মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব,মানুষের জন্যই অপরাপর সব সৃষ্টি। মানুষের জন্যই ইহকাল-পরকাল,স্বর্গ-নরক। মানুষের জন্যই সমাজ,সভ্যতা,তাই মানুষের প্রয়োজন শান্তি,সমপ্রীতি। শান্তি ও সমপ্রীতি মানুষের বেঁচে থাকার আবশ্যকীয় উপাদান। কিন্তু ইদানিং কিছু মানুষ দেখাযায়, ধর্মীয় পোশাক পরে ধর্মের কথা বলে সৃষ্টি করছে অশান্তি, নৈরাজ্য, বিশৃঙ্খলা ধ্বংস করছে রাষ্ট্রীয় সম্পদ, রাষ্ট্রের সম্পদ মানে জগগণের সম্পদ যাকে বলা হয় হক্কুল ইবাদ বা মানুষের অধিকার, মানুষ হয়ে মানুষের অধিকার খর্ব করাকে স্বয়ং আল্লাহ ক্ষমা করেন না।
ইসলাম কখনো নৈরাজ্য সৃষ্টি, সহিংসতা,অশান্তিসৃষ্টি ও সন্ত্রাসকে প্রশ্রয় দেয় না। তাইতো দেখা যায় মুসলমানের প্রথম সম্ভাষণটি ‘সালাম’ তথা শান্তি। মানুষ ও সমাজের এই শান্তি যেন বিঘ্নিত না হয়, সে সম্বন্ধে আল্লাহ বলেন পৃথিবীতে শান্তি স্থাপনের পর তোমরা তাতে অশান্তি বা বিপর্যয় ঘটাবে না (সুরা আরাফ :৫৬)।
মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে আরো বলেন, পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করতে প্রয়াসী হইও না। নিশ্চয়ই আল্লাহ বিপর্যয় সৃষ্টিকারীকে পছন্দ করে না(সুরা:কাসাস.৭৭), ইসলাম ধর্ম মতে কোনো মুসলিম অনন্তকাল জাহান্নামে থাকবে না,কৃতকর্মের শাস্তিভোগের পর জান্নাতে যাবে,কিন্তু হত্যাজনিত অপরাধের কারণে অনন্তকাল জাহান্নামে থাকার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে পবিত্র কুরআনে-যে ব্যক্তি কোনো মুমিনকে ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করবে,তার শাস্তি জাহান্নাম। সেখানে সে চিরকাল থাকবে।’ (সূরা : নিসা:৯৩) শুধু তা-ই নয়,একটি অন্যায় হত্যাকে ইসলামে বিশ্বমানবতাকে হত্যার সমতুল্য বলে ঘোষণা করেছেন। রাসূল করিম (সা.) ইরশাদ করেছেন, কোনো মুসলমানকে গালি দেওয়া গোনাহর কাজ আর তাকে হত্যা করা কুফরি। (সহী বুখারি), মানুষ সামাজিকজীব, সৃষ্টিগতভাবে মানুষের মধ্যে রয়েছে সামাজিকতার উপাদান, মানুষ তখনই অসামাজিক হয়ে ওঠে যখন ক্ষমতা প্রাপ্তির লোভে পড়ে, পার্থিব দুনিয়ার মোহগ্রস্ত হয়ে পড়ে, তখনই মানুষ সংঘাত, সহিংসতা ও সন্ত্রাসী কর্মে লিপ্ত হয়ে পড়ে। ইসলামে সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি, বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির কথা উল্লেখ করেছেন। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে,মানুষের কৃতকর্মের দরুণ জলে-স্থলে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়ে, যার ফলে তাদের কোন কোন কৃতকর্মের শাস্তি তিনি আস্বাদন করান, যাতে তারা ফিরে আসে’ (সূরা রূম:৪১)। ইসলাম মানুষকে অশান্তি, নৈরাজ্যসৃষ্টি, সহিংসতা ও সন্ত্রাস নয় ইসলাম মানুষকে সৌহার্দ্য শান্তি প্রতিষ্ঠা, মানবকল্যাণ ও মানবতার জন্য পরিপূর্ণ মানুষ হওয়ার শিক্ষা দেয়। তাই আমাদের উচিত ক্ষমতার লোভে, পার্থিব দুনিয়ার অতিমোহত্যাগ করে মানুষের মাঝে সৌহার্দ্য শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করা।