রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের হিসাব শাখার কর্মকর্তা–কর্মচারীদের যোগসাজসে ২০২৩ সালে ভুয়া বিলে আত্মসাতকৃত কোটি টাকা অভিযুক্ত সাত কর্মকর্তা–কর্মচারীকে এক মাসের মধ্যে ফেরত দিতে হবে। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের অর্থ উপদেষ্টার দপ্তর থেকে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
২০২৩ সালের ২৮ ডিসেম্বর রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের অর্থ উপদেষ্টার দপ্তর থেকে মেসার্স দি কসমোপলিটন কর্পোরেশনের নামে ভুয়া বিলে ৯৬ লাখ ৯০ হাজার টাকার একটি চেক পাস করে রেলের হিসার শাখার কয়েকজন কর্মকর্তা–কর্মচারী মিলে পুরো টাকা আত্মসাৎ করেছিলেন। আত্মসাতের বিষয়টি ধরা পড়ার পর ঘটনার তদন্তে রেলের চট্টগ্রাম বিভাগীয় হিসাব কর্মকর্তা জয়শ্রী মজুমদারকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলেও তদন্তে অনেক সময় নেওয়া হয়। অবশেষে ‘রেলের হিসার শাখার সাত কর্মকর্তা ও কর্মচারী প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন’ উল্লেখ করে তদন্ত রিপোর্ট দেওয়া হয়। ঘটনার পরপরই অভিযুক্ত কর্মকর্তা–কর্মচারীদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
শেষ পর্যন্ত রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের অর্থ উপদেষ্টার দপ্তরের নির্দেশে ভুয়া বিল–ভাউচারে কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় অর্থদণ্ড ভোগ করতে হচ্ছে সাত কর্মকর্তা–কর্মচারীকে। আত্মসাৎ হওয়া পুরো টাকা পরিশোধ করতে হবে তাদের। এজন্য তাদের এক মাসের সময় দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
২৯ আগস্ট সাত কর্মকর্তা–কর্মচারীর নাম এবং অর্থদণ্ডের টাকার পরিমাণ উল্লেখ করে অতিরিক্ত অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান হিসাব অধিকর্তা সার্বিক (পূর্ব) মো. সাইদুর রহমান সরকার স্বাক্ষরিত একটি চিঠি (স্মারক নম্বর–৪৩) জারি করা হয়। সাত কর্মকর্তা ও কর্মচারী হলেন এও/এম/টিএ মো. মামুন হোসেন, পাহাড়তলী কারখানার (ডিএফএ) প্রতিস্থাপন ও সংস্থাপন শাখার হিসাবরক্ষক সৈয়দ সাইফুর রহমান, সিআরবির (পদ্ধতি) ডিএফএর অডিটর পবন কুমার পালিত, টিএ/প্রশাসন/এও মো. আবু নাসের, সিআরবির (সিপিবি) হিসাবরক্ষক শিমুল বেগম, চট্টগ্রামের (ডিএফএ) জুনিয়র অডিটর ইকবাল মো. রেজাউল করিম ও সিআরবির (বিঅ্যান্ডবি) অফিস সহায়ক মো. মাকসুদুর রহমান।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, মো. মামুন হোসেনকে সরকারের ক্ষতিসাধন টাকার মধ্যে ২০ শতাংশ অর্থাৎ ১৯ লাখ ৩৮ হাজার, সৈয়দ সাইফুর রহমানকে ১৯ লাখ ৩৮ হাজার, পবন কুমার পালিতকে ১৯ লাখ ৩৮ হাজার, মো. আবু নাসেরকে ১৪ লাখ ৫৩ হাজার ৫০০, শিমুল বেগমকে ৯ লাখ ৬৯ হাজার, ইকবাল মো. রেজাউল করিমকে ৮ লাখ ৭২ হাজার ১০০ ও মো. মাকসুদুর রহমানকে ৫ লাখ ৮১ হাজার ৪০০ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এসব টাকা আগামী ৩০ দিনের মধ্যে সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।