উত্তর কাট্টলী উপকূলে গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো শেখ রাসেল স্টেডিয়াম

৪০ একর জমি দখল করে স্থাপনা, প্রথম দিনের অভিযানে ১২ একর দখলমুক্ত

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ১৪ জুলাই, ২০২৫ at ৭:৪১ পূর্বাহ্ণ

নগরীর উত্তর কাট্টলীতে সাগর উপকূলে শেখ রাসেলের নামে নির্মাণ করা স্টেডিয়াম গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তিন দিনব্যাপী অভিযানের প্রথম দিনে প্রায় ৪০ একর জমি দখল করে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্যসহ প্রভাবশালীরা ওই স্টেডিয়াম ও বিভিন্ন বাণিজ্যিক স্থাপনা গড়ে তুলেছিলেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সেই ৪০ একর জমি উদ্ধারে গতকাল থেকে অভিযান শুরু হয়েছে। এতে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের তিনজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও বিপুল সংখ্যক সেনা ও পুলিশ সদস্য অংশ নেন। অভিযানের প্রথম দিন গতকাল সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত প্রায় ১২ একর জমি দখলমুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসন ও পাউবোর কর্মকর্তারা। উত্তর হালিশহর থেকে উত্তর কাট্টলীর বাংলাবাজার পর্যন্ত সাগর উপকূলের অংশ দখলমুক্ত করতে আরো দুদিন অভিযান চালানো হবে বলে জানিয়েছেন এতে নেতৃত্ব দেওয়া চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের কাট্টলী সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) হুছাইন মুহাম্মদ। অভিযানে আরো ছিলেন পতেঙ্গা সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফারিস্তা করিম, জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার মো. মঈনুল হাসান এবং পাউবো চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী শওকত ইবনে সাহীদ।

সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক প্রভাব খাটিয়ে নগরীর টোল রোড সংলগ্ন সাগর উপকূলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রায় ৩২০ কোটি টাকা মূল্যের ৪০ একর জমি দীর্ঘদিন ধরে দখলে রেখেছেন একাধিক ব্যক্তি। দখলবাজি আড়াল করতে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গড়ে তোলা হয়েছিল শেখ রাসেল স্টেডিয়াম। স্টেডিয়ামটির দৈর্ঘ্য ছিল ৩৩০ ফুট, প্রস্থ ২০০ ফুট। ২০২২ সালের ১৯ অক্টোবর শেখ রাসেলের জন্মদিনে স্টেডিয়ামটি উদ্বোধন করা হয়।

পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী শওকত ইবনে সাহীদ বলেন, মিনি স্টেডিয়ামের পুরোটাই সরকারি খাস জমির উপর নির্মাণ করা হয়েছিল। স্টেডিয়ামের সঙ্গে মোস্তফা হাকিম গ্রুপ একটি কাভার্ডভ্যান ও স্কেভেটর ইয়ার্ড বানিয়েছিল। স্টেডিয়ামের অপর পাশে প্রায় পৌনে তিন একর জায়গা ভরাট করে তারা চীনের একটি প্রতিষ্ঠানকে ভাড়া দিয়েছিল। এর সবগুলো সরকারি খাস জমিতে করা হয়েছিল। অভিযানে আমরা সবগুলো স্থাপনা পুরোপুরি গুঁড়িয়ে দিয়েছি। তবে সেখানে যেসব সরঞ্জাম ছিল সেগুলোর কোনো ক্ষতি করিনি।

সংশ্লিষ্টদের তথ্যমতে, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্যানেল মেয়র নিছার উদ্দিন আহমেদ, সাবেক কাউন্সিলর আবুল হাসেমসহ আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ আরো কয়েকজন নেতা এবং ব্যবসায়ীর দখলে আছে ৩০ একরের বেশি সরকারি খাস জমি, যেগুলোতে বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে।

পাউবো কর্মকর্তা শওকত ইবনে সাহীদ বলেন, আমাদের টার্গেট মোট ৪০ একর জমি দখলমুক্ত করা। প্রথম দিনে আমরা ১২ একরের মতো করেছি। ১৫ জুলাই পর্যন্ত অভিযান চলবে। অবৈধ সব স্থাপনা উচ্ছেদের পর দখলমুক্ত জমিতে পিলার দিয়ে সীমানা নির্ধারণ করে দেওয়া হবে। এরপর সেখানে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে পরিকল্পিত বনায়ন করা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে ফের মাইন বিস্ফোরণ, যুবকের পা বিচ্ছিন্ন
পরবর্তী নিবন্ধরাঙামাটিতে ম্যালেরিয়ায় স্কুলছাত্রীর মৃত্যু