চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ২১নং জামালখান ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমনের উদ্ভাবনী প্রতিভার প্রশংসা করতেই হয়। তিনি এমন একজন কাউন্সিলর যিনি রুটিন কাজের মধ্যে তাঁর দায়িত্ব পালন সীমাবদ্ধ রাখেন না। কাউন্সিলরের গৎ বাঁধা কাজ সমাধা করে তিনি তাঁর ভাবনার পরিধিকে আরো প্রসারিত করে নিত্য নতুন কাজের মধ্যে নিজেকে ব্যস্ত রাখার উপায় খুঁজে বেড়ান। যেমন জামালখান ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে তিনি ওই ওয়ার্ডের ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং নান্দনিকতার প্রতি ভাবিত হয়ে পড়েন। তাঁকে দেখলাম জামালখান রাস্তার উত্তর প্রান্তে ডা. খাস্তগীর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাচীরে সিরামিকের টাইলস বসিয়ে ভাষা আন্দোলনের শহীদদের মুরাল তৈরি করছেন। এরপর তিনি রাস্তার পূর্ব পাশে ফুটপাথে মানুষের বসার উপযোগী আসন এবং পশ্চিম পাশে ক্ষুদ্রাকার কানন তৈরি করে তাতেও বসার রমনীয় আসন তৈরি করে দিয়েছেন। চেরাগী পাহাড়ের পশ্চিম দিকে প্রসারিত রাস্তার উত্তর পাশে মনোরম সড়ক দ্বীপ তৈরি করে তাতে পুরোনো আমলের গ্যাস বাতির আদলে রঙিন বাতির সৃদৃশ্য মহড়া দিয়েছেন; জেএম সেন হলের সামনেও অনুরূপ প্রদর্শনী প্রত্যক্ষ করে আমি সবিম্ময়ে মুগ্ধ ও অভিভূত হয়ে যাই।
এর আগে কিংবা পরে এখন আর মনে নেই দৈনিক ‘প্রথম আলো’তে ‘জামালখানের জানালা’ শিরোনামে আমার একটি লেখা ছাপা হয়েছিলো। সে লেখায় আমি জামালখানের অতীত ঘেঁটে কিছু নাম উদ্ধার করে জামালখানের ঐতিহাসিকতা নিরুপণ করতে চেয়েছিলাম। যেমন ডা. অন্নদাচরণ খাস্তগীর, যাত্রামোহন সেন, মহাকবি নবীন চন্দ্র সেন, ড. আতাউল হাকিম, ব্যারিস্টার ড. ছানাউল্লাহ, অধ্যাপক নুরুল ইসলাম চৌধুরী, অ্যাডভোকেট বদিউল আলম ও তাঁর ভ্রাতুষ্পুত্র ভাষা সংগ্রামী অধ্যাপক চৌধুরী শাহাবুদ্দিন খালেদ, ভাষা সংগ্রামী অ্যাডভোকেট এ কে এম এমদাদুল ইসলাম এবং চেরাগী পাহাড়কে ডানে রেখে বাঁক নিয়ে মোমিন রোডে পড়লে মওলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী, খান বাহাদুর আহছান উল্লাহ (পুলিশ নয়, শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তা) এবং মাস্টারদার সহযোদ্ধা বিপ্লবী বিনোদ বিহারী চৌধুরী; এই লেখার কিছু পরে শৈবাল তাঁর সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড আরম্ভ করেন।
স্বাধীনতার পর মার্কিন তথ্য দপ্তর বা ‘ইউসিস’-ও চেরাগী পাহাড়ের সম্মুখেই ছিলো। সেখানে এখন এস আলমের অফিস ভবন তৈরি হচ্ছে, তার পাশেই হিন্দু ফাউন্ডেশনের ‘মৈত্রী ভবন’; ঐতিহাসিক হরিখোলার মাঠ ভরিয়ে মৈত্রী ভবন তৈরি করা হয়েছে। ১৯৫১ সালের ১৭, ১৮, ১৯ মার্চ হরিখোলার মাঠে সংস্কৃতি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিলো; ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর পূর্ববঙ্গে (তখনো পূর্ব পাকিস্তান হয়নি) কবরের আজাব নেমে এসেছিলো। বাংলা ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি তথা বাঙালির প্রাণপ্রবাহকে রুদ্ধ করে নেমেছিলো সাম্প্রদায়িক যবনিকা। হরিখোলা মাঠের চট্টগ্রাম সংস্কৃতি সম্মেলনই বাঙালিকে শ্বাস ফেলবার জন্য একটি বাতায়ন খুলে দিয়েছিলো। তার পরই তো হলো বায়ান্নোর ভাষা আন্দোলন, চুয়ান্ন সালের ঐতিহাসিক নির্বাচন, যা’ থেকে বাঙালি জাতীয়তাবাদের জাগরণ ঘটেছিলো।
