ইসির শক্ত অবস্থান দেখতে চান সাংবাদিকরা

| মঙ্গলবার , ৭ অক্টোবর, ২০২৫ at ১০:৫০ পূর্বাহ্ণ

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করতে প্রার্থীদের সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত, সামাজিক যোগাযোগ ও সাইবার মাধ্যমে অপতথ্য ছড়ানোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনকে ‘শক্ত অবস্থান’ নেওয়ার সুপারিশ এসেছে সাংবাদিকদের কাছ থেকে। নির্বাচনের আগে ভোটার ও অংশীজনদের নিরাপত্তা, রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত প্রশাসন নিশ্চিত এবং ভোটে শক্তি ও সম্পদের অপপ্রয়োগ বন্ধ করতে তারা কমিশনের কার্যকর পদক্ষেপ প্রত্যাশা করেছেন। আর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে প্রার্থীদের হলফনামার তথ্য দ্রুততম সময়ে প্রকাশ করতে কমিশনকে তাগিদ দিয়েছেন সাংবাদিকরা। গতকাল সোমবার বিকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সংলাপে এসব সুপারিশ তুলে ধরেন প্রিন্ট ও অনলাইন সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিকরা। খবর বিডিনিউজের।

সংলাপের শুরুতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন জাতির ‘ভবিষ্যৎ নির্ধারণ’ করবে বলে দাবি করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। নির্বাচন ‘ভালো না হওয়ার’ কোনো সুযোগ নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি। সিইসি বলেন, এই নির্বাচনটা কিন্তু দেশের ভবিষ্যত নির্ধারণ করে দেবে। নির্বাচন ভালো না হওয়ার কোনো সুযোগ জাতি হিসেবে আমাদের কাছে নেই। সুতরাং, সবাই মিলে নির্বাচনটা করতে হবে। এটা একটা জাতীয় নির্বাচন এবং জাতীয়ভাবেই আমরা করতে চাই। নির্বাচন কমিশনের একার পক্ষে এককভাবে সামাল দেওয়া সম্ভব হবে না। আপনারা মানুষের মতামত তৈরি করার কারিগর। আমরা সেই সুযোগটা নিতে চাই। এই নির্বাচন অবাধনিরপেক্ষ করতে একসঙ্গে এগিয়ে যেতে চাই।

ফেব্রুয়ারি প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। সে হিসাবে তফসিল হতে পারে ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে। তার আগে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপের উদ্যোগ নিয়েছে কমিশন।

সাংবাদিকদের যত সুপারিশ :

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক কালের কন্ঠে সম্পাদক হাসান হাফিজ বলেন, প্রথমে আপনাদের কাছে আমার প্রত্যাশা থাকবে, আপনারা মেরুদণ্ডসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব হিসেবে জাতির কাছেআমরা চাইবো আপনারা সেই রকম দৃঢ়তা, দেশপ্রেম ও অঙ্গীকারের পরিচয় দেবেন। নির্বাচন ‘গ্রহণযোগ্য করতে’ কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগের ব্যাপারে কমিশনের অবস্থান জাতির সামনে ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে স্পষ্ট করার আহ্বান জানান তিনি। সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতে নজরদারি চালাতে রাজনৈতিক নেতাদের বাদ দিয়ে সামাজিক ও পেশাজীবী নেতা, তরুণদের নিয়ে প্রতিটি নির্বাচনি এলাকায় ‘নজরদারি কমিটি’ গঠনের সুপারিশ করেন হাসান হাফিজ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে অতথ্য ছড়ানোর অভিযোগ তুলে তিনি কমিশনের পক্ষ থেকে সাইবার নজরদারি এবং এ জন্য সক্ষমতা বাড়ানোর সুপারিশ করেন। কালের কণ্ঠ সম্পাদক পোস্টাল ব্যালট প্রক্রিয়া ‘সহজ করে’ প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা এবং ঢাকার বাইরেও অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপ আয়োজন করার সুপারিশ করেন। দৈনিক ইনকিলাবের সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দিন সাইবার অপরাধ ও মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিতে কমিশনকে তাগিদ দেন। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ‘অত্যন্ত নাজুক’ মন্তব্য করে দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক আব্দুল হাই সিকদার বলেন, এই পরিস্থিতিতে নির্বাচন আয়োজন অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।

প্রশাসন ও পুলিশে এখনও ‘ফ্যাসিস্টের দোসররা’ আছেন বলেও দাবি করেন তিনি। প্রার্থিতা ও ভোট কেনাবেচা বন্ধে কমিশনের ‘শক্ত অবস্থান’ প্রত্যাশা করেন দৈনিক প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরীফ। তিনি প্রার্থীদের হলফনামার সঙ্গে ট্যাঙ রিটার্ন জমা দেওয়া, তা যাচাইবাছাই নিশ্চিত করা ও নির্বাচনি ব্যয় যাচাইয়ের ব্যবস্থা করার সুপারিশ করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআকাশে রঙিন ফানুসের মেলা
পরবর্তী নিবন্ধযুবলীগের দুই নেতা গ্রেপ্তার