অবশেষে ঠান্ডা হচ্ছে গরম মসলার বাজার। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা নিজেদের মধ্যে অস্বাভাবিক ট্রেডিং (হাতবদল) করে এলাচের দাম আকাশচুম্বী করে তুলে। গত এক মাসে শুধুমাত্র এলাচের দাম বাড়ে ৭০০ টাকা। তবে গত একদিনের ব্যবধানে এলাচের দাম কেজিতে ৫০ টাকা কমে এখন বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ২৬০ টাকায়। এছাড়া নিম্নমুখী জিরার দামও। দারুচিনি, লবঙ্গ ও গোল মরিচের দাম স্থিতিশীল রয়েছে।
খাতুনগঞ্জের কয়েকজন গরম মসলা ব্যবসায়ী জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে গরম মসলার বাজার ঊর্ধ্বমুখী। তবে আমাদের দেশে যে পরিমাণ গরম মসলা মজুদ আছে, সে অনুপাতে বাজারে চাহিদা নেই। তাই এখন নতুন করে কোনো ব্যবসায়ী বাড়তি দরে গরম মসলা আমদানির করার চিন্তা করবে না। সম্প্রতি এলাচ কিংবা জিরার দাম বাড়ার পেছনে বাজার চাহিদা কিংবা সরবরাহ সংকটের কারণে বাড়েনি। বাড়ার কারণে হলো– খাতুনগঞ্জের কিছু ডিও স্লিপ ব্যবসায়ী যারা তেল–চিনির বাজার নিয়ে নিয়মিত জুয়া খেলে দাম উঠানামা করান, তারাই এলাচ–জিরার দাম বৃদ্ধি করেছিল। তবে এখন অনেক ব্যবসায়ী এলাচ–জিরা থেকে বেরিয়ে এসে তেল–চিনিতে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছেন, তাই পণ্য দুটির দরপতন হচ্ছে।
খাতুনগঞ্জের মসলার বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে এলাচ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২ হাজার ২৬০ টাকা, জিরা বিক্রি হচ্ছে ৯৮০ টাকা, গোল মরিচ ৬১০ টাকা, দারুচিনি ৩০৫ টাকা এবং লবঙ্গ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৩৭০ টাকায়।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে প্রায় সব ধরনের মসলা আমদানি করতে হয়। এলাচ আসে গুয়েতেমালা থেকে। বাকি সব পণ্য ভারত থেকেও আসে। তবে এটি ঠিক বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে গরম মসলার বুকিং দর বেড়েছে। কিন্তু খাতুনগঞ্জের বাজারে যেসব মসলা মজুদ আছে, সব আগেই আমদানি হয়েছে। সুতরাং বুকিং দর বাড়ার প্রভাব পড়ার কথা না।
খাতুনগঞ্জের মসলা আমদানিকারক হাজী জসিম ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী জসিম উদ্দিন বলেন, গরম মসলার বাজার এখন নিম্নমুখী। এলাচ ও জিরার বাজার নিম্নমুখী। বাজারে এতদিন এলাচের দাম বেড়েছিল আসলে ট্রেডিং ব্যবসায়ীদের কারণে।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রামের বিভাগীয় সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন আজাদীকে বলেন, আমাদের দেশে গরম মসলার কোনো ঘাটতি নেই। তারপরও ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে একমাসে এলাচের দাম কেজিতে ৭০০ টাকা বাড়িয়েছে। এটি একেবারে অস্বাভাবিক। তারা ৭০০ টাকা বাড়ানোর পর এখন ৫০ টাকা কমিয়েছে। একই বিষয় জিরার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। ৬০০ টাকার জিরা হাজারের ওপর নিয়ে গিয়ে এখন ১০০ টাকা কমিয়েছে। এটি আসলে ব্যবসায়ীদের মর্জির ওপর নির্ভর করছে।