বয়স একটা সংখ্যা মাত্র! এই কথাটি যেন একেবারে প্রমাণ করে দিয়েছেন বলিউড মেগাস্টার অমিতাভ বচ্চন। আটাত্তর পেরুলেও একেবারে প্রাণবন্ত, সতেজ তিনি। গতকাল ১১ অক্টোবর ‘বিগ বি’ ঊনআশিতে পা দিয়েছেন। সাধারণ এ বয়সে এসে অনেকে জীবনের রঙ হারাতে শুরু করেন, ঠিক তখনও মনের দিক থেকে এই কিংবদন্তি যুবকই রয়ে গেছেন। বয়সের ছাপ কাটিয়ে দাপিয়ে কাজ করছেন ছোট ও বড় পর্দায়। খবর বাংলানিউজের।
১৯৪২ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের এলাহাবাদে হিন্দু-শিখ পরিবারে অমিতাভ বচ্চনের জন্ম। তার বাবা হিন্দি কাব্যসাহিত্যের এক বিশিষ্ট ব্যক্তি হরিবংশ রাই বচ্চন এবং মা তেজি বচ্চন।
অমিতাভ বচ্চনের অভিষেক ঘটে ১৯৬৯ সালে খাজা আহমেদ আব্বাস পরিচালিত ‘সাত হিন্দুস্তানি’ সিনেমার মাধ্যমে। প্রথম সিনেমাতেই তাক লাগিয়ে দেন তিনি। সেরা নবাগত হিসেবে অর্জন করেন ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। এতে সাত জন নায়কের একজন ছিলেন অমিতাভ।
১৯৭১ সালে রাজেশ খান্নার সঙ্গে সহ-অভিনেতা হিসেবে ‘আনন্দ’ সিনেমায় অভিনয় করেন অমিতাভ। এ সিনেমাটির জন্য তিনি ফিল্ম ফেয়ার পুরষ্কার পান। এর এক বছর পর ‘পরওয়ানা’ সিনেমায় প্রথমবার নেতিবাচক চরিত্রে আত্মপ্রকাশ ঘটে তার।
১৯৭৩ সালে পুলিশ চরিত্রে ‘জানজির’ সিনেমায় অভিনয় করেন অমিতাভ। এরপর একই বছর অভিনেত্রী জয়া ভাদুড়ির সঙ্গে ঘর বাঁধেন তিনি। তারা দু’জন জুটি বেঁধে বেশকিছু সিনেমায় অভিনয় করেন। তাদের দুই সন্তান শ্বেতা নন্দা এবং অভিষেক বচ্চন। অভিষেকও পেশায় অভিনেতা এবং তার স্ত্রী অভিনেত্রী ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন। অভিনয় থেকে সাময়িক বিরতি নিয়ে রাজনীতিতেও যোগ দিয়েছিলেন অমিতাভ বচ্চন। ১৯৮৪ সালে পারিবারিক বন্ধু রাজীব গান্ধীর সমর্থনে এলাহাবাদে লোকসভা নির্বাচনে অংশ নেন তিনি। ভারতের উত্তর প্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী এইচ এন বহুগুনার বিরুদ্ধে নির্বাচনে দাঁড়ান এবং সাধারণ নির্বাচনের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ভোট পার্থক্যে জয়লাভ করেন তিনি। তবে তিন বছর পর রাজনীতিকে ‘নর্দমা’ আখ্যা দিয়ে পদত্যাগ করেন তিনি। এরপর আর তাকে রাজনীতিতে দেখা যায়নি। ১৯৮৮ সালে আবারও অভিনয়ে ফেরেন অমিতাভ। ৫০ বছরের ক্যারিয়ারে প্রায় দুইশ’রও বেশি সিনেমায় অভিনয় ‘শাহেনশাহ’। অভিনেতা ছাড়াও অমিতাভ বচ্চন একজন প্রযোজক, টেলিভিশন উপস্থাপক ও কণ্ঠশিল্পী।
বর্তমানে প্রতিদিন টেলিভিশনের জনপ্রিয় শো ‘কৌন বনেগা ক্রোড়পতি’র সঞ্চালক হিসেবে পর্দায় হাজির হচ্ছেন অমিতাভ বচ্চন। এছাড়া বেশকিছু সিনেমার কাজও রয়েছে তার হাতে।