একটি ক্যাচ মিসে স্বপ্নভঙ্গ

ক্রীড়া প্রতিবেদন | সোমবার , ২৬ ডিসেম্বর, ২০২২ at ৮:১৩ পূর্বাহ্ণ

ভারতের বিপক্ষে ঢাকা টেস্ট জয়ের একেবারে কিনারায় গিয়েও ফিরে আসতে হলো বাংলাদেশ দলকে। একটি ক্যাচ মিস যেন সবকিছুকে শেষ করে দিল। সব আশাকে যেন হতাশায় পরিণত করে দিল। ম্যাচের তৃতীয় দিনের বিকেল থেকে ভারতকে যেভাবে কাঁপিয়ে দিয়েছিল তা অব্যাহত ছিল চতুর্থ দিন সকালেও। কিন্তু একটি ক্যাচ মিস আর একটি জুটি কেড়ে নিল বাংলাদেশের সব আনন্দ। উপহার দিল একরাশ হতাশা। ভারতের বাঘা বাঘা ব্যাটসম্যানরা এলে গেলেও অশ্বিন এবং শ্রেয়াশ আইয়ারের রেকর্ড গড়া পার্টনারশিপ বাংলাদেশের পকেট থেকে ম্যাচটি বের করে নিয়ে গেল। আরও একবার সম্ভাবনা জাগিয়েও না পারার যন্ত্রণায় পুড়তে হলো টাইগারদের। শীতের সকালে সোনালী রোদের মত শুরু বাংলাদেশের বোলিংয়ের সকালটা। দ্রুতই বাংলাদেশের বোলাররা তুলে নিল ভারতের তিন উইকেট। কিন্তু এরপরই একটি ক্যাচ মিস। আর তাতেই সম্ভাব্য এক স্মরণীয় জয় শেষ পর্যন্ত রূপ নিল হতাশার হাহাকারে। তিন উইকেটের জয়ে ভারত সিরিজ জিতে নিল ২০ ব্যবধানে। ৭৪ রানে ৭ উইকেট হারানো দল আর কোনো উইকেটই হারাল না শ্রেয়াস ও অশ্বিনের দৃঢ়তায়। অষ্টম উইকেটে ৭১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে নিজেদের রাঙালেন তারা রোমাঞ্চকর জয়ে।

এই জুটি থামতে পারত শুরুতে। মেহেদী হাসান মিরাজের বলে ১ রানে শর্ট লেগে ক্যাচ দেন অশ্বিন। কিন্তু বলে হাত ছোঁয়ালেও তা মুঠোবন্দি করতে পারেননি মোমিনুল। অথচ আগেরদিন একই জায়গায় আরো কঠিন ক্যাচ ধরেছিলেন তিনি। সেই অশ্বিন শেষ পর্যন্ত খেললেন ৪২ রানের ম্যাচ জেতানো অপরাজিত ইনিংস। শ্রেয়াস অপরাজিত থেকে যান ২৯ রানে। অথচ এর আগ পর্যন্ত সবকিছু ছিল শুধুই বাংলাদেশময়। অনেক প্রত্যাশার সকালটি শুরু হয় নাটকীয়তায়। দিনের তৃতীয় বলেই রিভিউ নিয়ে বাংলাদেশ উইকেট পায়নি আম্পায়ার্স কলে সামান্য একটুর জন্য। পরের বলেই স্লগ সুইপে ছক্কা মেরে দেন নাইওয়াচম্যান জয়দেব উনাদকাট। পরের ওভারেই উনাদকাটকে এলবিডব্লিউ করে ফেরান সাকিব। এরপর শুরু মিরাজের ভেল্কি। রিশভ পান্তকে

এলবিডব্লিউ করে ফেরান মিরাজ। পান্তকে ফেরানোর রেশ থাকতে থাকতেই মিরাজ আরেকবার এনে দেন উচ্ছ্বাসের উপলক্ষ। এবার তার শিকার দলের মূল বাধা হয়ে থাকা আকসার প্যাটেল। ডিমরাজের বলে বোল্ড হয়ে ফিরেন আকসার। ৩৪ রানে থামে তার ইনিংস। মিরাজ পূর্ণ করেন ৫ উইকেট। একটু পর ধরা দিতে পারত ষষ্ঠ উইকেটও। কিন্তু মোমিনুলের ভুলে তা আর হলো না। জীবন পেয়ে আর ভুল করলেন না অশ্বিন। আত্মবিশ্বাসী ব্যাটিংয়ে টিকে গেলেন শ্রেয়াসও। রোদ ওঠার পর একটু সহজ হয়ে এলো উইকেট। এ জুটি এগোতে থাকল। আস্তে আস্তে দূরে যেতে থাকল বাংলাদেশের সম্ভাবনা। কিছুতেই আর কিছু হলো না। জয়ের জন্য যখন প্রয়োজন ১৬ রান, মিরাজের হাতে আরেক দফায় বল তুলে দিলেন সাকিব। কিন্তু ওই ওভারেই এক ছক্কা, দুই চারে ১৬ রান নিয়ে ম্যাচ শেষ করে দিলেন অশ্বিন। আরও একবার, আরও একটি সম্ভাবনার অপমৃত্যু। বছরের শুরুতে মাইন্ট মঙ্গানুই

টেস্টে অভাবনীয় এক জয় ধরা দিলেও বছরের শেষটা হলো না রূপকথাময়। ম্যান অব দা ম্যাচ হয়েছেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। আর ম্যান অব দা সিরিজ হয়েছেন চেতেশ্বর পুজারা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধউদ্বোধনের দিনে মেট্রোরেলে চড়ে অফিস করবেন প্রধানমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা