ঈদে চাঙা হবে পর্যটন

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি | সোমবার , ২৫ এপ্রিল, ২০২২ at ৬:২৪ পূর্বাহ্ণ

এবার ঈদের ছুটির টানা বন্ধে পাহাড়ে রেকর্ড সংখ্যক পর্যটক আগমনের সম্ভাবনা দেখছেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা। গত দুইবছর ঈদে করোনার কারণে পর্যটকশূন্য থাকায় বড় অংকের লোকসান গুনেছেন ব্যবসায়ীরা। এবার ঈদের ছুটিতে পাহাড়ে পর্যটক সমাগম বাড়লে করোনাকালীন ক্ষতি কাটিয়ে উঠা সম্ভব বলে মনে করছেন তারা। খাগড়াছড়ি আবাসিক হোটেল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও হোটেল গাইড়িংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অনন্ত বিকাশ ত্রিপুরা বলেন, খাগড়াছড়িতে গত দুই বছর করোনার কারণে তেমন পর্যটক আগমন হয়নি। তবে এবার অবস্থার বদল হয়েছে। এবার পর্যটক সমাগম বাড়বে। এরই মধ্যে জেলার ৩০টি আবাসিক হোটেলে ঈদের বুকিং শুরু হয়ে গেছে।

খাগড়াছড়ি জেলা শহরের অদূরে রহস্যময় আলুটিলা সুড়ঙ্গ, রিছাং ঝরনা এবং জেলা পরিষদের ঝুলন্ত ব্রিজে ঈদ মৌসুমে পর্যটকদের ভিড় বাড়তে পারে। আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক চন্দ্র কিরণ ত্রিপুরা বলেন, আলুটিলা জেলার প্রধান পর্যটন কেন্দ্র। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আলুটিলায় ঝুলন্ত ব্রিজ, নন্দন পার্ক গড়ে তোলা হয়েছে। ঈদ মৌসুমে প্রতিদিন অন্তত ২ হাজার পর্যটক আলুটিলা ভ্রমণ করবেন বলে আশা করছেন তিনি।

খাগড়াছড়ি বেসরকারি আবাসিক হোটেল গাইডিংয়ের তত্ত্বাবধায়ক প্রান্ত ত্রিপুরা জানান, ঈদকে সামনে রেখে আমাদের হোটেল গোছানোর প্রস্তুতি চলছে। ঈদে আগত পর্যটকদের জন্য রেস্টুরেন্ট সংস্কার করা হচ্ছে। এর মধ্যে অতিথি বরণে আমরা সবধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। হোটেলের কক্ষগুলোতে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা রাখা হয়েছে। সাগর আহমেদ নামের একটি হোটেলের তত্ত্বাবধায়ক জানান, ঈদকে কেন্দ্র করে আমাদের হোটেলের বুকিং শুরু হয়েছে। গত দুই বছর ঈদ মৌসুমে করোনার কারণে লোকসান হয়েছে। তবে এবার ভালো ব্যবসা করতে পারব বলে আশা। ইতিমধ্যে হোটেলের ১০ শতাংশ কক্ষ আগাম বুকিং হয়েছে। খাগড়াছড়িতে বেড়াতে আসা পর্যটকদের পছন্দের শীর্ষে থাকে স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী খাবার। রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ীরা তা মাথায় রেখে হোটেল প্রস্তুত করছেন। খাগড়াছড়ির একটি জনপ্রিয় খাবার ঘরের তত্ত্বাবধায়ক এচিং মারমা জানান, ঈদের বন্ধে প্রতিদিন অন্তত ১ হাজারের বেশি মানুষ আমাদের হোটেল খেতে আসেন। পাহাড়ের ঐতিহ্য ও স্বাদ অক্ষুণ্ন রেখে আমরা খাবার পরিবেশন করি। তবে ঈদের সময় বাড়তি চাপ সামাল দিতে আমরা রেস্টুরেন্ট সংস্কার করছি।

খাগড়াছড়ি সাজেক সড়কে পর্যটকবাহী পরিবহনের চালক প্রদীপ ত্রিপুরা ও মো. এরশাদ জানান, রমজানের কারণে একমাস কোনো পর্যটক ছিল না। তবে ঈদের ছুটিতে টানা বন্ধে পর্যটক সমাগম বাড়তে পারে। পর্যটক সমাগম বৃদ্ধি পেলে আমাদের গাড়ির বুকিংও বাড়বে।

খাগড়াছড়ির পরিবহন সংস্থা জিপ সমিতির লাইনম্যান অরুণ কান্তি দে জানান, ঈদের পরদিন থেকে পর্যটক আসা শুরু হয়। এসময় পর্যটকবাহী জিপ বা পিকআপের চাহিদা থাকে বেশি। করোনাকালে আমাদের চালকরা বেকার ছিল। তবে করোনার প্রকোপ কমার পর থেকে পর্যটন ব্যবসা চাঙা হয়েছে। এবার ঈদ মৌসুমে প্রচুর পর্যটক সমাগম হবে। ঈদের বন্ধে প্রতিদিন খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক পর্যন্ত অন্তত ২শ গাড়ি যাতায়াত করবে। পর্যটন সংশ্লিষ্ট পরিবহন খাত আবারো চাঙা হবে।
খাগড়াছড়ি পর্যটন মোটেলের ইউনিট ব্যবস্থাপক এ কে এম রফিকুল ইসলাম বলেন, করোনাকালে খাগড়াছড়ির পর্যটন খাতে অন্তত ২শ কোটির টাকার ক্ষতি হয়েছে। তবে এবার ঈদ মৌসুমে পর্যটক সমাগম বাড়লে করোনার ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নেয়া সম্ভব হবে। ঈদকে সামনে রেখে হোটেল ব্যবসায়ীরা প্রস্ততি নিচ্ছেন। পর্যটকদের সেবা দেওয়ার জন্য আমরা প্রস্তুত।

পূর্ববর্তী নিবন্ধডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ
পরবর্তী নিবন্ধম্যালেরিয়া আক্রান্তের ৯৪ শতাংশই তিন পার্বত্য জেলার