বাঘাইছড়ি ও লংগদু উপজেলার সংযোগ সড়কের ফলে বাঘাইছড়ি পৌর এলাকার সাথে তিনটি ইউনিয়নের যোগাযোগ স্থাপন হয়েছে। সেগুলো হল লংগদু উপজেলার কালাপাকুজ্যা ইউনিয়ন, বাঘাইছড়ির খেদারমারা ইউনিয়ন ও রুপকারী ইউনিয়নের কিছু অংশ। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাঘাইছড়ি–লংগদু সংযোগ সড়কের ফলে এখানকার সাধারণ মানুষের শিক্ষা ও চিকিৎসাসেবা প্রাপ্তি সহজতর হয়েছে। পাশপাশি স্থানীয় কৃষকদের কৃষিপণ্য বাজারজাত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এই সড়কটি।
বাঘাইছড়ি–লংগদু সড়কের টেক্সি চালক আব্দুর রহমান বলেন, রাস্তাটিতে কাজ হওয়ায় আমরা এখন খুব সহজে লংগদুর করল্যাছড়ি ও দূরছড়ি যাওয়া–আসা করতে পারছি। এখন রাস্তায় গাড়ি চালাতে সমস্যা হচ্ছে না। এতে করে যাত্রীদেরও চলাচল করতে সুবিধা হচ্ছে। লংগদু–মারিশ্যা সড়কের স্থানীয় কৃষক অরবিন্দু চাকমা বলেন, লংগদু–বাঘাইছড়ি রাস্তাটি খারাপ থাকায় আগে শাক–সবজি বাজারে নিয়ে বিক্রি করতে আমাদের অনেক কষ্ট হতো। এখন দ্রুত সময়ের মধ্যে মারিশ্যা বাজারে সবজি বেচাকেনা করা যাচ্ছে। বাঘাইছড়ির মারিশ্যার ব্যবসায়ী মো. আলমগীর বলেন, সংস্কার হওয়ার পূর্বে রাস্তাটি খুবই জরাজীর্ণ অবস্থায় ছিল। এই সড়ক দিয়ে আমাদের মালামাল আনতে খুবই কষ্ট হতো। এখন তো খুব অল্প সময়ের মধ্য মালামাল নিয়ে লংগদু ও দূরছড়ি যাতায়াত করতে পারি। বাঘাইছড়ির বাসিন্দা শাহরিয়ার হোসেন বলেন, রাস্তাটি হওয়ার আগে এখানকার অবস্থা খুবই নাজুক ছিল। সামান্য বৃষ্টিতে চলাচলের অযোগ্য ছিল। বিশেষ করে এখানকার কোমলমতি শিশুরা স্কুলে যাওয়া–আসা করতে পারত না। এমনকি এলাকার বয়োবৃদ্ধ অসুস্থ রোগীদের বাঘাইছড়ি সদর হাসপাতালে নেওয়ার সময় অনেক রোগীর মৃত্যুও হয়েছে সড়কে। তিনি বলেন, বর্তমানে রাস্তাটির সংস্কার হওয়ায় বাঘাইছড়ির লক্ষাধিক মানুষ যাতায়াতে সুবিধা পাচ্ছে।
বাঘাইছড়ি সদরের উলুছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রিয়াজ মাহমুদ বলেন, এ স্কুলটি বাঘাইছড়ি থেকে ১০ কিমি. দূরে অবস্থিত। সড়কটি নির্মাণ হওয়ার আগে বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে এখানে বন্যা হয়ে যেত, রাস্তা ডুবে যেত। স্কুলের শিক্ষার্থীদের ২৫ ভাগও উপস্থিত থাকত না। এখন যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় প্রায় শতভাগ শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকছে। বাঘাইছড়ি পৌর মেয়র মো. জমির হোসেন বলেন, রাস্তাটি হওয়ায় বাঘাইছড়ি পৌর এলাকার সাথে তিনটি ইউনিয়নের যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হয়েছে। রাঙামাটি এলজিইডি অফিস জানিয়েছেন, এই সংযোগ সড়কটি পুরোপুরি চালু হলে দুর্গম এলাকাগুলোও সড়ক যোগাযোগের আওতায় আসবে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী আহমদ শফি বলেন, এটি জনগুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক। এর মধ্যে ৬ কিমি. উন্নয়ন করা হয়েছে। এটি সম্পূর্ণ হলে দুর্গম এলাকাগুলো সংযোগ সড়কের আওতায় আসবে। এতে এখানকার কৃষি নির্ভর মানুষের উৎপাদিত পণ্য খুব সহজে বাজারজাত করা যাবে।