বাঁশখালী পৌরসভার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বর্তমানে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের আস্করিয়া সড়কে। প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়ক জুড়ে অসংখ্য র্গতের সৃষ্টি হওয়ায় সিএনজিচালিত টেঙি, রিকশা কিংবা সাধারণ যানবাহন চলাচল একেবারেই বন্ধ হয়ে গেছে। পায়ে হেঁটে চলাচল করতেও দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে।
এদিকে পৌরসভার আস্করিয়া সড়ক পার হয়ে সরল ইউনিয়নের কাহারঘোনা–মিনজীরিতলা সড়কেও একই দুরাবস্থা। ২০২২ সালের জুন মাসে ১.৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের কাহারঘোনা–মিনজীরিতলা সড়কের সংস্কারের জন্য ১ কোটি ৩১ লাখ টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদিত হয় এবং কাজটি পায় ফটিকছড়ির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স প্রিউরীলিপ এন্টারপ্রাইজ। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সড়কে কাজ করার লক্ষে ইট তুলে দুপাশে রাখলেও কিছু অংশে কংক্রিট করে। পরে কাজ বন্ধ রেখে সড়কটি ফেলে রাখে তারা। দীর্ঘ সময় কাজ শুরু না হওয়ায় সড়কটি এখন খনাখন্দে ভরে বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। প্রতিদিন শতাধিক টেঙি ও নানা ধরনের যানবাহন চলাচল করলেও সড়কে যানজট, গাড়ি বিকল হওয়া ও দুর্ঘটনা নিয়মিত ঘটছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের বাঁশখালী উপজেলা প্রকৌশলী কাজী ফাহাদ বিন মাহমুদ বলেন, এই সড়কের কাজ পুনরায় টেন্ডার প্রক্রিয়ায় শুরু হবে। তবে কবে নাগাদ তা শুরু হবে, সে বিষয়ে তিনি নির্দিষ্ট কিছু বলতে পারেননি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ঠিকাদারদের অনিয়ম ও উপজেলা প্রকৌশল দপ্তরের গাফিলতির কারণেই বাঁশখালীর অধিকাংশ সড়কের কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ হয় না।
এদিকে পৌরসভার আস্করিয়া সড়কের ব্যাপারে স্থানীয় ব্যবসায়ী আশেক এলাহী বলেন, এ সড়কের দুপাশে রয়েছে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সরকারি–বেসরকারি ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, বাসা–বাড়ি। এছাড়া প্রতিদিন এলাকার শতশত শিক্ষার্থী এই রাস্তা ব্যবহার করে বিদ্যালয়ে যাতায়াত করে। জরুরি সেবায় নিয়োজিত গাড়িগুলোকেও মারাত্মক সমস্যায় পড়তে হয়। পৌরসভার বাসিন্দা হয়ে আমরা কর দিচ্ছি, অথচ আমাদের কোনো সুযোগ–সুবিধা নেই, রাস্তাটা যেন অভিশপ্ত হয়ে গেছে। বর্তমানে সড়কের গর্ত ও গাড়ি চলাচল না করায় ঘর থেকে বের হওয়ার জন্য রীতিমতো যুদ্ধ করতে হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
স্থানীয়দের দাবি, কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি সড়কের পাশে পানি নিষ্কাশনের ড্রেন দখল করে রাখায় বর্ষাকালে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। তবে তাদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে চায় না। এতে প্রতিদিন ময়লা পানিতে পড়ে কাপড় নষ্ট হওয়া এবং দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার ঘটনাও ঘটছে।
বাঁশখালী পৌরসভার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এই সড়কের ৫.৫ কিলোমিটারের জন্য প্রায় ১৩ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। অধিকাংশ স্থানে কাজ হয়েছে। তবে আস্করিয়া এলাকায় ড্রেন নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় জায়গা না পাওয়ায় কাজ বন্ধ রয়েছে। বাড়ি–ঘর, দোকানপাট ও পাকা ওয়াল বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এলাকাবাসীকে বারবার অনুরোধ করেও জায়গা ছাড়ানো যাচ্ছে না। এছাড়া বর্ষাকাল থাকায় কাজ আপাতত বন্ধ রয়েছে।