ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ আবদুল খালেক (রহ.) এক অনুকরণীয় আদর্শ

অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ বদিউল আলম রিজভি | বুধবার , ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ at ৬:৪৯ পূর্বাহ্ণ

একটি সুন্দর ও আদর্শ সমাজ বিনির্মাণে নিজ মেধা মনন প্রতিভা ও যোগ্যতাকে কাজে লাগিয়ে যারা সমাজ দেশ ও জাতির কল্যাণে বহুমুখী অবদান রেখে গণ মানুষের আস্থা বিশ্বাস ও ভালোবাসা অর্জন করে ধন্য হয়েছেন তাঁরা স্মরণীয়। তাঁদের জীবনকর্ম বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অনুকরণীয় আদর্শ। ক্ষণজন্মা পুরুষ আলোকিত মানুষ সংবাদপত্র জগতের কিংবদন্তি, উত্তম গুণাবলীর অধিকারী, ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ আবদুল খালেক (রহ.) ছিলেন তাঁদের অন্যতম।

জন্ম: রাউজান উপজেলার সুলতান পুর গ্রামে ২০ শে জুলাই ১৮৯৬ খ্রিস্টাব্দে এক শুভক্ষণে এ শিশুর জন্ম হয়। পিতামাতা নাম রাখেন আবদুল খালেক, তাঁর পিতার নাম: মরহুম বেলায়েত আলী চৌধুরী, মাতার নাম: বেগম ফজিলাতুন নেছা।

শিক্ষা জীবন: তিনি স্কুলে ভর্তির পূর্বে মা ও ভাই বোনদের নিকট হতে পড়ালেখার সূচনা করেন। পাঁচ বছর বয়সে রাউজান স্টেশন প্রাইমারি স্কুলে ভর্তি হন। প্রথম শ্রেণির ছাত্র হলেও তিনি প্রখর স্মৃতিশক্তির অধিকারী ছিলেন। প্রাথমিক স্তরে ২য় ও ৫ম শ্রেণিতে তিনি মেধাবৃত্তি প্রাপ্ত হন। শিক্ষার প্রাথমিক স্তর সমাপ্ত করে মাধ্যমিক পর্যায়ে রাউজানের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা নিকেতন আর আর এসি ইনস্টিটিউশনে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হন, মাধ্যমিক পর্যায়েও তিনি ৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণিতে চট্টগ্রাম অঞ্চল হতে বঙ্গীয় বৃত্তি লাভ করে অসাধারণ মেধা ও কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন। একই প্রতিষ্ঠান হতে ১৯১২ খ্রি. এন্ট্রাস (এসএসসি) পরীক্ষায় চট্টগ্রাম জেলায় প্রথম বিভাগে ১ম স্থান অর্জনের গৌরব অর্জন করেন। ১৯৯২ খ্রি. ঐতিহ্যবাহী চট্টগ্রাম কলেজে আইএসসি শ্রেণিতে ভর্তি হন। ১৯১৪খ্রি. চট্টগ্রাম কলেজে তিনি স্কলারশীপ প্রাপ্ত হন এবং কৃতিত্বের সাথে আইএসসি উত্তীর্ণ হন। উচ্চশিক্ষা অর্জনের স্বপ্ন পূরণে চাচা জনাব আহমদ মিঞা চৌধুরীর অনুপ্রেরণা জ্ঞাতি ভাই ডা. এম এ হাশেমের সহযোগিতায় কলকাতায় শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি হন, দীর্ঘ পাঁচ বছর কঠোর পরিশ্রম ও সাধনার মাধ্যমে কৃতিত্বের সাথে ইলেকট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেন।

কর্মজীবন: কর্মই ধর্ম। ১৯২০ খ্রি. তিনি চট্টগ্রাম ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানীতে সহকারি তড়িৎ প্রকৌশলী হিসেবে চাকরি জীবনের সূচনা করেন। তাঁর অসাধারণ মেধা যোগ্যতা ও কর্মদক্ষতায় কর্তৃপক্ষ মুগ্ধ হয়ে চাকরির মেয়াদ ছয় বৎসর উন্নীত হলে তাঁকে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী পদে পদোন্নতি দেন। একাধারে ১২ বৎসর তিনি সুনাম ও সফলতার সাথে চাকরি করে ১৯৩২ সালে চাকরি জীবনের সমাপ্তি ঘটান।

