কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলায় রোহিঙ্গা শিবির ও পার্শ্ববর্তী স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য তিনটি যৌথ পাইপভিত্তিক পানি বিতরণ নেটওয়ার্ক যাত্রা করেছে। এতে এই অঞ্চলের ১০ হাজার মানুষের সুপেয় পানি সমস্যা লাঘব হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। গত সোমবার চালুর পর এই পানি বিতরণ প্লান্ট হস্তান্তর করা হয়েছে। প্লান্টগুলো উদ্বোধন করেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইবনে মায়ায প্রামাণিক।
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হোসেন চৌধুরী জানান, বহুদিনের নিরাপদ পানির সংকট দূরীকরণে এই উদ্যোগ বাস্তবসম্মত সমাধান এনে দেবে। স্থানীয় জনগোষ্ঠীও এর সুফল পাবে।
প্রকল্প বাস্তবায়ন সংস্থা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ইউনিসেফের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় বাস্তবায়িত এই তিনটি যৌথ পাইপভিত্তিক পানি বিতরণ নেটওয়ার্ক থেকে উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের পটিবুনিয়া, গয়ালমারা ও মোচারখোলা গ্রামীণ এলাকা এবং নিকটবর্তী ১৫ ও ১৬নং রোহিঙ্গা শিবিরে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হবে। তিনটি প্রকল্পে উপকারভোগীর সংখ্যা রয়েছে গয়ালমারায় স্থানীয় মানুষ ১ হাজার ৩৪৪ জন এবং ক্যাম্প ১৬–এ ১ হাজার ৮৫০ জন। পটিবুনিয়ায় স্থানীয় মানুষ ১ হাজার ২৮১ জন এবং ক্যাম্প ১৬–এ ২ হাজার ৯৫০ জন এবং মোচারখোলায় স্থানীয় মানুষ ৮৭৫ জন এবং ক্যাম্প ১৫–এ ১ হাজার ৭০০ জন। সব মিলিয়ে প্রায় ১০ হাজার মানুষ এই উদ্যোগের সুবিধাভোগী হবেন।
সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধি ও প্রকৌশল কর্মকর্তারা বলছেন, নিরাপদ পানির স্থায়ী সমাধান নিশ্চিত হলে মানুষের জীবনমান উন্নত হবে এবং মানবিক চ্যালেঞ্জ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসবে। মানবিক জরুরি সেবার সঙ্গে টেকসই উন্নয়ন যুক্ত করার এই উদ্যোগ আগামী দিনের নিরাপদ পানি ব্যবস্থাপনার একটি উদাহরণ হয়ে থাকবে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উখিয়া শাখার প্রকৌশলী মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় জনগণ ও ক্যাম্প–দুই অংশেরই পানির ঘাটতি ছিল। এই যৌথ নেটওয়ার্ক সে ঘাটতি অনেকটাই পূরণ করবে।
রোহিঙ্গা অধ্যুষিত পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম গাফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘দীর্ঘদিনের পানিবঞ্চিত মানুষ আজ তাদের প্রাপ্য অধিকার পেল। এর মাধ্যমে মোটামুটি একটি নিয়মিত সমস্যা সমাধান হয়েছে। আশা করি এই প্রকল্পের স্থায়িত্ব দিয়ে এই সুফলকে স্থায়ী করা হবে।’
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও আশেপাশের এলাকায় বেশ পানি সংকট রয়েছে। মূলত ভূগর্ভস্থ থেকে অনিয়ন্ত্রিত পানি উত্তোলনের ফলে এই সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। এতে একটি বড় জনগোষ্ঠী সুপেয় পানি সংকটে ভুগছিল। এর মধ্যে তিনটি পানি নেটওয়ার্ক চালু হওয়ায় আপাতত সমস্যা অনেকাংশে লাঘব হবে। এই সুবিধা বলবৎ রাখতে চেষ্টা থাকবে।’











