ঈদুল আজহার টানা সরকারি ছুটিতে পণ্য খালাস কার্যক্রম ঠিকঠাকভাবে না হওয়ায় বন্দরের অভ্যন্তরে কন্টেনারের পাহাড় গড়ে উঠেছে। তবে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে কন্টেনারের পরিমাণ কমে আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে।
বন্দর সূত্র জানায়, ঈদ উপলক্ষ্যে টানা দশদিনের ছুটির আমেজে ছিল দেশ। এতে করে বন্দর থেকে কন্টেনার খালাস ঠিকঠাকভাবে হয়নি। বন্দরের কার্যক্রম খোলা থাকলেও আমদানিকারকেরা খালাস না করায় বন্দরের অভ্যন্তরে কন্টেনার জট তৈরি হয়। ৫৩ হাজারের কিছু বেশি ধারণক্ষমতার বিপরীতে প্রায় ৪৫ হাজার টিইইউএস কন্টেনার ইয়ার্ডে আটকা পড়ে। ছুটি শেষে গত রোববার থেকে পুরোদমে বন্দরের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় তিন হাজারেরও বেশি আমদানি পণ্যবোঝাই কন্টেনার খালাস হয়েছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে জট দ্রুত কেটে যাবে বলেও বন্দরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
বন্দর সূত্র জানায়, ছুটি শেষে খোলার প্রথমদিন রোববার (১৫ জুন) সকাল ৮টা পর্যন্ত বন্দরের অভ্যন্তরে আমদানি–রফতানি পণ্যবোঝাই ও খালিসহ মোট কন্টেনার আটকা পড়ে ৪৪ হাজার ৫৪৮ টিইইউএস। গতকালও জেটিতে ১০টি জাহাজ থেকে কন্টেনার খালাস চলছিল। এছাড়া জেটিতে প্রবেশের অপেক্ষায় বর্হিনোঙ্গরে অন্ততঃ ১০টি জাহাজ রয়েছে। যেগুলোতে দশ হাজার টিইইউএস–এর বেশি কন্টেনার রয়েছে। তবে ছুটির পরে কাজে বেশ গতিশীলতা তৈরি হয়েছে। দ্রুত কন্টেনার খালাস হচ্ছে।
ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে গত ৫ জুন থেকে সরকারি ছুটি শুরু হয়, যা ১৪ জুন পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। টানা ১০দিন ছুটিতে বিভিন্ন শিল্প কারখানা বন্ধ থাকায় বন্দর থেকে কন্টেনার খালাসের পরিমাণ তলানিতে ঠেকেছিল। ফলে বন্দরের অভ্যন্তরে কন্টেনারের পাহাড় গড়ে উঠে। তবে চট্টগ্রাম বন্দরে শুধুমাত্র ঈদের দিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত অপারেশনাল কার্যক্রম বন্ধ ছিল। কিন্তু এরপর থেকে আগের মতোই ২৪ ঘণ্টা সচল আছে বন্দর।
বন্দর কর্মকর্তারা জানান, সরকারি ছুটি শুরুর দিন গত ৫ জুন বন্দরে কন্টেনার ডেলিভারি হয়েছিল ৪ হাজার ১২২ টিইইউএস। এদিন জাহাজে রফতানি কন্টেনার তোলা হয়েছিল ৯ হাজার ৭২০ টিইইউএস আর আমদানি পণ্যবোঝাই ৫ হাজার ৪১১ টিইইউএস কন্টেনার জাহাজ থেকে নামানো হয়েছিল ।
কিন্তু ঈদুল আজহার আগের দিন ৬ জুন থেকে পরিস্থিতি পাল্টাতে থাকে। এদিন মাত্র ৫২১ টিইইউএস কন্টেনার ডেলিভারি হয়। ঈদের দিন ৭ জুন বিকেল ৪টা থেকে অপারেশনাল কার্যক্রম শুরু হলেও বন্দর থেকে কন্টেনার নেয়ার জন্য কেউই আসেননি। জাহাজ থেকে নামানো হয় ৩০৮ টিইইউএস কন্টেনার।
ঈদের পরদিন ৮ জুনও কেউ কন্টেনার নিতে বন্দরমুখো হননি। ৯ জুন মাত্র ৪৩১ টিইইউএস, ১০ জুন ১ হাজার ৩৮১ টিইইউএস, ১১ জুন ১ হাজার ৭৮১ টিইইউএস কন্টেনার ডেলিভারি হয়।
বন্দরের কর্মকর্তারা বিদ্যমান পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।