কক্সবাজারের উখিয়ায় আলোচিত সৈয়দ করিম হত্যাকাণ্ডে জড়িত ঘাতক চাচাতো ভাই সালামত উল্লাহকে হত্যাকাণ্ডের ১০ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
২৭ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) রাত ৯ টার দিকে রামুর খুনিয়াপালং ইউনিয়নের পেঁচারদ্বীপের পাহাড়ি ঢাল থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় উদ্ধার করা হয়েছে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রক্তাক্ত ছুরি ও নিহতের পরিহিত জামা।
বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২ টায় প্রেস ব্রিফিংয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেন র্যাব-১৫ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এইচএম সাজ্জাদ হোসেন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজারের উখিয়া থানাধীন জালিয়াপালং ইউনিয়নের উত্তর নিদানিয়া তেতুলতলা গ্রামে সৈয়দ করিম (৪৫) নামের এক সুপারী ব্যবসায়ী খুনের ঘটনা ঘটে। তেতুলতলা গ্রামের বাসিন্দা সালামত উল্লাহ ও সৈয়দ করিম সম্পর্কে একে অপরের আপন চাচাতো-জেঠাতো ভাই।
পারিবারিক কিছু বিষয় নিয়ে উভয়ের মধ্যে বিরোধ চলছিল বেশ কিছুদিন ধরে। ঘটনার দিন সকালে উখিয়ার উত্তর নিদানিয়া গ্রামের স্থানীয় স্টেশন থেকে সৈয়দ করিম বাড়ি ফেরার পথে বাড়ির নিকটে সুপারী বাগানে পৌঁছালে সালামত উল্লাহ পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তার উপর আকস্মিক হামলা করে।
এক পর্যায়ে ঘাতক সালামত উল্লাহ সৈয়দ করিমের বুকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। এ সময় ঘটনাস্থলেই গুরুতর আহত হয়ে পড়ে যায় সৈয়দ করিম। পরবর্তীতে তার পরিবার ও আত্মীয় স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সৈয়দ করিমকে মৃত ঘোষণা করেন।
নির্মম এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার সাথে সাথে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। একই সাথে হত্যাকারীকে গ্রেফতার ও হত্যার সুষ্ঠু বিচারের লক্ষ্যে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে।
বিষয়টি সর্ম্পকে অবগত হওয়া মাত্রই র্যাব-১৫, কক্সবাজার ছায়াতদন্ত শুরু করে এবং ঘটনার সাথে জড়িত ঘাতককে গ্রেফতারের লক্ষ্যে ব্যাপক গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায় নির্ভরযোগ্য তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব জানতে পারে যে, ঘাতক সালামত উল্লাহ পালানোর উদ্দেশ্যে মেরিন ড্রাইভ রোড হয়ে কক্সবাজার শহরের দিকে যাচ্ছে। এই তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ঘাতক সালামত উল্লাহকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেয়া তথ্যমতে ঘটনাস্থল হতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত রক্তাক্ত ছুরি ও নিহতের পরিহিত জামা উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত সালামত উল্লাহ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে স্বীকার করে ঘটনার লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়ে বলেন, নিহত সৈয়দ করিমের সাথে তার স্ত্রীর দীর্ঘদিন যাবত পরকীয়া সম্পর্কের সন্দেহ এবং পারিবারিকভাবে পূর্ব শত্রুতা চলে আসছিল। এরই জেরে ঘাতক দীর্ঘদিন যাবত সুযোগের অপেক্ষায় ছিল এবং হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছুরিটি সংগ্রহে রেখেছিল। ঘটনার দিন সকালে উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়নের উত্তর নিদানিয়া গ্রামের স্থানীয় স্টেশন থেকে সৈয়দ করিম বাড়ি ফিরছিলেন। বাড়ি ফেরার পথে নিহতের বাড়ির সুপারী বাগানে পৌঁছালে গ্রেফতারকৃত সালামত উল্লাহ আকস্মিকভাবে তার উপর হামলা করে। একপর্যায়ে সুপারী বাগানে একটি ছোট গর্তে ফেলে সে সৈয়দ করিমের বুকে ছুরিকাঘাত করে এবং ঘটনাস্থলে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছুরিটি ফেলে পালিয়ে যায়।
তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।