাধিক বিশ্বকাপ। কিন্তু স্বপ্ন পূরন করতে পারেননি। তাই নিজেদের অপূর্ণ স্বপ্ন পুরন করতে চান তাদের উত্তরসূরীদের দিয়ে। বিশ্বকাপের স্বপ্নের ট্রফি হাতে অনেকবারই ছবি তুলেছেন আকরাম খান। কিন্তু এভাবে ছবি তোলাতে কোন তৃপ্তি খুঁজে পাননা দেশের ক্রিকেটের এই কিংবদন্তি। বিশ্বকাপ জিতে সে ট্রফি হাতে ছবি তুলতে পারাটার সাথে কোন কিছুর তুলনা হয় না বলেও জানালেন আকরাম খান।

১৯৯৯ থেকে ২০২৩। পেরিয়ে গেছে অনেক সময়। আকরাম খানদের যুগ পেরিয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেট এখন তামিম সাকিবদের যুগে। কিন্তু স্বপ্নের ভুবনে এতটুকু পরিবর্তন আসেনি আকরাম খানের। এখনো তিনি স্বপ্ন দেখেন বাংলাদেশ বিশ্বকাপ জিতবে। কিন্তু বিশ্বকাপ জিততে হলে যে পথে চলতে হয় একটি দলকে সে পথে কি বাংলাদেশ দল আছে ? তেমন প্রশ্নের জবাবে আকরাম খান জানালেন আমরা এখনো সঠিক পথে হাঁটছি। যদিও তামিমের ওয়ানডে অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেওয়া। তার ইনজুরি। বিশ্বকাপের দলে থাকতে পারবেন কিনা তার অনিশ্চয়তা। মাহমুদ উল্লাহর মত সিনিয়র ক্রিকেটারদের থাকা না থাকা নিয়ে দ্বিধা। সব মিলিয়ে বিশ্বকাপ প্রস্তুতির পথে বড় ধাক্কা নয় কি ? তেমন প্রশ্নের জবাবে আকরাম খান বলেন আমি যখন ক্রিকেট অপারেশন্সের চেয়ারম্যান ছিলাম তখন আমরা একটি সুন্দর পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলাম। বিশ্বকাপে ভাল করতে হলে কিংবা বিশ্বকাপ জিততে হলে আপনাকে দীর্ঘমেয়াদী পটরিকল্পনা নিতে হবে। সে পরিকল্পনাতেই আমরা ছিলাম। কিন্তু বরাবরের মত দুর্ভাগ্যবশত এবারেও আমাদের একেবারে শেষে এসে ধাক্কা খেতে হলো। তামিম ইস্যু, অধিনায়ক ইস্যু, মাহমুদউল্লাহ ইস্যু সহ নানা ইস্যু যোগ হয়েছে। তবে সে সব ছাপিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বকাপে ভাল করবে তেমন প্রত্যাশা আকরাম খানের।

যেহেতু এবার ভারতের মাঠে বিশ্বকাপ। পরিবেশ থেকে শুরু করে অনেক কিছুই এবার আমাদের অনুকূলে ছিল। তাই এবারের বিশ্বকাপ নিয়ে আমাদের একটি সঠিক পরিকল্পনা ছিল। একটা ধাক্কা আসলেও সে পরিকল্পনায় তেমন ক্ষতি হবে বলে মনে করেন না আকরাম খান। তবে একটা বিষয় আমলে না নেওয়ার কোন সুযোগ নাই। আর তা হচ্ছে বরাবরই বিশ্বকাপের মত বড় ইভেন্ট আসলে আমরা আসলে মাঠের আলোচনার চাইতে মাঠের বাইরের আলোচনায় বেশি সম্পৃক্ত হয়ে পড়ি। যেটা আমাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ক্ষতিগ্রস্ত করে। তারপরও দেশের ক্রিকেটের এই কিংবদন্তির আশা বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ভাল করবে। তামিম ফিরবেন বিশ্বকাপের আগে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে। কতটা তামিম হিসেবে ফিরতে পারবেন দেশের এই সেরা ক্রিকেটার ? আকরাম খান জানালেন ভারতের জাসপ্রিত বুমরাহ কিন্তু সাত মাস পর অধিনায়ক হিসেবে ফিরেছেন। একজন পেশাদার ক্রিকেটারের জণ্য বিরতিটা কখনোই বাধা হতে পারেনা। তবে তাকে ফিট হতে হবে। তামিম যদি শতভাগ ফিট হয়ে ফিরতে পারে তাহলে মাঠে তামিমের পারফরম্যান্সে কোন ছেদ পড়ার কারণ দেখেননা। এবারের এশিয়া কাপে তামিম খেলছেননা। সেটা তিনি নিজেই জানিয়ে দিয়েছেন। তাই দলে থাকার মত চট্টগ্রামের ক্রিকেটার আছেন আর একজন। তিনি হলেন ইয়াসির আলি চৌধুরী রাব্বি। কোন কারণে যদি তিনি দলে জায়গা না পান তাহলে অন্তত দেড় দশকেরও বেশি সময় পর চট্টগ্রামের কোন ক্রিকেটার ছাড়া বাংলাদেশ দল খেলবে এশিয়া কাপের মত বড় কোন আসর। এ বিষয়টাকে অত্যন্ত শংকিত হওয়ার মত বললেন আকরাম। চট্টগ্রাম থেকে কেন ক্রিকেটার বেরিয়ে আসছেনা সে বিষয়ে চট্টগ্রামের সংগঠকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ভাবতে হবে বলেও মনে করেন আকরাম খান। তিনি বলেন মাঠ এবং খেলার কোন বিকল্প নেই। ঢাকা কিংবা দেশের অন্যান্য জেলায় যেখানে নানাভাবে মাঠ সৃষ্টি করা হচ্ছে সেখানে চট্টগ্রাম অনেকটাই পিছিয়ে সেদিক থেকে। যদিও চট্টগ্রামের বর্তমান জেলা প্রশাসক মাঠ পুনরুদ্ধার এবং মাঠ সৃষ্টির চেষ্টা করে যাচ্ছেন। আকরাম খান বলেন মাঠ সৃষ্টির কোন বিকল্প নেই। সে সাথে বেশি বেশি খেলা যেমন আয়োজন করতে হবে তেমনি সঠিক পরিকল্পনাও নিতে হবে। আর সে জন্য বিসিবি যে রিজিয়নাল কমিটি গঠন করেছে সেটাকে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। তিনি বলেন সময় এসেছে সবাই বসে একটি সঠিন পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার। তাহলেই চট্টগ্রামের ক্রিকেট ফিরে পাবে হারানো গৌরব।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিসিবির সভায় সভাপতিকেই দেওয়া হলো অধিনায়ক নির্বাচনের দায়িত্ব
পরবর্তী নিবন্ধসিএসইতে লেনদেন ৬.৫৭ কোটি টাকা