প্রতিভার সামান্য লক্ষণ হলো, প্রতিভা কিছু না কিছু সৃষ্টি করে নিজেকে প্রকাশ করতে চায়। শৈবালও বসে থাকার পাত্র নন। ইতিমধ্যে তিনি ‘চট্টগৌরব’ শিরোনামে মহসিন কলেজের সীমানা প্রাচীরে চট্টগ্রামের ৩১জন ব্যক্তিত্বের প্রতিকৃতি স্থাপন করেন, তাঁদেরকে তিনি ‘চট্টগৌরব’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
এই ৩১ জনের মধ্যে রয়েছেন-দানবীর হাজী মুহম্মদ মহসিন, মুহম্মদ এনামুল হক, আবুল কাশেম খান, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ, মোজাফফর আহমদ, বিনোদ বিহারী চৌধুরী, কাজেম আলী মাস্টার, মাহবুব উল আলম, কল্পনা দত্ত, মাহবুব উল আলম চৌধুরী, শেখ রফিউদ্দিন আহমদ সিদ্দিকী, শরচ্চন্দ্র দাস, বুলবুল চৌধুরী, চাকমা রাণী কালীন্দী, লোকনাথ বল, বেনীমাধব বড়ুয়া, আবদুল হক দোভাষ, এম এ আজিজ, নবীনচন্দ্র সেন, অমলেন্দু বিশ্বাস, এম এ হান্নান, কবিয়াল রমেশ শীল, অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ, রজব আলী খান, মওলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী, নবীন চন্দ্র সেন, কবি আব্দুল হাকিম, আবদুল করিম, পূর্ণেন্দু দস্তিদার, অধ্যাপক আবুল ফজল ও যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত।
দেয়ালচিত্র সিরিজের নাম দেয়া হয়েছে-“চট্টগৌরব”। এটা কি “চট্টগৌরব”, না কি “চট্টলগৌরব”? চট্টগৌরব হলে একটি প্রাচীন কথা মনে আসে। প্রাচীনকালে চট্টগ্রামে “চট্ট ভট্ট” নামে একটি জাতি বাস করার কথা জানা যায়। সেখান থেকে “চট্ট” শব্দ নিয়ে তার সঙ্গে ‘গৌরব’ শব্দ জুড়ে দিয়ে হয়তো ‘চট্টগৌরব’ করা হয়েছে।
বিংশ শতাব্দীর প্রথম চার দশকে একজন জননায়ক, সাংবাদিক ও আইনজীবীকে চট্টগ্রামের মানুষ ভালোবেসে উপাধি দিয়েছিলো “চট্টলগৌরব”; তিনি মহিমচন্দ্র দাশ। যেমন ষাটের দশকে রাজনীতিক ও স্বাধীনতা সংগ্রামী এমএ আজিজকে জনসাধারণ ভালোবেস ‘চট্টল শার্দুল’ উপাধি দিয়েছিলো। মহিম চন্দ্র দাশ কলেজিয়েট স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে স্বদেশী আন্দোলন শুরু হলে চট্টগ্রাম তখনই স্বদেশী আন্দোলনে যোগ দেয়। চট্টগ্রাম থেকে সর্বপ্রথম কলেজিয়েট স্কুলের শিক্ষকতা ছেড়ে দিয়ে স্বদেশী আন্দোলনের পুরোভাগে এসে দাঁড়িয়েছিলেন মহিমচন্দ্র। স্বদেশী আন্দোলনে আরো অংশগ্রহণ করেছিলেন নলিনীকান্ত সেন ও যামিনীকান্ত সেন ভ্রাতৃদ্বয়। নলিনীকান্ত তখন একটি পত্রিকাও প্রকাশ করেছিলেন। তাঁকে মহাকবি নবীনচন্দ্র সেন ‘দেবশিশু’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন তাঁর আত্মজীবনীতে। যামিনীকান্ত সেনের আমন্ত্রণে রবীন্দ্রনাথ চট্টগ্রামে এসেছিলেন। তাঁদের পিতা কমলাকান্ত সেন ছিলেন আরো বৃহৎ ও মহৎ জীবনের অধিকারী। চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং