এবারের টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুপার এইটে যাওয়ার পথ অনেকটাই সুগম হয়েছে বাংলাদেশের। এখন গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে নেপালের বিপক্ষে জিততে পারলেই শেষ আট নিশ্চিত টাইগারদের। আগামী সোমবার বাংলাদেশ সময় ভোর সাড়ে ৫টায় গ্রুপ পর্বের নিজেদের শেষ ম্যাচে নেপালের মুখোমুখি হবে নাজমুল হোসেন শান্তর দল। ওই ম্যাচে পরাজয় এড়াতে পারলেই ২০০৭ সালের পর আবার সুপার এইটে নাম লেখাবে তারা। একই দিন বাংলাদেশে উদযাপিত হবে ঈদ–উল–আযহা। প্রায় ১৫ হাজার কিলোমিটার দূরের দেশে সেদিন প্রথম প্রহরে নেপালকে হারিয়ে ঈদ উৎসবে বাড়তি মাত্রা যোগ করার আশা সাকিবের। নেদারল্যান্ডসকে হারানোর পর সংবাদ সম্মেলনে অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার বলেন, নেপালকে হারাতেও তারা মুখিয়ে আছেন। বাংলাদেশের মানুষের কাছে ক্রিকেট এক উৎসবের নাম। এবার ক্রিকেট–উৎসবের সঙ্গে মিলে যাওয়ার অপেক্ষায় আরেক উৎসব। ঈদ–উল–আযহার দিন বিশ্বকাপে নেপালের বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ। এই দিন ম্যাচ জিততে পারলে তা আমাদের জন্য অনেক বড় একটা অর্জন হবে। তাই স্বাভাবিকভাবেই আমরা মুখিয়ে আছি সামনে ম্যাচের জন্য। ঈদের দিন, মুসলমান যারা আছি তাদের জন্য আনন্দের একটা দিন। বিশেষ করে বাংলাদেশে সবাই উদযাপন করে। নেপালকে হারিয়ে ঈদের আনন্দ বাড়ানোর জন্য বড় চাবি থাকবে সাকিবেরই হাতে। শ্রীলঙ্কা ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম দুই ম্যাচে ব্যাটে–বলে বিবর্ণ এই অলরাউন্ডার জ্বলে উঠেছেন ডাচদের বিপক্ষে। খেলেছেন ৪৬ বলে ৬৪ রানের ইনিংস।
সাম্প্রতিক সময়ে সাকিবের বাজে পারফরম্যান্স সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছিল তাকে। বিশেষ করে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আনরিখ নরকিয়ার বাউন্সারে বাজেভাবে ক্যাচ দেওয়ার পর সাকিবকে নিয়ে সমালোচনা আরো বৃদ্ধি পায়। ভারতের সাবেক ওপেনার বীরেন্দর সেওয়াাগ তো কটাক্ষ করে সরাসরি বলেই দেন, এখন অবসর নেওয়া উচিত সাকিবের। নেদারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে জানতে চাওয়া হয় দীর্ঘ দিন পর রানে ফেরা, ম্যাচ সেরা পারফরম্যান্স কোনো রকমের জবাব দেওয়া কি না ? জবাবে সাকিব দলের জন্য অবদান রাখতে পারার তৃপ্তির কথা বলেন তিনি। একজন ক্রিকেটার কখনও কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে আসে না। ক্রিকেটারের কাজ হলো, সে যদি ব্যাটসম্যান হয় রান করা, দলের জন্য অবদান রাখা। সে যদি বোলার হয়, তার কাজ হচ্ছে ভালো বোলিং করা। উইকেট পাওয়াটা ভাগ্যের ব্যাপার থাকে। সে যদি ফিল্ডার হয়, তার কাজ হচ্ছে প্রতিটা রান বাঁচানো, যতগুলো ক্যাচ যায়, ততগুলো ধরা। এখানে আসলে কাউকে উত্তর দেওয়ার কিছু নেই। একজন ক্রিকেটারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলো, দলের হয়ে সে কতটা কৃতিত্ব রাখতে পারে। সেটা যখন রাখতে পারে না, স্বাভাবিকভাবেই কথা হবে। আমি মনে করি সেটা খুব বেশি খারাপ কিছুও না। অবশ্য শুধু সেওয়াাগ নয়, দেশেও সামাজিক মাধ্যম থেকে শুরু করে সংবাদ মাধ্যমেও সাকিবের সামপ্রতিক ফর্ম নিয়ে হয়েছে অনেক আলোচনা। চোখের সমস্যার কারণে তার নতুন স্টান্স ও নড়বড়ে হেড পজিশনে হওয়া ব্যাটিংয়ের অস্বস্তির কারণে সাকিবের শেষটাও দেখে ফেলেছিলেন কেউ কেউ। সেসব আলোচনা আর বাড়তে না দিয়ে ম্যাচ জেতানো পারফরম্যান্সের পর সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন সাকিব। তিনি বলেন আল্লাহ সবসময় আমার প্রতি অনেক দয়াশীল। এরকম পরিস্থিতি যখনই আসে, আল্লাহ ভালো কিছু দিয়ে দেন। তার প্রতি শুকরিয়া যে ভালো কিছু করতে পেরেছি। গুরুত্বপূর্ণ ছিল আমাদের ২ পয়েন্ট পাওয়া। যেটা আমরা পেয়েছি। যদি দেশ থেকে আসার আগে কেউ চিন্তা করত যে তিন ম্যাচে আমাদের ৪ পয়েন্ট থাকবে। আমরা মনে হয় সবাই আমরা খুশি মনেই সেটা নিতাম। কীভাবে জিতেছি সেটাওতো গুরুত্বপূর্ণ মনে হয় না। বিশ্বকাপের মতো মঞ্চে আপনি দুইটা পয়েন্ট পেয়েছেন, ম্যাচটা জিতেছেন এটাই সবচেয়ে বড় বিষয়।