দলে কোনো দুষ্কৃতিকারীকে ঠাঁই দেওয়া হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না। এসময় তিনি দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক করে বলেন, কোনো নেতাকর্মী অনৈতিক কর্মকাণ্ড কিংবা অপকর্মে লিপ্ত হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক এবং আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। মনে রাখবেন জিয়া পরিবার কখনো অন্যায়ের সঙ্গে আপোস করেনি।
তিনি গতকাল বুধবার বিকেলে কাজীর দেউড়ি ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে ‘বৈষম্যহীন, নিরাপদ, মানবিক বাংলাদেশ গড়ায় জাতীয়তাবাদী যুবদলের ভূমিকা’ শীর্ষক চট্টগ্রাম বিভাগীয় যুবদলের মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
মোনায়েম মুন্না বলেন, আমরা কখনো দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাইনি। ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকার ও তাদের দোসররা কীভাবে পালিয়ে গেছে কিংবা পালাতে গিয়ে ধরা খেয়েছে, তা দেশবাসী দেখেছে। তিনি বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনা অনুযায়ী শক্তি কিংবা ভয় দেখিয়ে নয়, ইনসাফ এবং উদারতা দিয়ে মানুষের মন জয় করতে হবে। তাদের ভালোবাসা অর্জন করুন। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশনা মেনে বিএনপি ও যুবদলসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। মানুষের পাশে থেকে একটি বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গড়ে তুলতে কাজ করতে হবে। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আগামীতে বিএনপিকে জনগণের সমর্থন নিয়ে তাদের ভোটে বিজয়ী হয়ে ক্ষমতায় যেতে হবে। সেই লক্ষ্যে যুবদলের প্রতিটি নেতাকর্মী এখন থেকেই যার যার অবস্থান থেকে কাজ চালিয়ে যাবেন। এমন কোনো কাজ করবে না, যাতে করে জনগণের মনে কষ্ট লাগে।
তিনি বলেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান হাজার মাইল দূরে বসে বিএনপির নেতৃত্ব দিচ্ছেন, দল পরিচালনা করছেন। তিনি বিএনপি ও যুবদলকে একটি শক্তিশালী মাঠের সংগঠন হিসেবে গড়ে তুলতে চান। বিএনপির রাজনীতিতে যুবদল সবসময় বড় ভূমিকা পালন করে বলে দাবি করেন তিনি।
নগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ শাহেদের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সভাপতি মোশাররফ হোসেন দীপ্তি, নোয়াখালী জেলা যুবদলের সভাপতি মঞ্জুরুল আজিম সুমন, কঙবাজার জেলা যুবদলের সভাপতি সৈয়দ আহমেদ উজ্জ্বল, লক্ষ্মীপুর জেলা যুবদলের আহ্বায়ক রেজাউল করিম লিটন, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবদলের সভাপতি মো. শাহাজাহান, উত্তর জেলা যুবদলের সভাপতি হাসান মো. জসিম, খাগড়াছড়ি জেলা যুবদলের সভাপতি মাহবুবুল আলম সবুজ, ফেনী জেলা যুবদলের সভাপতি জাকির হোসেন জসিম, বান্দরবান জেলা যুবদলের সভাপতি মো. জহির উদ্দিন মাসুম, রাঙামাটি জেলা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. নুরুন্নবী, সাধারণ সম্পাদক আবু সাদাত মো. সায়েম, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মো. আজগর, উত্তর জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক এসএম মুরাদ চৌধুরী, নোয়াখালী জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন খান, কঙবাজার জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জিসান উদ্দিন, লক্ষ্মীপুর জেলা যুবদলের সদস্য সচিব আব্দুল হালিম হুমায়ূন, বান্দরবান জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মো. আরিফুল ইসলাম চৌধুরী, ফেনী জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খন্দকার। এছাড়াও সভায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় যুবদলের আওতাধীন মহানগর, জেলা, উপজেলা, থানা, পৌরসভার নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মোশাররফ হোসেন দীপ্তি বলেন, স্বৈরাচার পতন গণতন্ত্রকামী জনগণের দীর্ঘ আন্দোলনের বিজয়। নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকতে হবে। নিকট অতীতে স্বৈরাচার ছিল দৃশ্যমান নিপীড়নকারী আর এখন স্বৈরাচারের দোসররা অদৃশ্য শক্তিরূপে জনতার বিজয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করার ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। দৃশ্যমান প্রতিপক্ষের চাইতে অদৃশ্য শত্রুরা অনেক বেশি ভয়ঙ্কর। দৃশ্যমান প্রতিপক্ষকে আমরা চিনি, তাদের আক্রমণের ধরনও আমাদের পরিচিত কিন্তু অদৃশ্য শত্রুরা অচেনা আর সর্বত্র, তাদের অবস্থাান অন্ধকারে, আর তাদের কৌশলও চোরাগুপ্তা। এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় তৃণমূল নেতাকর্মীদের সার্বক্ষণিক সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন তারেক রহমান।
মুহাম্মদ শাহেদ বলেন, ছবি তোলার প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে, এই ছবি তোলা বন্ধ করতে হবে আমাদের। যাদেরকে আমরা অসময়ে পায়নি তারা আজ ছবি তোলার কাজে ব্যস্ত। যুবদল সবসময় মানুষের পাশে রয়েছে। যুবদলের কেউ কোনো অনৈতিক কাজ কিংবা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত থাকলে তা বরদাস্ত করা হবে না। তার বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সোপর্দ করা হবে। যেকোনো মূল্যে দেশে শান্তি–শৃঙ্খলা বজায় রাখতে যুবদল বদ্ধপরিকর। আমাদেরকে ঐক্যমতে আসতে হবে। যত সমস্যাই থাকুক এক সাথে বসে যুবদল সব সমস্যার সমাধান করবে।