আমৃত্যু উক্ত পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন তিনি। ১৯০৭ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর চট্টগ্রাম সফরে আসলে সদরঘাটে তাঁর থিয়েটারে (কমলাবাবুর থিয়েটার, পরবর্তীকালে প্রথমে বিশ্বম্ভর হল ও পরে লায়ন সিনেমা) ভাষণ দিয়েছিলেন এবং ঘাটফরহাদবেগস্থিত তাঁর বাসভবনে নৈশভোজ ও রাত্রিযাপন করেছিলেন। সুতরাং কমলাকান্ত সেন বা তাঁর পুত্র নলিনীকান্ত সেনের নাম স্থান পেলে ‘চট্টগৌরবে’র গৌরব বৃদ্ধি পেত।
কমলাকান্ত সেন ঊনিশ শতকে চট্টগ্রামের নবজাগরণের অগ্রদূত এবং চট্টগ্রামের সকলপ্রকার হিতকর কর্মের পুরোহিত ছিলেন। ১৮৭৫ সালে ডা. অন্নদা চরণ খাস্তগীরের পরামর্শে কমলাকান্ত সেনকে সভাপতি করে চিটাগাং এসোসিয়েশন গঠিত হয়েছিলো।
‘চট্টগৌরবে’র প্রথমেই নাম আসা উচিত ছিলো ডা. অন্নদাচরণ খাস্তগীরের, কারণ তিনিই উনিশ শতকের চট্টগ্রামের জাগরণের নব্য ঋষি।
মহিম বাবুর কথা শেষ হয়নি, তাঁর সময়ে তিনি চট্টগ্রামের প্রধান রাজনীতিবিদ, আইনজীবী ও সমাজ সংস্কারক ছিলেন। মহিমচন্দ্র দাশগুপ্ত চট্টগ্রাম জেলা কংগ্রেসের সভাপতি এবং দৈনিক জ্যোতি, দৈনিক পাঞ্চজন্য ও দৈনিক দেশপ্রিয়’র সম্পাদক ছিলেন। জেএম সেনগুপ্ত লন্ডন থেকে ব্যারিস্টারি পাস করে ফিরে আসলে মহিমচন্দ্র ১৯১৯ সালে তাঁর জন্য কংগ্রেসের সভাপতির পদ ছেড়ে দেন। একই সময়ে মহাত্ম গান্ধীও আফ্রিকা থেকে ভারতে এসে কংগ্রেসের হাল ধরেছিলেন।
১৯২১ সালের অসহযোগ আন্দোলন এবং দেশপ্রিয়র নেতৃত্বে বিওসি ও বুলক ব্রাদার্সের ধর্মঘট এবং চাঁদপুরে চা শ্রমিক ধর্মঘট ও রেলশ্রমিক ধর্মঘটে অসাধারণ সাহসী ভূমিকা পালন করেন মহিমচন্দ্র। তবে যে ঘটনায় ভারতজোড়া তাঁর নাম ছড়িয়ে পড়ে, সেটি হলো কুখ্যাত পুলিশ কর্মকর্তা আহসানউল্লাহ দারোগাকে নেজামত পল্টনে (বর্তমানে পলোগ্রাউন্ড) খেলা দেখার সময় বালক হরিপদ গুলি করে হত্যা করার পর ইংরেজ সরকার হিন্দুদের ওপর অকথ্য নির্যাতন এবং তাদের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিয়ে মুসলমানদেরকে দাঙ্গা করতে লেলিয়ে দিয়েছিলো। তখন বিপ্লবীরা জেলে অথবা পলাতক; তাঁরাও পুলিশি অত্যাচারের বিরুদ্ধে কোন প্রতিরোধ গড়ে তোলার সুযোগ পাননি। সে সময় হিন্দুদের ওপর যে অত্যাচার-নির্যাতনের যে ঘটনা ঘটেছিলো তা আর কখনো ঘটেনি। হিন্দু তরুণ-যুবকদের চলাফেরা নিয়ন্ত্রণের জন্য লাল, নীল, সাদা ইত্যাদি কার্ড চালু করা হয়েছিলো। হিন্দুদের ঘরের ভিতর ঢুকে ঢুকে অসহায় গৃহবধূ, তরুণী, যুবতীদের সম্ভ্রম হানি করে পৈশাচিক উল্লাসে মেতে উঠেছিলো পুলিশ ও দাঙ্গাকারিরা। একমাত্র মহিমচন্দ্রই তখন কলকাতা গিয়ে দেশপ্রিয়কে চট্টগ্রাম এনে বেসরকারী তদন্ত কমিশন গঠন করে তদন্তের ব্যবস্থা করেছিলেন। দেশপ্রিয় যতীন্দ্রমোহন নিরপেক্ষ তদন্ত করে কলকাতায় গিয়ে সংবাদ সম্মেলনে করে তাঁর রিপোর্ট প্রকাশ করেছিলেন। পরে তিনি লন্ডনেও গিয়েছিলেন হিন্দুদের ওপর নির্যাতন বন্ধ করা ও বিচারের জন্য। তো ‘চট্টগৌরবে’ চট্টলগৌরব মহিমচন্দ্রের স্থান না হওয়ায় চট্টগ্রামের অগৌরবই হলো না কি?
