দীর্ঘ এক দশক পর নগর ছাত্রলীগের নতুন গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। র্শীষ পদ–প্রত্যাশীদের শিগগিরই বায়োডাটা আহ্বান করতে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। দীর্ঘদিন এক দশক পর নগর ছাত্রলীগের নতুন কমিটি গঠনের আভাস তৃণমূল পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়ায় নেতাকর্মীদের মাঝে উচ্ছ্বাস বিরাজ করছে। নতুন কমিটিতে একেবারে ক্লিন ইমেজের মেধাবী ছাত্র এবং দুঃসময়ে সংগঠনের কাজে মাঠে ছিলেন এমন কর্মীদের মূল্যায়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন ছাত্রলীগের এক সহ সভাপতি।
এদিকে দীর্ঘদিন পর চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের নতুন কমিটি গঠনের আভাস ছড়িয়ে পড়ায় নিজেকে শীর্ষপদে এগিয়ে রাখতে সম্ভাব্য প্রার্থীদের অনেকে যোগাযোগ বাড়িয়ে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সাথে। অনেকেই চট্টগ্রামের মন্ত্রী–এমপি এবং মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের কাছে প্রতিনিয়তই যোগাযোগ করছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মহানগর ছাত্রলীগের নতুন কমিটিতে শীর্ষপদ পাওয়ার ক্ষেত্রে আলোচনায় রয়েছেন ৩৫ জন ছাত্রলীগ নেতা।
নগর ছাত্রলীগের সর্বশেষ কেন্দ্র থেকে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল ২০১৩ সালে। ইতোমধ্যে চারবার কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতৃত্বের পরিবর্তন ঘটলেও দীর্ঘ ১০ বছর ধরে নগর ছাত্রলীগের নতুন কমিটি হয়নি।
নগর ছাত্রলীগের নতুন কমিটির জন্য, বিশেষ করে সভাপতি–সাধারণ সম্পাদকসহ শীর্ষ পদ প্রত্যাশীরা সাবেক ছাত্রনেতাদের বিভিন্ন উপ গ্রুপের মাধ্যমে তদ্বির করছেন। তারা বিভিন্ন উপ গ্রুপে বিভক্ত হয়ে আছেন।
চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের নতুন কমিটি এবং দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে হওয়ার কথা থাকলেও নগর এবং জেলার শীর্ষ নেতা এবং মন্ত্রীদের নানান সমীকরণ না মেলায় শেষ পর্যন্ত তা আর হয়নি।
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সূত্রে জানা যায়, খুব শিগগিরই নগর ছাত্রলীগের শীর্ষ পদ প্রত্যাশীদের বায়োডাটা আহ্বান করা হবে। গত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সম্ভাব্য শীর্ষ পদপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদের কার্যালয়ে বায়োডাটা জমা নিয়েছিলেন। এবার নগর ছাত্রলীগের পদ প্রত্যাশীদের কাছ থেকে আহ্বান করা হবে বলে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই শীর্ষ নেতা জানিয়েছেন।
নির্বাচনের পরপরই মহানগর ছাত্রলীগের নতুন কমিটি গঠন নিয়ে জোর আলোচনা শুরু হয়েছে সংগঠনটির শীর্ষ নেতৃবৃন্দের কাছে।
মহানগর ছাত্রলীগের শীর্ষপদে সম্ভাব্য প্রার্থী যারা : মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন– চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুল করিম, চান্দগাঁও থানা ছাত্রলীগের সভাপতি মুহাম্মদ নুরুন্নবী সাহেদ, মহানগর ছাত্রলীগের সদস্য মোশাররফ চৌধুরী পাভেল, মহসিন কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম–আহ্বায়ক মায়মুন উদ্দীন মামুন, আনোয়ার পলাশ, চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সহ–সভাপতি মনিরুল ইসলাম, ডাবলমুরিং থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিব হায়দার, ইসলামিয়া কলেজ ছাত্র সংসদের জিএস সৈয়দ ইবনে জামান ডায়মন্ড, কমার্স কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল আলম আলভি, ওমরগণি এমইস কলেজ ছাত্রলীগের জাহিদুল ইসলাম প্রমি, শাহাদাত হোসেন হীরা, মহিম আজম, মুহাম্মদ ইমন হেসেন, মহানগর ছাত্রলীগের সদস্য মিজানুর রহমান, আরাফাত রুবেল, কমার্স কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ফখরুল রুবেল, সরকারি সিটি কলেজ ছাত্র সংসদের (নৈশ) ভিপি মুহাম্মদ তাসিন, সরকারি সিটি কলেজ ছাত্রলীগের নৈশ শাখার আহ্বায়ক আশীষ সরকার নয়ন, পতেঙ্গা থানা ছাত্রলীগের সভাপতি হাসান হাবীব সেতু, হালিশহর থানা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক আব্দুর রহিম জিসান, বন্দর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি মুহাম্মদ কাইয়ুম, মহানগর ছাত্রলীগের উপ–সম্পাদ ফাহাদ আনিস, হুমায়ুন কবির আজাদ, মহানগর ছাত্রলীগের সহ–সম্পাদক ওসমান গণি, ইসলামিয়া কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রাকিবুল হাসান রাকিব, সাধারণ সম্পাদক মীর মুহাম্মদ ইমতিয়াজ, ডবলমুরিং ছাত্রলীগ সংগঠনিক সম্পাদক শেখ তৌহিদুল ইসলাম আরদিন, ইসলামিয়া কলেজের এজিএস নোমান সাইফ, মহানগর ছাত্রলীগের উপ–ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক রাশেদ চৌধুরী, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ছাত্রলীগের সহ–সম্পাদক ইয়াসিন আরফাত বাপ্পি, মহানগর ছাত্রলীগ নেতা অনিন্দ্য দেব, মহানগর ছাত্রলীগের সদস্য ফাহাদ আনিছ, মহানগর ছাত্রলীগের সহ–সম্পাদক অরভিন সাকিব ইভান, মহানগর ছাত্রলীগের উপ–ছাত্রবৃত্তি বিষয়ক সম্পাদক এস এম হুমায়ূন কবির আজাদ, ছাত্রলীগ নেতা মোহাম্মদ ফারুক।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ২৯ অক্টোবর ইমরান আহমেদ ইমুকে সভাপতি ও নুরুল আজিম রনিকে সাধারণ সম্পাদক করে ২৪ জনের আংশিক নগর ছাত্রলীগের কমিটি কেন্দ্র থেকে ঘোষণা করা হয়েছিল। এরপর ২০১৪ সালের ১১ জুলাই আগের ২৪ জনসহ ২৯১ সদস্যের ঢাউস সাইজের নগর ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ২০১৮ সালের ১৯ এপ্রিল এই কমিটির সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনি ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন। পরবর্তীতে ওই কমিটি যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীরকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়।