দুইদিনের টানা ভারী বর্ষণ-পাহাড়ি ঢল ও সাগরের জোয়ারের পানি ঢুকে কক্সবাজারের উখিয়ার শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।এতে প্রায় ৩০ হাজারের বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বহু কাঁচা ঘরবাড়ি ভেঙে, গ্রামীণ সড়ক লণ্ডভণ্ড কালভার্ট বিধ্বস্ত গাছপালা এবং পানের বরজ নষ্ট হয়ে ব্যাপক ক্ষতি সাধন হয়েছে। বন্ধ রয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ।এদিকে পাহাড় ধসে উখিয়ার হাকিম পাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে একই পরিবারের তিনজন নিহত হয়েছেন।এতে আরো গুরুত্বর আহত হয়।
জানা যায়,জালিয়া পালং ইউনিয়নের নম্বরী পাড়া, ঘাটঘর পাড়া পাইন্যাশিয়া, সোনাইছড়ি, সোনারপাড়া ডেইপাড়া মনখালি, হলদিয়া পালং ইউনিয়নের চৌধুরী পাড়া, মনির মার্কেট, রুমখা পালং, বড়বিল, পাতাবাড়ি, নলবুনিয়া, খেওয়া ছড়ি, বৌ বাজার, কুলাল পাড়া, পাগলির বিল, রাজা পালং ইউনিয়নের কুতুপালং, মাছকারিয়া, লম্বাশিয়া তুতুরবিল, হিজলিয়া, পিনজির কুল, রত্না পালং ইউনিয়নের সাদৃ কাটা,পশ্চিম রত্না, বড়ুয়াপাড়া, খোন্দকার পাডা, গয়াল মারা ও পালংখালী ইউনিয়নে থাইংখালী, রহমতের বিল, বালুখালী তৈল খোলা, আঞ্জুমান পাড়া ফারিবিল সহ প্রায় শতাধিক গ্রামে পানি তলিয়ে গেছে। চারদিকে পানি আর পানি। নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় অনেক গবাদি পশু মারা যাচ্ছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ।
আবহাওয়া অধিদফতর কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারী আবহাওয়াবিদ আবদুল মান্নান বলেন, কক্সবাজারে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৫৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা চলতি মৌসুমে একদিনে সর্বোচ্চ রেকর্ড। ভারি বৃষ্টিতে জেলার উখিয়াসহ অনেক জায়গায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।
এ ব্যাপারে হলদিয়া পালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরী বলেছেন রুমখা চৌধুরী পাড়া, বউ বাজার, পাগলির বিল, বড়বিল, মনি মার্কেট সহ বিভিন্ন এলাকায় প্লাবিত হয়েছে। সবজি ক্ষেত সহ আমন মৌসুমের ধানের চাষাবাদ পানিতে তলিয়ে গেছে।
স্থানীয় মৎস্য চাষী আবদুল করিম ও হামিদ বলেছেন মৎস্য ঘেরে ও পুকুরে পানি ডুকে লক্ষ লক্ষ টাকার মাছ ভেসে গেছে।
জালিয়া পালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম সৈয়দ আলম বলেন সমুদ্র উপকূলীয় ডেইল পাড়া,নম্বরি পাড়া ও ঘাটঘর পাড়ায় কয়েকশো পরিবার পানিতে আটকা পড়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন জানান প্রবল পানির স্রোতে ধান চাষ,সবজি খেত ও পানের বরজ নষ্ট হয়েছে। গ্রামীন অভ্যন্তরীণ কাঁচা রাস্তা ও কালভার্ট বিধ্বস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এটিএম কাউসার। তবে তাৎক্ষণিক ক্ষতির পরিমাণ বলতে পারছে না তিনি।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আরো জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর হোসেনের নির্দেশনায় সরকারি কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির স্বেচ্ছাসেবক দল ও সিপিপি সদস্যরা প্লাবিত এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসরত মানুষকে নিরাপদ স্থানের সরিয়ে আনতে কাজ করে যাচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর হোসেন শুক্রবার বিভিন্ন ইউনিয়নের পানিতে প্লাবিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ভেরিফাই ফেইস বুকে এক জরুরি বার্তায, পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসরত জনগণকে নিরাপদ স্থানে কিংবা পার্শ্ববর্তী সাইক্লোসেন্টার আশ্রয় নেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।