চট্টগ্রাম পোর্ট কানেকটিং সড়কটির পুনর্নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিল চার বছর আগে। এখনো বেহাল অবস্থায় হালিশহর এলাকার লাখ লাখ মানুষ। বছরের পর বছর অনেকটাই অবরুদ্ধ জীবন যাপন করছে তারা। সড়কের পূর্ব পাশের কাজ মোটামুটি ব্যবহার উপযোগী হওয়ায় খানিকটা বিড়ম্বনা কমেছে বটে। কিন্তু নয়াবাজার বিশ্বরোড মোড় এলাকাটার এতোটাই নাজুক অবস্থা, যা অবর্ণনীয়। হালিশহরের লাখ লাখ মানুষ প্রতিদিন জীবন জীবিকার তাগিদে এই রাস্তাটি ব্যবহার করছে। কিন্তু পরিতাপের বিষয়- কানেকটিং রোডের উভয় পার্শ্বে এতো বড়বড় গর্ত তৈরী হয়েছে, মনে হয় যেনো একেকটা মরণফাঁদ। হালিশহরের এ ব্লক বি ব্লক, ফইল্যাতলী, আব্দুর পাড়া, শাপলা, শ্যামলী, সবুজ বাগ ও গ্রীনভিউ আবাসিক এলাকার মানুষের প্রতিদিন এই বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। প্রতিদিন দু চারটা রিঙা গাড়ি গর্তে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়।
পশ্চিম পাশে একেবারেই ব্যবহার অনুপযোগী হওয়ায় লেগে থাকে দীর্ঘ যানজট। এমন অবস্থা সড়কের একাংশের ছিল। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে উভয় পাশেই একই অবস্থা বিরাজমান। এছাড়াও যুক্ত হয়েছে সড়কের পূর্ব পাশে বিশালকায় ডাস্টবিন। বৃষ্টিতে এই ভাগারের পচা দূষিত পানির স্রোতধারা অব্যাহত রয়েছে। দুর্গন্ধে ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। এরই সাথে যানজট ঘন্টার পর ঘন্টা… পায়ে হেঁটে যারা পথ চলছে, তাদের করুণ পরিণতিটা একবার ভাবুন তো। সাধারণ পথচারী তো আছেই, ছাত্র-ছাত্রী যাদের পরীক্ষা নভেম্বরে- ডিসেম্বরে, তাদের পড়তে হচ্ছে বিভিন্ন কোচিং সেন্টারে। পড়তে গিয়ে বিশ্বরোড মোড়ে জ্যামে আটকে থাকছে অন্তত তিন চার ঘন্টা। এই হচ্ছে আমাদের জীবন যাত্রা।
আধা ঘণ্টার পথ পাড়ি দিতেই কয়েক ঘণ্টা লেগে যায়। বিশেষ করে মুমূর্ষু রোগীদের নিয়ে ভয়ানক অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয় এখানকার বাসিন্দাদের। আর এখন তো বর্ষাকাল – সড়ক নয় যেন, দুপাশে আস্ত দু’খানা ছোটোখাটো পুকুর। আর পানিতে খানাখন্দ নির্ণয় করতে না পেরে অনেক যানবাহনই উল্টে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে প্রায়শই। এই এলাকার সবক’টি গাড়ি কমবেশি বিকলাঙ্গ হয়ে পড়েছে।
পরিপূর্ণ কাজ কখন সম্পন্ন হবে, সেটা পরের কথা, কর্তৃপক্ষ যদি একটু খানি মানবিক মূল্যবোধের পরিচয় দেন, আপাতত এই মরণফাঁদগুলোকে ভরাট করে এলাকাবাসীর দুর্ভোগের খানিকটা লাঘবের ব্যবস্থা করেন, তাহলে এলাকাবাসী উপকৃত হবেন। তাছাড়া মানবিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা ও মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ হবে। সর্বোপরি এলাকাবাসী কৃতার্থ হবে, জনজীবনে স্বস্তি ফিরে আসবে।