রেঙ্গুন গমন ও সিরিকেটি (রহ.)’র সান্নিধ্য অর্জন: ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক নিজের স্বার্থ ও উন্নতির কথা চিন্তা করতেন না, সমাজের অবহেলিত বঞ্চিত ও দরিদ্র শ্রেণির মানুষের কল্যাণ ও তাঁদেরকে শিক্ষার আলোকে আলোকিত করা ছিল তাঁর ধ্যান জ্ঞান। তিনি তাঁর লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে লোভনীয় চাকরি ছেড়ে উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। দেশের মানুষের জন্য কিছু করার অদম্য স্পৃহা দৃঢ় মনোবল, কঠোর পরিশ্রম নিরলস সাধনা তাঁকে একজন দেশপ্রেমিক খাঁটি ঈমানদার সফল ও আদর্শ মানুষে পরিণত করেছে। তিনি চাকরি থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর কোনো এক সময়ে তাঁর স্কুল জীবনের সহপাঠী ও বন্ধু মাস্টার আব্দুল জলিলের সাথে রেঙ্গুনে গমন করেন। সে সময়ে রেঙ্গুনে অবস্থিত সুন্নী বাঙালি জামে মসজিদে ইমাম ও খতিবের দায়িত্বরত ছিলেন আওলাদে রাসূল রাহনুমায়ে শরীয়ত ও তরীক্বত আল্লামা হাফেজ ক্বারী সৈয়্যদ আহমদ শাহ সিরিকোটি রাহমাতুল্লাহি আলাইহ। তিনি তাঁর সাথে পরিচিত হন, তাঁর সান্নিধ্যে প্রভাবিত হন। তাঁর হাতে সিলসিলায়ে আলীয়া কাদেরীয়ার বায়আত গ্রহণ করেন। সিরিকোটি (রহ.)’র ব্যবহারিক জীবনের সহজ সরল ও অনাড়ম্বর আধ্যাত্নিক জীবনাদর্শের প্রতি তিনি আকৃষ্ট হন। অলীয়ে কামিলের পরশে তিনি নিজের যশ খ্যাতি ও আমিত্ব বিসর্জন দিয়ে আল্লাহ ও তদীয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সন্তুষ্টি অর্জনের প্রত্যয়ে মানব কল্যাণে নিজকে সমর্পিত করেন। নিজ পীর মুর্শীদের নির্দেশনা ও দুআ নিয়ে মানব সেবার মহান ব্রতে জ্ঞান চর্চার মিশন লাইব্রেরী প্রতিষ্ঠা, পত্রিকা প্রতিষ্ঠার মতো কঠিন ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজে আত্ন নিয়োগ করেন।

লাইব্রেরী ও পত্রিকা প্রতিষ্ঠা: একজন জ্ঞান পিপাসু ধর্মানুরাগী নিষ্ঠাবান মুসলিম হিসেবে নিরক্ষরতার অভিশাপ থেকে জাতিকে মুক্ত করার প্রত্যয় নিয়ে তিনি ১৯২৯ সালে প্রতিষ্ঠা করেন কোহিনুর লাইব্রেরী। সমাজের কবি সাহিত্যিক লেখক পাঠক অনেক জ্ঞানী গুনী সুধীজনের আগমনে কোহিনুর লাইব্রেরী জ্ঞান চর্চা, বই পড়া, শিক্ষার্থীদের মাঝে বই বিতররণের নির্ভরযোগ্য আস্থার ঠিকানা হয়ে উঠলো এ লাইব্ররী। এক বৎসরের ব্যবধানে তিনি ১৯৩০ সালে কোহিনূর ইলেকট্রিক প্রেস স্থাপন করে মুদ্রণ জগতে নবদিগন্তের সূচনা করেন। বাংলার ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে প্রখ্যাত কবি মাহবুব আলম চৌধুরী বিরচিত ‘কাঁদতে আসিনি ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি’ এ ঐতিহাসিক কবিতা প্রশাসনের নির্যাতনের ভয়ে কেউ তখন এ কবিতা ছাপাতে রাজি হননি। বাংলার নির্ভীক সাহসী সন্তান ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক মাতৃভাষার প্রতি গভীর মমত্ববোধ ও ভালোবাসার কারণে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কোহিনূর প্রেস থেকে এ কবিতা ছাপিয়ে দেন। এ কবিতা ছাপানোর দায়ে প্রেসের ম্যানেজার দবির উদ্দিন ছাহেবকে স্বৈরশাসককের মদদপুষ্ট পুলিশ বাহিনী গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। ইঞ্জিনিয়ার সাহেব আইনী প্রক্রিয়ায় তাঁকে জেল থেকে মুক্ত করেন তাঁর এ সাহসী ভূমিকার কারণে তিনি সর্বমহলে প্রশংসিত হন।