‘চট্টগৌরব’-এ এমএ আজিজ, এম এ হান্নান, পূর্ণেন্দু দস্তিদারের নাম আছে, কিন্তু জহুর আহমদ চৌধুরী, আবদুল্লাহ আল হারুনের নাম নেই? এম এ আজিজ ও জহুর আহমদ চৌধুরী এক বৃন্তে দু’টি ফুলের মতো ফুটেছিলেন আওয়ামী বৃক্ষে। আবদুল্লাহ আল হারুন ও এমএ হান্নান একটি জোড়। তাঁদের নাম জোড়ায় জোড়ায় উচ্চারিত হয়। এম এ আজিজ-জহুর আহমদ চৌধুরী একইসঙ্গে রাজনীতি আরম্ভ করেছিলেন, দু’জনকে চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা মানা হয়। একজন (এম এ আজিজ) জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক, আরেকজন (জহুর আহমদ চৌধুরী) শহর আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক। তাহলে একজন থাকতে পারলে আরেকজন কি দোষ করলেন বুঝতে পারলাম না।
জহুর আহমদ চৌধুরী আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা বা প্রথম কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও সাতচল্লিশে দেশভাগের পর চট্টগ্রামে শ্রম আন্দোলনের পিতা, ৫৪ থেকে ৭৩ পর্যন্ত তিনবার অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ী পার্লামেন্ট মেম্বার জহুর আহমদ চৌধুরী এবং ৬২ সালে চট্টগ্রামে ছাত্রলীগ পুনরুজ্জবীন ও পুনর্গঠনের মুখ্য চরিত্র, ১৯৬৬ থেকে ১৯৭২ মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক; ১৯৮৪ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত সভাপতি এমএ মান্নানের প্রতিকৃতি স্থান না পাওয়ায় একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী ও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমার খুব খারাপ লাগছে।
মহিউদ্দিন চৌধুরীর প্রতিকৃতিও ছিলো না। কিন্তু তিনি লোকান্তরিত হয়েছেন বেশিদিন হয়নি। ফলে তাঁর অনেক অনুসারী ও অনুরাগী শহরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। তাঁরা ‘চট্টগৌরবে’ মহিউদ্দিনের প্রতিকৃতি না দেখে নিজেরাই তাঁর একটা ছবি বড় করে বাঁধিয়ে নিয়ে ‘চট্টগৌরব’ লেখা যেখানে শেষ হয়েছে, তার অনতিদূরে ছবিটা টাঙিয়ে দিয়েছে।
জহুর আহমদ চৌধুরীর কাছে বঙ্গবন্ধু ৭১’র ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠিয়েছিলেন; রাজনীতিতে তাঁর স্থান কত উঁচুতে-সেটা বঙ্গবন্ধুই দেখিয়ে দিয়ে গেছেন। জহুর আহমদ চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধে অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকারের ইস্টার্ন লিবারেশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনিই প্রথম মুক্ত স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেন এবং ঢাকা রেডিও থেকে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর কেবিনেটে তিনটি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর জানাজা পড়ার জন্য বঙ্গবন্ধু চট্টগ্রাম এসেছিলেন এবং প্যারেড ময়দান থেকে তাঁর মরদেহ বহনকারী খাটিয়া কাঁধে নিয়ে কবরস্থানে এসেছিলেন এবং দাফন কাফন সব তদারক করেছিলেন।
শৈবাল ভালো কাজই করছেন। শুধু একটু সতর্কতা অবলম্বন করা দরকার। যে কাজটা তিনি হাতে নিয়েছেন, সেটি খুব স্পর্শকাতর কাজ, তার সঙ্গে জাতির, চট্টগ্রামবাসীর কোমল অনুভূতিও গভীর আবেগ জড়িয়ে আছে।
তবে তিনি প্রথম নন। চট্টগ্রামে এ ধরণের কাজ অনেক আগে জেলা প্রশাসক সৈয়দ আমিনুর রহমান শুরু করেছিলেন। তিনি অবশ্য ছবি নয়, চট্টগ্রামের মনীষীদের লেখা থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে ফলক স্থাপন করেছিলেন। সেগুলি পরে কেউ রক্ষা করার প্রয়োজন মনে করেননি।
লেখক : সাংবাদিক, মুক্তিযোদ্ধা, সংস্কৃতি সংগঠক