
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের নিরাপত্তা পুরোপুরিভাবে নিশ্চিত করতে পারেনি। আর এ বছর দেশে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা কঠিন হবে। রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছেন নতুন গঠিত রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) প্রধান ও অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। গত বছরের আগস্টে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্র–জনতার আন্দোলনের মধ্যদিয়ে ক্ষমতাচ্যুত হন। পরে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। অন্তর্বর্তী সরকার চলতি মাসেই বলেছে, ২০২৫ সালের শেষের দিকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। খবর বাংলানিউজের।
নাহিদ রয়টার্সকে বলেন, গত সাত মাসে আমরা সবাই আশা করেছিলাম, স্বল্পমেয়াদি সংস্কারের মাধ্যমে পুলিশিং ব্যবস্থা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। কিছুটা উন্নতি হয়েছে, তবে তা আমাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী হয়নি। এনসিপি–প্রধান হিসেবে দেওয়া প্রথম সাক্ষাৎকারে ২৬ বছর বয়সী এই তরুণ বলেন, বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং পুলিশিং ব্যবস্থায় আমার মনে হয় না জাতীয় নির্বাচন আয়োজন সম্ভব।
নাহিদ ইসলামই প্রথম কোনো রাজনীতিবিদ, যিনি নির্বাচন আয়োজন নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের দেওয়া সময়সীমা নিয়ে সন্দেহের কথা জানালেন। নাহিদ বলেন, নির্বাচন যখনই হোক না কেন, তার দল প্রস্তুত থাকবে। তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের আগে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র নিয়ে একটি ঐকমত্যে পৌঁছানো খুবই জরুরি। অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ছাত্রনেতাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ঘোষণাপত্র তৈরির পরিকল্পনা করেছ। এই ঘোষণাপত্র বা সনদে বাংলাদেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন এবং গত বছরের জুলাই–আগস্টে সহিংসতায় প্রাণ হারানো এক হাজার মানুষের প্রতি সম্মান জানানো হবে। অন্তর্বর্তী সরকার এই ঘোষণাপত্র তৈরির উদ্যোগের কথা জানালে ছাত্ররা সংবিধান পরিবর্তনের দাবি প্রত্যাহার করে নেন।
যদি আমরা এক মাসের মধ্যে ঐক্যমত্যে পৌঁছাতে পারি, তবে আমরা নির্বাচন তাড়াতাড়ি আয়োজন করতে পারব। কিন্তু যদি এর জন্য আরও সময় প্রয়োজন হয়, তাহলে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া উচিত, যোগ করেন নাহিদ। নাহিদ জানান, বাংলাদেশের অনেক বিত্তশালী ব্যক্তি তার দলকে আর্থিকভাবে সহায়তা করছেন। তিনি বলেন, এনসিপি শিগগিরই একটি নতুন অফিস প্রতিষ্ঠা করবে। পাশাপাশি তার দল নির্বাচনের জন্য তহবিল গঠনের লক্ষ্যে ক্রাউডফান্ডিং (জনসাধারণের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ) শুরু করবে।