চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংর্ঘষের জেরে আগামী ৫ জুলাই পর্যন্ত সকল ক্লাস ও পরীক্ষা স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৪ জুন) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্যের কার্যালয়ে এক জরুরি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল আলমের সভাপতিত্ব অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব অনুষদের ডিন, ইনস্টিটিউটের পরিচালক, রেজিস্ট্রার, বিভাগীয় প্রধান, হলগুলো প্রভোস্ট এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক উপস্থিত ছিলেন।
ছাত্রদেরকে মঙ্গলবার বিকেল ৫টার মধ্যে এবং ছাত্রীদেরকে বুধবার সকাল ১০টার মধ্যে হল খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্নাতক পর্যায়ের সকল ক্লাস ও পরীক্ষা স্থগিত করা হলেও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের ক্লাস ও পরীক্ষা চলবে।
এর আগে মঙ্গলবার ছাত্রলীগের একটি গ্রুপ চট্টগ্রাম শহরমুখী শিক্ষক, কর্মকর্তা, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের সব বাস আটকে রাখে। ফলে শহর থেকে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে যেতে পারেনি। শিক্ষক-কর্মকর্তাদের বড় একটা অংশ ক্যাম্পাসে বিকল্প পরিবহনের গিয়েছেন।
সোমবার (১৩ জুন) দিবাগত রাতে ৫০ জনের মতো একটি গ্রুপ হেলমেট পরে লাঠিসোঁটা, রামদা নিয়ে ক্যাম্পাসে টহল দিয়েছে। গত শনিবার রাতে চট্টগ্রাম শহরে একটি অনুষ্ঠানে অংশ নেন চুয়েট ছাত্রলীগের একটি গ্রুপের নেতাকর্মীরা। অনুষ্ঠান শেষ হতে দেরি হওয়ায় চুয়েটের রাত ৯টার বাসটি ৩০ মিনিট দেরিতে ছাড়তে বলে তারা। তবে একই বাসে থাকা অন্য একটি গ্রুপের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এর বিরোধিতা করে। মূলত এই বিষয়টি নিয়েই বাকবিতণ্ডা থেকে
তা একপর্যায়ে হামলা-মারামারিতে রূপ নেয়। একপর্যায়ে ওইরাতে ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকে জড়ো হয় উভয় গ্রুপের নেতাকর্মীরা। হলে না পেয়ে উভয় পক্ষই একে অপর পক্ষের রুমের তালা ভেঙে রুমে ঢুকে তাদের বিছানা ও জিনিসপত্র বাইরে ছুড়ে ফেলে দিয়ে নিজেদের শক্ত অবস্থান জানান দিয়ে স্লোগান দিতে থাকে।
দুই গ্রুপই বিপুল পরিমাণ দেশিয় অস্ত্র নিয়ে অবস্থান নিয়েছিল। যা গত শনিবার ভোর ৪টা পর্যন্ত চলতে থাকে। গত রোববার পুনরায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসের সিটে বসাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে তিনজন আহত হয়েছিল।
চট্টগ্রামের সহকারী পুলিশ সুপার (রাঙ্গুনিয়া সার্কেল) মো. আনোয়ার হোসেন শামীম বলেন, চুয়েটে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আমাদের পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়ন রয়েছে।