হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুতে সংবিধান অনুযায়ী ইরানি অন্তর্র্বতীকালীন প্রেসিডেন্ট হবেন দেশটির প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মোখবার। ইরানের অন্তর্র্বতী প্রেসিডেন্ট পদে মোখবারের নিয়োগ নিশ্চিত করেছেন সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি।
ইব্রাহিম রাইসির উত্তরসূরি বেছে নিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ইরানের হাতে সর্বোচ্চ ৫০ দিন আছে। ইরানের সরকারি ইরনা বার্তা সংস্থায় প্রকাশিত এক বিবৃতিতে খামেনি বলেছেন, আমি ৫ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করছি। ইরানের জনগণের প্রতিও আমার সমবেদনা জানাচ্ছি। মোখবার নির্বাহী শাখা পরিচালনা করবেন এবং আইনসভা ও বিচারবিভাগীয় প্রধানদের সঙ্গে মিলে সর্বোচ্চ ৫০ দিনের মধ্যে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন। ইসলামিক প্রজাতন্ত্র ইরানের সংবিধানের ১৩১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, দায়িত্বরত কোনো প্রেসিডেন্ট মারা গেলে ভাইস প্রেসিডেন্ট দায়িত্বগ্রহণ করবেন। ফলে নিয়ম অনুযায়ী ৬৮ বছর বয়সী মোখবারই অন্তর্র্বতী প্রেসিডেন্ট হওয়ার কথা। খবর বিডিনিউজের। দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় কোনো প্রেসিডেন্ট মারা গেলে ৫০ দিনের মধ্যে নতুন প্রেসিডেন্ট বেছে নিতে নির্বাচন আয়োজন করে থাকে ইরানের তিন সদস্যের একটি পরিষদ। সেখানে প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট মোখবার ছাড়াও রয়েছেন পার্লামেন্টের স্পিকার ও বিচার বিভাগের প্রধান।
ইব্রাহিম রাইসির মতই ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আলী খামেনির ঘনিষ্ঠ মোখবার জন্মগ্রহণ করেন ১৯৫৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর। ২০২১ সালে তিনি প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট হন। আর রাইসি সেসময় হন প্রেসিডেন্ট। গত বছরের অক্টোবরে রাশিয়ার মস্কোয় যে কজন ইরানি কর্মকর্তা সফর করেন, তাদের একজন ছিলেন মোখবার। সেসময় রুশ সেনাবাহিনীকে ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র ও আরও বেশি ড্রোন সরবরাহের ব্যাপারে তারা সম্মত হন। ইরানের বিপ্লবী গার্ডের দুই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের এক কর্মকর্তাও ওই সফরে ছিলেন। এর আগে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার বিনিয়োগ ফান্ড ‘সেতাদ’ এর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মোখবার। পারমাণবিক বা ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে ২০১০ সালে ইরানের অন্যান্য কর্মকর্তা ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মোখবারকেও নিষেধাজ্ঞা তালিকায় রেখেছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তবে দুই বছর পর ওই তালিকা থেকে তাকে বাদ দেওয়া হয়। ২০১৩ সালে সেতাদ ও ইরানের ৩৭টি কোম্পানিকে নিষেধাজ্ঞার তালিকায় যুক্ত করে মার্কিন ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট।