চারদিকে পৈশাচিকতার জয়যাত্রা। ক্রমেই মানবিক খোলস ছেড়ে আমরা ফ্রাঙ্কেইনস্টাইনের দানবের পদাঙ্ক অনুসরণ করছি। পরিবার থেকে পাড়া, পাড়া থেকে সমাজ, সর্বত্র যেন পাল্লা দিয়ে নৃশংসতা বাড়ছে। পিতার হাতে পুত্র খুন, পুত্রের হাতে মাতা খুন যেন আর বিরল ঘটনা নয়। কী হৃদয়বিদারক ঘটনাগুলো! তুচ্ছ বিষয় নিয়ে খুন হয়ে যাচ্ছে মানুষ। গরম থেকে একটু শান্তি পেতে ট্রেনের জানালার পাশে দাঁড়ানোর মতো তুচ্ছাতিতুচ্ছ বিষয় নিয়ে মানুষের ভবলীলা সাঙ্গ হচ্ছে। কিশোরদের উল্লেখযোগ্য একটা অংশ কিশোর গ্যাং নামক ক্যান্সারে আক্রান্ত। খুনোখুনির মতো ঘটনা অহরহ হচ্ছে। মাদক তো ডালভাত! শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উঠে যাচ্ছে শিক্ষকদের সম্মান করার চিরাচরিত রীতিনীতি। ছাত্রের হাতে শিক্ষক লাঞ্চিতের ঘটনা এখন যেন গা সওয়া হয়ে গেছে সমাজ। বয়স্করা হচ্ছেন অবহেলিত। প্রতিষ্ঠিত মানুষরাও বার্ধক্যে পৌঁছলে গুরুত্বহীন হয়ে জায়গা হচ্ছে বৃদ্ধাশ্রমে, এ নিউজ পত্রিকার পাতায় এখন আর অপরিচিত নয়। কর্মক্ষেত্র বিষাক্ত হচ্ছে কিছু কুলাঙ্গার এর কারণে। মানুষের রুটি রুজির জায়গাও পবিত্র রাখা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। চারদিকে এতে এতো অশনি সংকেত থাকলে মানবিকতা আর উদারতার বদলে দানবীয়তা আর পৈশাচিকতাই জিতে যাবে। এমনটা হলে সমাজ হবে বসবাসের অনুপযোগী যেটা কাম্য নয়। উদারতার বিস্তারে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। সংযম আর সহিষ্ণুতার বিস্তৃতি দরকার নয়তো ভঙ্গুর হয়ে যাবে সমাজব্যবস্থা। পারিবারিক বন্ধন দৃঢ় করতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষাসংশ্লিষ্ট কার্যক্রমকেই গুরুত্ব দিতে হবে। কর্মক্ষেত্র তথা রুটি রুজির জায়গার সিন্ডিকেট আর সাম্প্রদায়িক বিষ দমন করতে হবে। প্রতিটি জায়গায় কাজ করতে হবে একটি মানবিক আর উদার সমাজ গঠনে। এ ছাড়া আমাদের মুক্তি নেই।