মানব জীবনে একটি ধ্রুব সত্য হলো প্রত্যেকটি মানুষ কোন না কোনোভাবে পরনির্ভরশীল। হোক সেটা অর্থ কিংবা বৈচিত্র্যময় কারণে। এই যেমন ধরুন, আপনার প্রতিবেশী আপনার উপর নির্ভরশীল। আবার এটাও সত্য যে পরস্পর পরস্পরের ওপর নির্ভরশীল আপনার নিকট আত্মীয় কিংবা বন্ধু বান্ধব। ঠিক তেমনি বলা চলে আপনার পরিচিত জনরাও আপনার উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে এবং বলতে দ্বিধা নেই, আপনিও তাদের উপর নির্ভরশীল। তবে তিক্ত অভিজ্ঞতা বলে, অনেকে উপকারীর উপকার স্বীকার করে না, বা তারা অকৃতজ্ঞ। এতে এক ধরণের কুৎসিত মন মানসিকতার পরিচয় মেলে, যা মোটেও শোভনীয় নয়, কাম্য নয়। আপনি আপনার উপকারের কথা অকপটে স্বীকার করুন। এতে আপনার সম্মান হ্রাস পাবে না বরং আপনার উঁচু মন মানসিকতা প্রকাশ পাবে। অনেকেই আছে উপকারীর উপকার করার অবদান সম্পর্কে ইতিবাচক সাড়া দিতে দ্বিধাবোধ করে। তারা মনে করে উপকারীর উপকার স্বীকার করলে বোধয় সম্মানহানী হবে এবং তার নিকট হয়তো ছোট হয়ে যাবে বা অনেকে উক্ত বিষয়টাকে খুব একটা পাত্তাই দিতে চান না। আসলে এটা নেহাত বোকামী এবং এটা ব্যক্তিত্বের এমনকি চরিত্রের ত্রুটি বলা যেতে পারে। কেউ যদি আপনার উপকার করে, সেটা যদি আপনি বাহবা না দেন এবং অবদানের সাফাই না গান তাহলে ঐ ব্যক্তি পরবর্তীতে আপনার কোনো বিপদে নিজেকে সপে দিতে চাইবেন না নিশ্চয়। কারণ, অনেক উপকার করতে এগিয়ে আসেন প্রতিদানের কথা না ভেবে। তারা শুধু আশা করে আপনার কৃতজ্ঞতা এবং আপনার ভালোবাসা তথা আন্তরিকতা। এতেই যে তারা তৃপ্ত হন। সুতরাং আপনি সর্বদা ইতিবাচক চিন্তা করুন, যে চিন্তা ভাবনা আপনাকে একজন পরিপূর্ণ ভালো মানুষ হিসেবে চিহ্নিত করতে সাহায্য করবে। আরেকটি কথা না বললেই নয়, আপনি যদি কারো উপকার করে থাকেন ঐ ব্যক্তি থেকে কোনো সহযোগিতা না পেলেও কোনো না কোনো ব্যক্তি আপনার দুঃসময়ে পাশে এসে দাঁড়াবে। হে এটাই দুনিয়ার চিরাচরিত নিয়ম এবং এটাই লক্ষ্য করা যায়। তাই সর্বদা নিজের ব্যস্ততার মাঝে একটু সচেতনার পরিচয় দিন যে, সম্ভব হলে আপনি কারো না কারো উপকার করবেন। যদি তাই হয়, দেখবেন আপনার শত্রুও আপনার ভক্ত হয়ে গেছেন। আর এতেই যে মানবজীবনের একটি সৌন্দর্যতা ফুটে উঠবে এবং সুশৃঙ্খল জাতি গঠনে ব্যাপক ভূমিকা রাখার আভাস মেলবে।