ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি নাবিকদের খোঁজ নিতে উদ্বিগ্ন স্বজনরা গতকাল সকাল থেকেই ভিড় করেছেন জাহাজটির মালিকপক্ষ এসআর শিপিং কার্যালয়ে। গতকাল দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকায় এসআর শিপিংয়ের কার্যালয়ে বেশ কয়েকজন নাবিকের স্বজনদের অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। পারভিন নামে এক জিম্মির স্বজন বলেন, ‘আমার ভাই জাহাজে সাধারণ নাবিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। জিম্মি হওয়ার পর থেকে তার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ হয়নি।’ মালিকপক্ষ জানিয়েছে, জাহাজে সবাই নিরাপদ ও সুস্থ আছেন। তাদের মুক্তির জন্য সবরকম প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। খবর বাসসের।
জলদস্যুদের হাতে জিম্মি ২৩ নাবিকের মধ্যে ৯ জন চট্টগ্রামের বাসিন্দা। বাকিরা দেশের বিভিন্ন জেলার।
এসআর শিপিং কার্যালয়ে আসা জোৎস্না বেগমের বয়স ৫০ এর ঘরে। তার ছেলে তানভীর আহমেদ। চতুর্থ ইঞ্জিনিয়ার হয়ে আছেন এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে; জিম্মি জাহাজে রয়েছেন এই তরুণ ইঞ্জিনিয়ারও। উদ্বিগ্ন মা জোৎস্না বেগম কাঁদছেন আর বলছেন, ‘আমার মানিক কোথায়? তারে আমার সামনে আনেন। আমি আমার মানিকরে বুকে নেব।’
জোৎস্না বেগম যখন এসব কথা বলছিলেন তখন কেএসআরএমের অফিসে তার পাশেই ছিলেন জিম্মি হওয়া নাবিকদের আরও অন্তত এক ডজন স্বজন। তাদের কেউ এসেছেন ভাইয়ের খোঁজে, কেউ স্বামীর। তাদেরই একজন জান্নাতুল ফেরদৌস। জিম্মি নাবিক নুর উদ্দিনের স্ত্রী তিনি। স্বামীর সঙ্গে শেষ কথোকপথনের তথ্য জানিয়ে তিনি বলেন, গতকাল (মঙ্গলবার) সন্ধ্যার পর তার সঙ্গে শেষ কথা হয়েছে। সে বলেছে, বিপদে আছে। মুক্তিপণ না পেলে জলদস্যুরা তাদের মেরে ফেলবে। তাদের মুক্ত করতে আমরা যেন মালিকপক্ষের সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগ করি। তাই এখানে ছুটে এসেছি।
জান্নাতুল যখন এসব কথা বলছিলেন তখন পাশেই ছিলেন কেএসআরএম গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি। জলদস্যুদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছি। তারা এখনও কোনো যোগাযোগ করেনি। সাধারণত দু–তিন সপ্তাহ সময় নিয়ে যোগাযোগ করে তারা। আমরা ২৩ নাবিকের সবাইকে নিরাপদে ফিরিয়ে আনতে যা যা করার দরকার সব করব।
জানতে চাইলে প্রিন্সিপাল অফিসার ক্যাপ্টেন সাব্বির মাহমুদ বলেন, জাহাজের ডেক ক্যাডেটের কাছ থেকেই জলদস্যু আক্রমণ হওয়ার কথা প্রথম জানতে পারি আমরা। পরে তার সঙ্গে কথা হয়েছে জাহাজটির মালিকপক্ষেরও।