কক্সবাজারের উখিয়ায় পৃথক পাহাড় ধসে দুই রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে। এছাড়া বন্যার পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়েছে এক শিশুর। মঙ্গলবার রাতে ও গতকাল বুধবার এসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এছাড়া পাহাড়ি ঢল ও খালের পানিতে প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল। এতে পানবন্দি হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার পরিবার। ভেঙে গেছে অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি।
জানা যায়, গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত আড়াইটা ও ভোর চারটার দিকে উখিয়ার বালুখালী জুমের ছড়া ৮ (ইস্ট) ও মরাগাছতলা ১১ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পৃথক পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। এতে ২ জন রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়। নিহতরা হলেন ক্যাম্প–১১ এর এফ–১ ব্লকের দিল মোহাম্মদের ছেলে মো. আনোয়ার হোসেন (২১) ও নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. আলমের ছেলে সিফাত উল্লাহ (১৩)। উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীম হোসেন এ তথ্য জানান।
অপরদিকে উপজেলার হলদিয়াপালং ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড পূর্ব মরিচ্যা এলাকায় বন্যার পানিতে ডুবে মো. রাকিব (৭) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকাল পৌনে চারটার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত শিশু ওই ওয়ার্ডের আলি আকবরের ছেলে। জানা গেছে, বাড়ির পাশে রাস্তার কালভার্টের নিচে মাছ ধরার জন্য তার বাবার পাতা জালে মাছ লেগেছে কিনা দেখতে যায় রাকিব। একপর্যায়ে পানির স্রোতের সঙ্গে সে জালের ভেতর ঢুকে আটকা পড়ে এবং জাল থেকে বের হতে না পেরে সেখানেই মারা যায়। পরে স্থানীয়রা দেখতে পেয়ে তাকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে। হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।
এদিকে, কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে খেটে খাওয়া দিনমজুরসহ কর্মজীবী সাধারণ মানুষেরা বিপাকে পড়েছে। এতে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। চলাচলে ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাচ্ছে মানুষ। গতকাল সকালে পাহাড় ধসে পড়ে মেরিন ড্রাইভ সড়কে। পরে সেনাবাহিনীর একটি টিম ২ ঘণ্টা চেষ্টা করে যান চলাচল স্বাভাবিক করে। সদরের বাংলা বাজার, খরুলিয়া, পিএমখালী, মুহুরী পাড়া, রামু রাজারকুল, দক্ষিণ মিঠাছড়ি, কচ্ছপিয়া, খাওয়াখোপের অধিকাংশ বাড়িঘর প্লাবিত হয়েছে। পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে ফসল।
কঙবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, কঙবাজারে অতিবর্ষণে কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি। তাদের খোঁজখবর নেওয়ার পাশাপাশি প্লাবিত বেশকিছু এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি। সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ও পরিস্থিতি সম্পর্কে জানানো হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে যেকোনো সহযোগিতা আসা মাত্রই ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বিতরণ করা হবে।