পূর্ব বাংলার প্রথম মুসলিম ইঞ্জিনিয়ার ১৯৫০ সালে ২২ ডিসেম্বর কোহিনূর নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা প্রকাশ করেন। কোহিনূর ইঞ্জিনিয়ার সাহেবের পরিবারের কোনো সদস্যের নাম নয়। কোহ্‌ ফার্সী শব্দ এর অর্থ পাহাড়, নূর শব্দটি আরবি, অর্থ আলো। কোহিনূর অর্থ হলো আলোর পাহাড়। চেতনার বাতিঘর, আলোর মশাল। কোহিনূর মঞ্জিল সবই কিন্তু ইঞ্জিনিয়ার সাহেব’র স্মৃতির উজ্জ্বল নিদর্শন। বাঙালি জাতির জন্য তাঁর অনবদ্য অবদান আজাদী পত্রিকা। ১৯৬০ সালের ৫ শে সেপ্টেম্বর তিনি প্রতিষ্ঠা করেন আজাদী পত্রিকা। দিনটি বিশ্ববাসীর জন্য মহিমান্বিত বরকতময় দিন পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তথা নূরনবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পৃথিবীতে শুভাগমনের স্মৃতি বিজড়িত দিন।

১৬ই ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। এ দিন বাংলাদেশে কোনো পত্রিকা প্রকাশিত হয়নি, ১৭ ই ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে চট্টগ্রাম থেকে প্রথম প্রকাশিত হয় দৈনিক আজাদী। এ অর্থে স্বাধীন বাংলার প্রথম প্রকাশিত পত্রিকা হচ্ছে দৈনিক আজাদী। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার ১১ বছর ৩ মাস ১১ দিন আগে ১৯৬০ সালের ৫ ই সেপ্টেম্বর আজাদী প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ৫ ই সেপ্টেম্বর ২০২৪ আজাদী প্রতিষ্ঠার ৬৫ বছরে পদার্পণ করেছে। আজাদী দেশে বিদেশে জনসাধারণের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতীক হয়ে উঠেছে। আজাদী বাংলাদেশের জাতীয় ইতিহাসের এক অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে। সামগ্রিক অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ আজাদী লাভ করেছে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল পদক। ১৯১৯ সালে মহামান্য রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ আবদুল হামিদ কর্তৃক আজাদীর পরিচালনা সম্পাদক জনাব ওয়াহিদ মালেক এর হাতে প্রেস কাউন্সিল পদক প্রদান আজাদীকে সম্মানিত করেছে। এ অর্জন চট্টগ্রামবাসীর জন্য নি:সন্দেহে গৌরবের ও আনন্দের। শুধু তা নয় আজাদীর সাবেক সম্পাদক (১৯৬২২০০৩) অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ কে মহান মুক্তিযুদ্ধে অবদান ও সাংবাদিকতার বিকাশে অনন্য ভূমিকার জন্য ১৯১৯ সালে বাংলাদেশে সরকার তাঁকে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করেন।

মরহুম ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক (.)’র একমাত্র সুযোগ্য পুত্র বিনয়ী সদালাপী দৈনিক আজাদীর সম্পাদক আলহাজ এম এ মালেক আদর্শ পিতার যোগ্য উত্তরসূরী হিসেবে তাঁর উন্নত চিন্তাধারা ও সুষ্ঠু পরিচালনায় আজাদী আজ জনপ্রিয় ও পাঠক প্রিয়তার শীর্ষে অবস্থান করছে। সাংবাদিকতায় তাঁর অনন্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ সরকার তাঁকে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি একুশে পদকে ভূষিত করেছে। আজাদী সংশ্লিষ্ট প্রথিতযশা খ্যাতিমান সাংবাদিকদের অনেকেই আজ আজাদীর কারণে এক এক জন এক এক টি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। আজাদীর চিফ রিপোর্টার শ্রদ্ধের হাসান আকবরের ধারাবাহিক লেখামালায় আজাদী এখন চট্টগ্রামের আয়না হিসেবে স্বীকৃত। আজাদীর সহযোগী সম্পাদক প্রখ্যাত কবি সাহিত্যিক ছড়াকার গ্রন্থ প্রণেতা রাশেদ রউফ সাহেব বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার২০১৬ রাষ্ট্রীয় সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন।

