সিলেট থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনে তরুণীকে (১৯) ধর্ষণের অভিযোগে গঠিত বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গত বৃহস্পতিবার থেকে তাদের তদন্ত কাজ শুরু করেছে। চলন্ত ট্রেনে তরুণী ধর্ষণের ঘটনায় তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা আনিসুর রহমানকে।
কমিটির চার সদস্য গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে প্রথম সভা করেছেন।
এই ব্যাপারে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, উদয়ন ট্রেনে তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনায় চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার থেকে কমিটি তাদের কাজ শুরু করেছেন। এ প্রসঙ্গে তদন্ত কমিটির সদস্য ও পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (ডিসিও) তারেক ইমরান আজাদীকে বলেন, উদয়ন ট্রেনে তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বর্তমানে তারা কারাগারে আছে। আদালতে তাদের বিচার হবে। যদিও তারা রেলওয়ের কর্মচারী নয়, তারপরও প্রকৃত ঘটনা জানার জন্য রেলওয়ের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে আমিও আছি। আমাদেরকে সাতদিন সময় দেয়া হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার থেকে আমরা কাজ শুরু করেছি। প্রথমদিন আমরা ট্রেনে উঠেছি, সকলের সাথে কথা বলেছি। আজকে (গতকাল) চট্টগ্রাম স্টেশনে গিয়েছি।
সিলেট থেকে ছেড়ে আসা উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনে যে প্রতিষ্ঠান খাবার সরবরাহ করত উদয়ন ও পাহাড়িকা ট্রেনে তাদের সকল কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। তাদের ক্যাটারিংয়ের সকল মালামাল এই দুটি ট্রেন থেকে নামিয়ে দেয়া হয়েছে।
গত ২৬ জুন বুধবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে সিলেট থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনে এক তরুণী ধর্ষণের শিকার হন। ট্রেনটি ওই সময় লাকসাম জংশন পার হচ্ছিল। উদয়ন এক্সপ্রেস সিলেট থেকে গত ২৫ জুন রাত ১০টায় চট্টগ্রামের উদ্দেশে ছেড়ে আসে। চট্টগ্রাম পৌঁছে বুধবার সকাল ৮টায়।
রেলওয়ে পুলিশ জানায়, ওই তরুণী উদয়ন এক্সপ্রেসে উঠে খাবারের বগিতে অবস্থান নেন। ওই সময় খাবার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন কর্মী প্রথমে তাকে উত্ত্যক্ত এবং পরে ধর্ষণ করে। ভুক্তভোগী সিলেট গিয়েছিলেন ভাইয়ের বাসায়। তার বাড়ি বান্দরবানে। বাড়ি যাওয়ার জন্যই চট্টগ্রাম আসছিলেন।
চট্টগ্রাম রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম শহীদুল ইসলাম বলেন, উদয়ন ট্রেনে তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে গত বুধবার রেলওয়ে থানায় চার জনকে আসামি করে মামলা করেন ভুক্তভোগী ওই তরুণী। এ ঘটনার পর অভিযান চালিয়ে চার জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। চার জনই ওই ট্রেনে খাবার সরবরাহকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এসএ করপোরেশনের কর্মী। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। আগামী সোমবার শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।