চীনের দেওয়া ঋণ পরিশোধের মেয়াদ ১০ বছর বাড়িয়ে ৩০ করতে ঢাকার অনুরোধে সাড়া দিয়েছে বেইজিং; সুদহার কমানোর বিষয়ে বিবেচনারও আশ্বাস এসেছে। গতকাল মঙ্গলবার বেইজিংয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে এ বিষয়ে ‘নীতিগতভাবে একমত’ পোষণ করেছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। খবর বিডিনিউজের।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়ে বৈঠকে আলোচনার প্রসঙ্গ টেনে বলা হয়, ‘প্রেফারেনশিয়াল বায়ার্স ক্রেডিট (পিবিসি) এবং গভর্নমেন্ট কনসেশন লোন (জিসিএল) উভয়ক্ষেত্রে ঋণের সুদ ২–৩ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১ শতাংশ করা, প্রতিশ্রুতি ফি বাদ দেওয়া এবং ঋণ পরিশোধের সময় ২০ বছর থেকে বাড়িয়ে ৩০ বছর করার অনুরোধ জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। বাংলাদেশের ভালো রেকর্ডের প্রশংসা করে ঋণ পরিশোধের সময় বাড়ানোর বিষয়ে ‘নীতিগতভাবে একমত’ পোষণ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই এবং সুদ হার কমানোর বিষয়টি বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন।’
বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে পিবিসি ও জিসিএল চুক্তির আওতায় চীন থেকে ঋণ নিয়ে থাকে বাংলাদেশ। উভয় চুক্তিতে পাঁচ বছরের গ্রেস পিরিয়ড দিয়ে ঋণ পরিশোধের মেয়াদ ২০ বছর। জিসিএলে ঋণে সুদহার ২ শতাংশ হলেও পিবিসিতে এ হার ৩ শতাংশ। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত হিসাবে অনুযায়ী চীনের কাছে বাংলাদেশের ঋণের দায় ছিল ৫৫৭ কোটি ৭৫ লাখ যুক্তরাষ্ট্র ডলার, যা বাংলাদেশের মোট ঋণের ৯ শতাংশ। ঋণদাতা হিসেবে চীন ছিল চতুর্থ অবস্থানে। ইআরডির আরেকটি হিসাব অনুযায়ী, চলতি ২০২৪–২৫ অর্থবছরের পাঁচ মাসে চীন থেকে কোনো ঋণের প্রতিশ্রুতি পায়নি বাংলাদেশ। তবে এ সময়ে দেশটি থেকে ঋণ ছাড় হয়েছে ১৩ কোটি ৫২ লাখ ডলার। ঋণ পরিশোধের সময় বাড়াতে ইতিবাচক সাড়ার পাশাপাশি স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের পরও তিন বছর বাংলাদেশি পণ্যের শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকারের আশ্বাস দিয়েছেন চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকার অনুরোধে কুনমিংয়ের ৩–৪টি হাসপাতালকে বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত করার সিদ্ধান্তের কথা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, এ বছর দুদেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ঢাকায় একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মাণ করে দিতে চীনকে প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ। এ প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে চীন।