নগরীর কোতোয়ালী আদালত এলাকায় আইনজীবীকে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনার প্রতিবাদে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত তারা নিউ মার্কেট মোড় এলাকায় অবস্থান করেন। এ সময় আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান তারা। এছাড়া ইস্কন নিষিদ্ধ এবং ফ্যাসিবাদের সমর্থকদের গ্রেফতার ও বিচারসহ তিন দফা কর্মসূচি ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম। এসময় শিক্ষার্থীরা রাষ্ট্রদোহের মামলায় গ্রেপ্তার চিন্ময় দাশের ফাঁসির দাবি জানান। সমাবেশে বক্তারা বলেন, ইস্কনের সন্ত্রাসীরা আদালত প্রাঙ্গণে ভাঙচুর তাণ্ডব চালিয়েছে। এরপর আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। আমরা এ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত সকলকে আইনের আওতায় এনে বিচার দাবি করছি। এছাড়া মসজিদ ভাঙচুর করেছে। আমরা চিন্ময়ের ফাঁসি চাই এবং ইস্কন নিষিদ্ধ চাই।
বক্তারা বলেন, ৫ আগস্টের পর থেকেই একটি মহল উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে আমাদের দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করার জন্য ক্রমাগত চক্রান্ত করেই যাচ্ছে। তাদের উদ্দেশ্যই হচ্ছে সামপ্রদায়িক দাঙ্গা সংঘটিত করে দেশকে অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে ঠেলে দিয়ে পতিত ফ্যাসিবাদকে সুযোগ করে দেওয়া। এসময় শিক্ষার্থীরা ‘ভারতের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘হাসিনার দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘বিজিপির দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্র সমাজ জেগেছে’, ‘উগ্রবাদের ঠিকানা এই বাংলায় হবে না’, ‘ইসকন সনাতন এক নয় এক নয়’, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’, ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’, ‘হিন্দু মুসলিম ভাই ভাই, ইসকনের রক্ষা নাই’, ‘সন্ত্রাসীদের ঠিকানা এই বাংলায় হবেনা’ নানা স্লোগান দিতে দেখা যায়।
এই ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্রীয় সহ সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, ওরা আমাদের সহযোদ্ধাকে শহীদ করেছে, আমাদের সবারই হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। কিন্তু দেশের এই পরিস্থিতিতে আমাদের সবাইকে ধৈর্য ধরতে হবে। কারো পাতানো ফাঁদে পা দেওয়া যাবে না। কোনোভাবে তাদের এই ষড়যন্ত্রকে সফল হওয়ার সুযোগ দেওয়া যাবে না। ঐক্যের বিকল্প নেই।
রাফি বলেন, চট্টগ্রামের অ্যাডভোকেট সাইফুলের হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে, বিচার নিশ্চিত করতে হবে। যে সংগঠন উগ্রবাদী এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে সে সংগঠন কখনোই দেশের মানুষের মঙ্গল বয়ে আনে না। এদের বিরুদ্ধে দ্রুত দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে হবে এবং শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের স্বাধীনতা ছিনিয়ে নেবার পায়তারা চলছে। সজাগ থাকুন, শান্ত থাকুন, ধৈর্য ধরুন।