আকস্মিক বা বড় ধরণের বন্যার ক্ষেত্রে যথাসময়ে পূর্বাভাস পেতে চীন, ভারত, নেপাল, ভুটানসহ উজানের দেশগুলোর কাছ থেকে প্রয়োজনীয় সব তথ্য চাইতে তাদের সঙ্গে আলোচনা ও যোগাযোগ জোরদার করা হবে মন্তব্য করেছেন পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
গতকাল শনিবার ঢাকার পানি ভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মন্ত্রণালয়ের অধীন দপ্তরগুলোর কর্মকান্ডের পর্যালোচনা সভায় রিজওয়ানা হাসান বিষয়টির অবতারণা করেন বলে তুলে ধরে মন্ত্রণালয় থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। খবর বিডিনিউজের।
রিজওয়ানা বলেছেন, জনগণকে যথাসময়ে সহজ ভাষায় বন্যার পূর্বাভাস জানানোর প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে। সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ফেনী ও কুমিল্লায় গণশুনানি করা হবে। জনগণের মতামত নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ নিশ্চিত করতে সব বাঁধা দূর করতে হবে। এসময় তিনি ফেনী নদীর মাছের ঘেরসহ সব অবৈধ দখল উচ্ছেদে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন।
পানি সম্পদ উপদেষ্টা বলেন, হাওরে যাতে বাঁধ ভেঙে ফসলের ক্ষতি না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। হাওরে স্থাপনা নির্মাণের আগে পরিবেশ অধিদপ্তর এবং হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিতে হবে। গঙ্গা–কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্পের সকল পাম্প চালু করার উদ্যোগ নিতে হবে। ওই অঞ্চলে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন বন্ধ করতে হবে।
সভায় যৌথ নদী কমিশনের কার্যক্রম, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ পূর্বাভাস ব্যবস্থা, হাওর এলাকার কার্যক্রম এবং গঙ্গা–কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। দেশের পূর্বাঞ্চলের জেলাগুলোতে সাম্প্রতিক বন্যার ভয়াবহ আঘাতের ঘটনা বেশ কিছু বিতর্ক তৈরি করেছে, যার মধ্যে উজানের দেশ ভারতের কাছ থেকে যথাসময়ে বন্যার সতর্কতা না পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্যোগী হয়ে প্রতিবেশী দেশটির সঙ্গে এ বিষয়ে একটি সুরাহা করার দাবি উঠেছে বিভিন্ন পক্ষ থেকে। এবার ত্রিপুরায় ব্যাপক বন্যার পর ডুম্বুর ব্যারেজ থেকে আকস্মিক নেমে আসা পানি এবং দেশের ভেতরে অতিবৃষ্টির কারণে ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লাসহ দেশের ১১টি জেলায় ভয়াবহ বন্যা হয়েছে, যাতে এখনও ধুঁকছে লাখ লাখ মানুষ। বন্যাজনিত বিভিন্ন কারণে এসব জেলায় গতকাল শনিবার পর্যন্ত অর্ধশতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে।