এএসপি, ওসিসহ আহত ৪০

বাঁশখালীতে পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষ

বাঁশখালী প্রতিনিধি | শনিবার , ২৭ আগস্ট, ২০২২ at ৭:২৮ পূর্বাহ্ণ

বাঁশখালীতে পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষে এএসপি (আনোয়ারা সার্কেল) মো. হুমায়ুন কবির, বাঁশখালী থানার ওসি মো. কামাল উদ্দিনসহ পুলিশের ১০ সদস্য আহত হয়েছেন। অন্যদিকে বিএনপির ৩০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার বিকালে উপজেলার কালীপুর এলাকায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও পুলিশের লাঠিচার্জের এ ঘটনা ঘটে। বিএনপি নেতাকর্মীদের অভিযোগ, সমাবেশ শেষে মিছিল নিয়ে মূল সড়কে ওঠার সময় তাদের ওপর ‘অতর্কিত’ হামলা চালায় পুলিশ। পুলিশের লাঠিচার্জে তাদের অনেক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন সহকারী পুলিশ সুপার (আনোয়ারা সার্কেল) মো. হুমায়ুন কবির, বাঁশখালী থানার ওসি মো. কামাল উদ্দিন, পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত এসএম আরিফুর রহমান, এস আই নজরুল ইসলাম, এএসআই নজরুল ইসলাম, কনস্টেবল মিনহাজ উদ্দিন, মাইন উদ্দিন, বিপ্লব দে, আব্দুল কাদের, মফিজ আলম। আহতরা বাঁশখালী হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক অমিত দাশ। অপরদিকে ঘটনার সময় দক্ষিণ জেলা ছাত্রদল নেতা শহীদুল আলম (৪০) মো. ইব্রাহিম (১৮), ইউপি সদস্য ও বিএনপি নেতা গিয়াস উদ্দিন (৪৫) সহ আরো কয়েকজন ইটের আঘাতে আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেলেও তারা কেউ বাঁশখালী হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেননি। চট্টগ্রাম সহ বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে তারা চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা যায়। রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সংঘটিত ঘটনায় কোনো মামলা কিংবা কেউ আটক হয়নি বলে থানা সূত্র জানায়।
বিএনপির নেতাকর্মীরা জানান, সারাদেশের ন্যায় বিক্ষোভ কর্মসূচির অংশ হিসাবে গতকাল শুক্রবার বিকেলে বাঁশখালীতে সাবেক সাংসদ জাফরুল ইসলাম চৌধুরীর বাড়ির উঠানে সমাবেশ করে বিএনপি। এ সমাবেশ প্রথমে পুকুরিয়া এলাকায় করার কথা ছিল। সেখানে না পারায় পরে কালীপুরের গুণাগুরীতে আয়োজনের কথা থাকলেও পুলিশ অনুমতি দেয়নি। সবশেষে কালীপুরে জাফরুল ইসলামের বাড়ির উঠানে সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সমাবেশ শেষে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে মূল সড়কে উঠলে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় মিছিল থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। এতে বাঁশখালী থানার ওসি মো. কামাল উদ্দিনের মাথায় ইট এসে পড়লে পুলিশ
লাঠিচার্জ শুরু করে। পরে বিএনপি নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে। এ সময় এলাকায় ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। খবর ছড়িয়ে পড়ায় বিভিন্ন স্থানে টহলে থাকা সব পুলিশ সদস্য এবং আনোয়ারা-সাতকানিয়া সহ বিভিন্ন থানার পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। বাড়তে থাকে পুলিশের দিকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ। এতে একে একে পুলিশের এএসপি মো. হুমায়ুন কবির, থানার ওসি কামাল উদ্দিন সহ ১০ জন আহত হন। পুলিশ ২০/২৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও টিয়ারশেল ছুড়ে।
ঘটনার ব্যাপারে জাফরুল ইসলামের ছোট ছেলে মিশকাতুল ইসলাম চৌধুরী পাপ্পা বলেন, কর্মীদের মাঝে ভুল বুঝাবুঝির কারণে ইট পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। যা দুঃখজনক। এতে অনেক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে জানান তিনি।
এ ব্যাপারে বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. কামাল উদ্দিন বলেন, তাদের মিটিংয়ে যাতে কোনো সমস্যা না হয় তার জন্য পুলিশ সদস্যরা অবস্থান নিলে তারা আমাদের ওপর ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে আমাদের ১০/১২ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। পরে লাঠিচার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয় বলে জানান তিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপূর্ণাঙ্গ কমিটি পাচ্ছে সেপ্টেম্বরে
পরবর্তী নিবন্ধপ্রাচীন নিদর্শন আর উজ্জ্বল ইতিহাস