আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে রেলের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হচ্ছে আজ শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে। এবার ঈদে ট্রেনের টিকেট পেতে যাত্রীদের ভোগান্তি দূর করতেই অনলাইনে শতভাগ টিকিট বিক্রির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
আজ থেকে মোট ৫দিন যাত্রীদের মাঝে ঈদের অগ্রিম টিকিট বিক্রির সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। তবে এবার ঈদের অগ্রিম টিকিটের জন্য যাত্রীদের রাত জেগে স্টেশনে অবস্থান নিতে হবে না। এবার ঈদের শতভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রির ঘোষণা দিয়েছেন রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন। গত ২১ মার্চ রেল ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান রেলমন্ত্রী। ঈদের শতভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রির উদ্যোগ নেয়ায় যাত্রীরা নিজ নিজ বাসা–বাড়িতে বসে অনলাইনে প্রয়োজন মত টিকিট কাটতে পারবেন।
একই সাথে ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের সুবিধার্থে শোভন শ্রেণীর (নন এসি) মোট আসনের ২৫ শতাংশ আসনবিহীন টিকিট (স্ট্যান্ডিং) যাত্রার দিন কাউন্টার থেকে বিক্রি করা হবে।
এবার পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন রুটে মোট সাতটি বিশেষ ট্রেন চলাচল করবে। গতবার এ সংখ্যা ছিল পাঁচ। এসব ট্রেনে আসন রয়েছে ২ হাজার ৪০০টি। এ ছাড়া দাঁড়িয়েও যাওয়ার সুযোগ থাকে। তবে ছাদে করে যাত্রার সুযোগ নেই।
পূর্বাঞ্চলের সাতটি বিশেষ ট্রেনের মধ্যে একটি ট্রেন চলবে চাঁদপুর–সিলেট রুটে। আরেকটি চলবে চট্টগ্রাম–ময়মনসিংহ রুটে। এই দুটি রুটে আগে কখনো ঈদের সময় বিশেষ ট্রেন চলাচল করেনি।
আজ ৭ এপ্রিল বিক্রি হবে ১৭ এপ্রিলের টিকিট, আগামীকাল ৮ এপ্রিল বিক্রি হবে ১৮ এপ্রিলের টিকিট, ৯ এপ্রিল বিক্রি হবে ১৯ এপ্রিলের টিকিট, ১০ এপ্রিল বিক্রি হবে ২০ এপ্রিলের এবং ১১ এপ্রিল বিক্রি হবে ২১ এপ্রিলের টিকিট।
ঈদে অগ্রিম টিকিট বিক্রির প্রস্তুতির ব্যাপারে চট্টগ্রাম রেল স্টেশনের ম্যানেজার রতন কুমার চৌধুরী বলেন, ৭ এপ্রিল থেকে ৫দিন ঈদের অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হবে। এবার যেহেতু শতভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রি করা হবে এর ফলে স্টেশনে যাত্রীদের রাত জেগে অপেক্ষা করতে হবে না এবং স্টেশনে আগের মতো ভিড় হবে না।
চট্টগ্রাম থেকে ১০টি আন্তঃনগর, মেইল এবং স্পেশাল ট্রেনে অতিরিক্ত বগি মিলে প্রতিদিন প্রায় ১২ হাজারের মতো টিকিট বিক্রি হবে। শুধুমাত্র ১০টি আন্তঃনগর ট্রেনের সাড়ে ৭ হাজার টিকিট বিক্রি হবে অনলাইনে। অন্যান্য মেইল ট্রেন ও স্পেশাল ট্রেনের টিকিট কাউন্টারে বিক্রি হবে। এছাড়াও ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের সুবিধার্থে শোভন শ্রেণীর (নন এসি) মোট আসনের ২৫ শতাংশ আসনবিহীন টিকিট (স্ট্যান্ডিং) যাত্রার দিন কাউন্টার থেকে বিক্রি করা হবে।
প্রতি বছর ট্রেনের ঈদের অগ্রিম টিকিটের জন্য শত শত যাত্রী আগের দিন রাত থেকে–আবার ঈদের এক–দুইদিন আগের টিকিটের জন্য আগের দিন সন্ধ্যা থেকে স্টেশনে গিয়ে অবস্থান নিতেন। এবার সেই বিড়ম্বনা এবং দুর্ভোগ থেকে বাঁচবেন যাত্রীরা। তবে অনলাইনে যাত্রীরা ঠিক মতো টিকিট কাটতে পারবেন কিনা অনেকেই এখন থেকে আশংকা প্রকাশ করেছেন।
ঈদের ফিরতি টিকিট বিক্রি শুরু ১৫ এপ্রিল থেকে : রেলপথ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ঈদের ফিরতি টিকিট বিক্রি করা হবে ১৫ এপ্রিল থেকে। ১৫ এপ্রিল বিক্রি হবে ২৫ এপ্রিলের, ১৬ এপ্রিল বিক্রি হবে ২৬ এপ্রিলের, ১৭ এপ্রিল বিক্রি হবে ২৭ এপ্রিলের, ১৮ এপ্রিল বিক্রি হবে ২৮ এপ্রিলের, ১৯ এপ্রিল বিক্রি হবে ২৯ এপ্রিলের এবং ২০ এপ্রিল বিক্রি হবে ৩০ এপ্রিলের ফিরতি টিকিট।
যেভাবে পাওয়া যাবে : মন্ত্রণালয় জানায়, আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতরের আন্তঃনগর ট্রেনের অগ্রিম টিকিট (১৭–৩০ এপ্রিল পর্যন্ত) শতভাগ শুধুমাত্র অনলাইন/মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে ক্রয় করা যাবে। টিকিট ক্রয়ের জন্য রেলওয়ের টিকিটিং ওয়েব পোর্টাল, “জধরষ ঝযবনধ” অ্যাপ বা যে কোনও মোবাইল হতে এসএমএস করার মাধ্যমে ঘওউ/ পাসপোর্ট/ জন্মনিবন্ধন যাচাইপূর্বক রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
ঈদে বিশেষ ট্রেন : আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঘরমুখো যাত্রীদের ভ্রমণের সুবিধার্থে চট্টগ্রাম তেকে ৩ জোড়া ঈদ স্পেশাল ট্রেন চলবে। ট্রেন গুলো হলো– চট্টগ্রাম–চাঁদপুর–চট্টগ্রাম রুটে চাঁদপুর ঈদ স্পেশাল–১ ও ৩, চাঁদপুর–চট্টগ্রাম–চাঁদপুর রুটে চাঁদপুর ঈদ স্পেশাল–২ ও ৪, চট্টগ্রাম–ময়মনসিংহ–চট্টগ্রাম রুটে ময়মনসিংহ ঈদ স্পেশাল।
এছাড়াও ঢাকা–দেওয়ানগঞ্জ–ঢাকা রুটে দেওয়ানগঞ্জ ঈদ স্পেশাল–৬, সিলেট–চাঁদপুর–সিলেট রুটে ঈদ স্পেশাল–১০, ঢাকা–চিলাহাটি–ঢাকা রুটে ঈদ স্পেশাল ১৪ ও ১৫, পঞ্চগড় রুটে ঈদ স্পেশাল–১ ও ২।
অন্যদিকে শুধু শোলাকিয়ায় ঈদের নামাজের যাত্রীদের জন্যে ভৈরববাজার–কিশোরগঞ্জ–ভৈরববাজার রুটে শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল–১১ ও শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল–১২ এবং ময়মনসিংহ–কিশোরগঞ্জ–ময়মনসিংহ রুটে শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল–১৩ ও ১৪ চলবে।