এই প্রথম হাঁপানি চিকিৎসার যুগান্তকারী উপায় মিলল

| মঙ্গলবার , ৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ at ১১:১৫ পূর্বাহ্ণ

৫০ বছরের মধ্যে এই প্রথম হাঁপানি বা অ্যাজমা রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসায় নতুন এক যুগান্তকারী উপায় উদ্ভাবনের দাবি করেছেন গবেষকরা। গুরুতর হাঁপানি বা সিওপিডি বা ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজএ আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসার জন্য বর্তমানে ব্যবহৃত হচ্ছে বেনারালিজুমাব নামের ওষুধ, যেটি প্রচলিত বিভিন্ন স্টেরয়েড ট্যাবলেটের চেয়ে ভাল কাজ করে। তবে এটি মুখে সেবনের জন্য নয়, এটি এক ধরনের ইনজেকশন। খবর বিডিনিউজের।

নতুন গবেষণাটি প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ল্যানসেট রেসপিরেটরি মেডিসিনএ। গবেষকরা বলছেন, মানুষের জীবন বাঁচানোসহ গোটা বিশ্বে হাঁপানি ও সিওপিডি’র চিকিৎসা কীভাবে পরিচালিত হয় তাও বদলে দেবে উদ্ভাবন। হাঁপানি ও সিওপিডি’র তীব্রতা মানুষের জন্য মারাত্মক হতে পারে। কেবল যুক্তরাজ্যেই প্রতিদিন হাঁপানিতে আক্রান্ত চারজন ও সিওপিডি’তে আক্রান্ত ৮৫ জন মারা যান বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিজ্ঞানভিত্তিক সাইট নোরিজ।

হাঁপানি বা অ্যাজমা সাধারণ রোগ হলেও সঠিকভাবে এর চিকিৎসা না হলে এ রোগের কারণে ফুসফুসের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। হাঁপানির চিকিৎসায় ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ব্যবহৃত হচ্ছে প্রেডনিসোলনএর মতো বিভিন্ন স্টেরয়েড ট্যাবলেট। গবেষণায় হাঁপানি চিকিৎসায় স্টেরয়েড ট্যাবলেটের বিকল্প হিসাবে বেনারালিজুমাব ইনজেকশনটি নিয়ে পরীক্ষা করেন কিংস কলেজ লন্ডনএর নেতৃত্বে অন্যান্য ইউনিভার্সিটির গবেষকদের একটি দল। বেনারালিজুমাব হচ্ছে মনোক্লোনাল বা একটি ক্লোন তৈরি করে এমন এক ধরনের অ্যান্টিবডি।

দেহের ইওসিনোফিলসকে টার্গেট করে বেনারালিজুমাব। ইওসিনোফিলস এক ধরনের শ্বেত রক্তকণিকা, যা মানবদেহে হাঁপানি ও সিওপিডি তৈরির জন্য দায়ী এবং এর ফলে দেহে প্রদাহ বা ঘায়ের সৃষ্টি হয়। গবেষণায় হাঁপানি বা সিওপিডি’র উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছেন এমন ২১১ জন অংশগ্রহণকারীকে তিনটি দলে ভাগ করে নেন গবেষকরা। গবেষণায় একটি দলে থাকা অংশগ্রহণকারীকে বেনারালিজুমাব ইনজেকশন ও প্লাসবো ট্যাবলেট দেন তারা। অন্য একটি দলকে দেন স্টেরয়েড ট্যাবলেট ও প্লাসবো ইনজেকশন। গবেষণায় তৃতীয় দলের অংশগ্রহণকারীকে বেনারালিজুমাব ইনজেকশন ও স্টেরয়েড ওষুধ উভয়ই দেন গবেষকরা। ২৮ দিন পর স্টেরয়েড নিয়েছেন এমন ব্যক্তিদের তুলনায় যারা বেনারালিজুমাব ইনজেকশন নিয়েছেন তাদের ঘা ও শ্বাসকষ্টের মতো লক্ষণ কম দেখা গেছে। আর ৯০ দিন পর, বেনারালিজুমাব ইনজেকশন নেওয়া দলটির হাঁপানি রোগের চিকিৎসায় ব্যর্থতা চার ভাগের এক ভাগে নেমে আসে। তাদের হাসপাতালে যাওয়ার মতো ঘটনাও কম ঘটেছে। হাসপাতাল, ক্লিনিক কিংবা বাড়িতে স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের মাধ্যমে দেওয়া যেতে পারে এ ইনজেকশনটি, যেটি হাঁপানি ও সিওপিডি’র চিকিৎসায় তৈরি করতে পারে এক অন্যন্য দৃষ্টান্ত।

হাঁপানি ও সিওপিডিতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য এ গবেষণাকে গেইমচেঞ্জার হিসেবে বর্ণনা করেছেন গবেষণার প্রধান গবেষক ও কিংস কলেজ লন্ডনএর অধ্যাপক মোনা বাফাদেল।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিদায় বেলায় ছেলেকে শাস্তি থেকে বাঁচিয়ে দিলেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন
পরবর্তী নিবন্ধসিরিয়ার বিদ্রোহীদের এলাকায় রুশ, সিরীয় জঙ্গি বিমানের বোমাবর্ষণ