একজন রাঁধুনি

আজহার মাহমুদ | বুধবার , ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ at ৫:৩৬ পূর্বাহ্ণ

করিম সাহেবের বাড়িতে রান্নার জন্য একজন রাঁধুনি ছিলো। করিম সাহেবে স্ত্রী রহিমা বেগমসহ দুজনে মিলে নিয়মিত রান্না করেন। রান্নার জন্য আসা মহিলাটি প্রায় সময় চুরি করতেন। করিম সাহেব সেটা না জানলেও তার স্ত্রী রহিমা সেটা জানেন। কিন্তু কখনও কিছু বলেন না। একদিন করিম সাহেব মোরগ এনেছেন। করিম সাহেবের স্ত্রী আর রাঁধুনী মিলে সেটা রান্না করছেন। দুজনে মিলে খুব সুন্দরভাবে রান্না করলেন।

রান্না শেষ করে করিম সাহেবের স্ত্রী গেলেন গোসল করতে। এমন সময় ওই রাঁধুনি ভাবল, মালিক যখন নেই, তো এই সুযোগে দুইএক টুকরা মাংস খেয়ে দেখি কেমন হলো। এই লালসা মনে জাগতেই আর দেরি নেই, দুই টুকরা মাংস নিয়ে ঘরের পেছনে গিয়ে লুকিয়ে লুকিয়ে খেতে লাগল।

এদিকে করিম সাহেবের স্ত্রী গোসল সেরে এসে দেখে ওই রাধুনি ঘরে নেই। তিনি ঘরের পেছনে গিয়ে দেখলেন রাঁধুনি মনের সুখে মাংস খাচ্ছেন। করিম সাহেবের স্ত্রী কিছু না বলেই চলে এলেন। এরপর সবাই মিলে দুপুরের খাবার খেলো। রান্নার প্রশংসাও করলেন করিম সাহেব। খাবার খাওয়ার পর রাঁধুনি যখন চলে যাচ্ছে তখন কয়েক টুকরো মাংস একটি বাটিতে নিয়ে করে নিয়ে যাচ্ছে। যাওয়ার পথে হঠাৎ পা পিছলা খেয়ে পড়ে যায় রাঁধুনি মহিলাটি। সাথে সাথেই মাংসের বাটি পড়ে গেলো। এটা দেখে সবাই অবাক হলো। লজ্জ্বায় লাল হয়ে গেলো ওই রাঁধুনিটাও। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে রাঁধুনিটাকে কেউ কিছু বললো না। রাঁধুনিকে করিম সাহেবের স্ত্রী একটা বাটিতে আবারও মাংস দিয়ে তারপর বললেন, সাবধানে যেও।

বাড়ি গিয়ে রাঁধুনিটা লজ্জ্বায় কান্না করছিলো। কোনো ধরনের বকা না দিয়ে, উল্টো তাকে আবার মাংস দিয়ে বিদায় দিল। তখন সে বুঝল, মালিকের জিনিস এভাবে অন্যায়ভাবে ভোগ করা পাপ। না বলে খাওয়া এবং নেওয়া কোনোটাই ঠিক নয়। এতে লজ্জ্বাও পেতে হয়, ছোটও হতে হয়। অথচ চেয়ে নিলেও তাঁরা দিত। রাঁধুনিটা আর কখনো লোভ না করার প্রতিজ্ঞা করল। এরপর থেকে রাঁধুনিটার সুনাম আরও বেড়ে গেল।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশরতের গান
পরবর্তী নিবন্ধবিস্ময়কর গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন