ঈদে ছোটাছুটি না করে যে যেখানে আছেন সেখানেই ঈদ উদযাপন করার অনুরোধ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঈদে করোনাভাইরাসের বিস্তার যাতে আর না ঘটে সেদিকে নজর রাখতে তিনি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন সংস্থার অবকাঠামো ও শতাধিক জলযান উদ্বোধনকালে এ অনুরোধ করেন প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা বলেন, করোনাকালীন আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে বেঁচে থাকলে তো দেখা হবে। কিন্তু জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঈদ উপলক্ষে সবাই ছোটাছুটি না করি। যে যেখানে আছি সেখানেই যেন ঈদটা উদযাপন করি। সংক্রমণ ঠেকাতে যাতায়াত সীমিত রাখার সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, এই করোনাটা যাতে সারা বাংলাদেশে যাতে আরো ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য সবার কাছে আমার অনুরোধ- স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে চলুন, আর এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় একেবারে অতি প্রয়োজন না হলে আপনারা যাতায়াত করবেন না। ভবিষ্যতে দেশে খাদ্য সংকট পরিস্থিতি এড়াতে কৃষির আবাদ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদী না থাকে।
এসময় প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সে বিআইডব্লিউটিএর ২০টি কাটার সাকশন ড্রেজার, ৮৩টি ড্রেজার সহায়ক জলযান, প্রশিক্ষণ জাহাজ ‘টিএস ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী (দাদা ভাই)’, বিশেষ পরিদর্শন জাহাজ ‘পরিদর্শী’, নবনির্মিত নারায়ণগঞ্জ ড্রেজার বেজ, বিআইডব্লিউটিসির দু’টি উপকূলীয় যাত্রীবাহী জাহাজ ‘এমভি তাজউদ্দীন আহমদ’ ও ‘এমভি আইভি রহমান’, পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের ‘পায়রা আবাসন’ পুনর্বাসন কেন্দ্র এলাকায় ভূমি অধিগ্রহণের ফলে ক্ষত্রিগ্রস্তদের মধ্যে ৫শ পাকা বাড়ি বিতরণ এবং পাবনা, বরিশাল, রংপুর ও সিলেট মেরিন একাডেমি উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্স পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের ‘পায়রা আবাসন’ পুনর্বাসন কেন্দ্রের উপকারভোগীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। ভার্চুয়াল এ অনুষ্ঠানে সচিবালয়ের নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে সভাপতিত্ব করেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। গণভবন প্রান্ত থেকে সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী।
এদিকে নিয়ম মেনে নৌযান পরিচালনা করতে সবাইকে নির্দেশ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, সবচেয়ে দুঃখজনক আমাদের যারা এ নৌযানগুলো চালান বা পরিচালনা করেন বা যারা ব্যবসা করেন; যাত্রীদের সুরক্ষা যেমন তাদের দেখতে হবে আবার যাত্রীদেরও নিজেদের সুরক্ষার কথা চিন্তা করতে হবে। নৌযানে যাতায়াতকারী ও পরিচালনাকারী সবাইকে সতর্ক থাকার জন্য আমি অনুরোধ জানাচ্ছি। যে একটা নৌযানে কতজন মানুষ উঠতে পারে, চড়তে পারে, ঠেলাঠেলি করে সব একসঙ্গে উঠতে গিয়ে তারপর একটা অ্যাকসিডেন্ট হবে আর নিজেদের জীবনটা চলে যাবে। এ ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে, সজাগ থাকতে হবে।
সব নৌযানের রেজিস্ট্রেশন নিশ্চিত করা প্রসঙ্গে সরকার প্রধান বলেন, আমাদের যেসব নৌযান চলাচল করে আমি মনে করি প্রত্যেকটারই রেজিস্ট্রেশনের সিস্টেম থাকা উচিত। রেজিস্ট্রেশন না থাকার কারণে অনেক সময় কে কার কি, ক্ষতিপূরণের কি ব্যবস্থা সেগুলো করা যায় না।