আনজুমান ও জামেয়া প্রতিষ্ঠায় ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক (রহ.) অবদান: ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক (রহ.) এতদঞ্চলের মুসলমানদের মধ্যে ইসলামের সঠিক রূপরেখা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের মাতাদর্শ ভিত্তিক সুন্নী আক্বিদার প্রচার প্রসারের লক্ষ্যে আলহাজ্ব নুর মোহাম্মদ আলকাদেরী (রহ.) সহ আরো কয়েকজন সৌভাগ্যবান ব্যক্তিবর্গ আপন মুর্শীদ আওলাদে রাসূল আল্লামা হাফেজ ক্বারী সৈয়দ আহমদ শাহ সিরিকোটি (.)কে বার্মার রেঙ্গুন থেকে এ দেশে আগমনের আমন্ত্রণ জানান। ইঞ্জিনিয়ার সাহেব ছিলেন সিরিকোটি (রহ.)’র অন্যতম খলিফা। সময়ের প্রয়োজনে উম্মাহর ঈমান আক্বিদার সংরক্ষণের মহান ব্রতে সিরিকোটি (রহ.) ইঞ্জিনিয়ার সাহেবের আমন্ত্রণে চট্টগ্রামে আগমন করেন এবং চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লাহস্থ তৎকালীন কোহিনূর মঞ্জিলে উঠেন। এখান থেকেই সুন্নীয়ত ও তরীক্বত সংশ্লিষ্ট কর্মসূচি ও কার্যক্রম পরিচালিত হতো। জামেয়া আহমাদিয়া সুন্নীয়া আলীয়ার মতো এশিয়াখ্যাত দ্বীনি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত এখান থেকেই সূচনা। হযরত আল্লামা শাহসূফী সৈয়্যদ আহমদ সিরিকোটি (রহ.) কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি সংস্থা আনজুমানএ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া প্রতিষ্ঠা ও জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলীয়া মাদরাসা প্রতিষ্ঠা লগ্নে ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক (রহ.)’র ভূমিকা ও অবদান অনস্বীকার্য।

মসজিদ মাদরাসা মক্তব খানকা, প্রতিষ্ঠাসহ মানবসেবা মূলক কর্মকাণ্ডে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা তরীক্বত পন্থীদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে। ১৯৩৮ সালে তুরস্কে ভয়াবহ ভূমিকম্পে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটে, তিনি বিপদগ্রস্ত দুর্গত মানুষের সাহায্যার্থে খান বাহাদুর ফরিদ আহমদ চৌধুরী, মুসলিম হাইস্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক আবদুর রহমান এম এ বিটি ও ডা. এম এ হাশেমসহ অনেক বিশিষ্ট জনের সহায়তায় ত্রাণ সামগ্রী ও অর্থ সংগ্রহ করে তুরস্কের দুর্গত ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কল্যাণে প্রেরণ করেছিলেন। আর্ত মানবতার সেবাই ধর্মের প্রকৃত শিক্ষা। ধর্মের মর্মবাণী অনুধাবন ও বাস্তবায়নে তিনি ছিলেন অনুকরণীয় আদর্শ। বড়পীর হযরত আবদুল কাদের জিলানী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি’র প্রবর্তিত কাদেরীয়া সিলসিলার উজ্জ্বল নক্ষত্র, মহান আল্লাহর নিয়ামত প্রাপ্ত অনুগ্রহভাজন, আলোকিত মানুষ, দৈনিক আজাদী পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা প্রাণপুরুষ ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ আবদুল খালেক রাহমাতুল্লাহি আলাইহি ১৯৬২ সালে ২৫ শে সেপ্টেম্বর মওলায়ে হাকিকীর সান্নিধ্যে গমন করেন। তিনি দেশপ্রেম মানবসেবা ও অসংখ্য দ্বীনি খিদমতের কারণে সর্বত্র শ্রদ্ধার সাথে স্মরণীয়। তাঁর জীবন কর্ম সত্যান্বেষীদের জন্য এক অনুকারণীয় আদর্শ। মহান আল্লাহ তাঁর প্রিয় হাবীব সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওসীলায় তাঁকে জান্নাতুল ফেরদৌসের উচ্চ মকাম দান করুন। আমীন। তথ্য সূত্র: ওয়াহিদ মালেক সম্পাদিত ‘৬০ বছরের দৈনিক আজাদী’।

লেখক: অধ্যক্ষ, মাদরাসাএ তৈয়্যবিয়া ইসলামিয়া সুন্নিয়া ফাযিল (ডিগ্রি), খতিব, কদম মোবারক শাহী জামে মসজিদ

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅনন্যসাধারণ ব্যক্তিত্ব : মহাত্মা আবদুল খালেক ইঞ্জিনিয়ার
পরবর্তী নিবন্ধপ্রবাহ