একক ভর্তি পরীক্ষায় যেতে আগ্রহী নয় চবি

চবি প্রতিনিধি | শুক্রবার , ১৭ নভেম্বর, ২০২৩ at ৫:৩১ পূর্বাহ্ণ

ইউজিসি একক ভর্তি পরীক্ষার জন্য একটি কমিটি করে দিয়েছে। সে কমিটিতে আমিও রয়েছি। আমি একক ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে আমার ডিন, একাডেমিক কাউন্সিলে আলাপ করেছি, এতে কেউ রাজি নয়।

একক ভর্তি পরীক্ষার জানতে চাইলে এসব কথা বলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার। এ পদ্ধতিতে যেতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যায়ের ডিন ও একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্যরাসহ সংশ্লিষ্ট কেউ রাজি নন বলে জানালেও রাষ্ট্রপতির আদেশ জারি হলে বিষয়টি বিবেচনা করবে বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা।

চলতি বছরে অক্টোবরের শেষের দিকে ইউজিসির পক্ষ থেকে সুপারিশ পাঠানো হয়। মন্ত্রণালয়ে সুপারিশটির যাচাইবাছাই চলছে। অধ্যাদেশ জারি হলে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় প্রথমবারের মতো একক ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের স্বস্তি মিলবে প্রত্যাশা অনেকের। আবার অনেকের এ পদ্ধতির বিরোধীতাও করেছেন।

ইউজিসির সুপারিশে বলা হয়েছে, দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি কার্যক্রমে জটিলতা, দীর্ঘসূত্রতা, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের নিরাপত্তাহীনতা, দুর্ভোগ, অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় এবং সময়ক্ষেপণ পরিহারের লক্ষ্যে বিদ্যমান ব্যবস্থার উন্নয়ন ও সংস্কার প্রয়োজন। স্নাতক পর্যায়ে কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠাসহ আনুষঙ্গিক বিধান করা দরকার।

জানা গেছে, সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একক ভর্তি পরীক্ষা নিতে ১৫ সদস্যের একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন। এ কমিটির প্রধান ইউজিসি চেয়ারম্যান। কমিটির সদস্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১ উপাচার্য। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলোঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের উপাচার্যরা এই কমিটিতে আছেন।

একক ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে চবি উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার বলেন, ইউজিসি একক ভর্তি পরীক্ষার জন্য একটি কমিটি করে দিয়েছে। সে কমিটিতে আমিও রয়েছি। আমি একক ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে আমার ডিন, একাডেমিক কাউন্সিলে আলাপ করেছি, এতে যেতে কেউ রাজি নন।

তিনি আরও বলেন, আমরা যেটা করতে পারি, আগামী বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টাইলে বিভাগীয় পরীক্ষার আয়োজন করার পরিকল্পনা করবো। এতে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমবে। ইউজিসি তো আর স্বায়ত্বশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে একক ভর্তি পরীক্ষায় আনতে পারে না। আর যদি মহামান্য অধ্যাদেশ জারি করেন, তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘৭৩এর অধ্যাদেশ অনুযায়ী আমরা একক ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে ভাববো। বর্তমানে দেশে ৫৩টি পাবলিক ও ১১০টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আলাদাভাবে ভর্তি করা হয়। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, জাহাঙ্গীরনগর, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়সহ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আলাদা ভর্তি পরীক্ষা হয়।

তবে ২২টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় একটি গুচ্ছভুক্ত হয়ে তিনটি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট, কুয়েট ও রুয়েট) আরেকটি গুচ্ছে এবং কৃষি ও কৃষিশিক্ষাপ্রধান সাতটি বিশ্ববিদ্যালয় অপর একটি গুচ্ছভুক্ত হয়ে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। একক ভর্তি পরীক্ষা বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব ও ইউজিসি সচিব ড. ফেরদৌস জামান জানিয়েছেন, এনটিএ গঠন করতে আমাদের তিন থেকে চার বছর সময় লেগে যাবে। সেজন্য আমরা একক ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে ভাবছি। একক ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে সবাই একমত হলেও বড় বড় কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিন্নমত রয়েছে। সেজন্য আমরা রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ জারি করানোর চেষ্টা করছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআমদানি কমায় ভাড়া নেই লাইটারের
পরবর্তী নিবন্ধআওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম বিক্রি কাল থেকে