বাতাসে বারুদের গন্ধ। শিশুদের চিৎকারে ভারী অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার আকাশ–বাতাস। গাজা ভূখণ্ডের উত্তরাঞ্চলের প্রায় ১১ লাখ বাসিন্দাকে অবিলম্বে সরে যেতে ২৪ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। আতঙ্কে অনেক সে পথ ধরলেও অন্যরা ইসরায়েলের আদেশ অমান্য করবেন বলে জানিয়েছেন। দক্ষিণে সরে যাওয়ার সময় ফিলিস্তিনি একটি গাড়িবহরে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে ৭০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ারও খবর পাওয়া গেছে। এদের একটি বড় অংশই শিশু ও নারী। ঘটনাস্থলের ভিডিওতে উঠে এসেছে হামলার ভয়াবহতা। বিবিসি জানিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে সালাহ আল–দিন সড়কে। যে দুটি সড়ক দিয়ে ফিলিস্তিনিদের উত্তর গাজা থেকে দক্ষিণ গাজায় সরে যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল, এটি তার একটি। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গতকাল শনিবার নিয়মিত ব্রিফিংয়ে জানিয়েছে, গত ৮ দিনের ইসরায়েলি হামলায় ৭২৪ জন শিশুসহ এখন পর্যন্ত ২ হাজার ২১৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৮ হাজার ৭১৪ জন। শুধুমাত্র গত ২৪ ঘণ্টায় বিমান হামলায় ৩২৪ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। এছাড়া একদিনেই আহত হয়েছেন ১ হাজার মানুষ।
এরমধ্যে শুরু হয়েছে প্রথম পর্যায়ের স্থল অভিযান। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু হুমকি দিয়ে বলেছেন, কয়েকদিন ধরে গাজায় ইসরায়েলের ভারি বোমাবর্ষণ ছিল ‘কেবল শুরু’। এমন আগ্রাসী পদক্ষেপে চরম অস্তিত্ব সংকটে গাজার ফিলিস্তিনিরা। বোমার আঘাতে কখনও ভেঙে পড়ছে বাড়ি। যে যার মতো দক্ষিণাঞ্চলের দিকে ছুটছে। কিন্তু গুরুতর আহত ফিলিস্তিনিদের বিষয়ে সতর্ক করেছে স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। তাদের ভাষ্যমতে, এসব সংকটাপন্ন রোগীদের অন্য জায়গায় সরিয়ে নেওয়াটা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।
ইসরায়েলের ব্যাপক বিমান হামলায় গাজা ৪ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনি অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। পানীয়জল উৎপাদন প্ল্যান্ট গুলো বন্ধ হয়ে পড়ায় বেশিরভাগ গাজাবাসীই বিশুদ্ধ পানীয়জল পাচ্ছেন না। শেষ অবলম্বন হিসেবে তারা কৃষি কূপ থেকে লোনাপানি পান করছেন, যা পানিবাহিত রোগের বিস্তারে গুরুতর উদ্বেগ সৃষ্টি করছে।