লোহাগাড়ায় এক খাল ইজারা নিয়ে অন্য খালে শ্যালো মেশিন বসিয়ে কৌশলে উত্তোলন করা হচ্ছে বালু। এতে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি হুমকির মুখে পড়েছে খালের পাড়, সড়ক, ফসলি জমি, বসতঘর, মসজিদ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বালু উত্তোলন বন্ধে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন এলাকাবাসী।
জানা যায়, চলতি সনে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে জামছড়ি বালু মহাল ইজারা দেওয়া হয়। কিন্তু ইজারাদার জামছড়ি খালের পরিবর্তে টংকাবর্তী খাল থেকে বালু উত্তোলন করছেন। চরম্বা ইউনিয়নের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া জামছড়ি খাল মিলিত হয়েছে টংকাবতী খালের সাথে। মিলনস্থল থেকে প্রায় ৩শ ফুট দূরে পদুয়া ইউনিয়নের তেওয়ারিখিল এলাকায় টংকাবতী খালে ২টি শ্যালো মেশিন বসিয়ে ইজারাদার দিন–রাত বালু উত্তোলন করছেন।
১৭ জুন বিকালে সরেজমিনে দেখা যায়, টংকাবতী খালের ওই স্থান থেকে প্রায় ৫ বছর আগেও নির্বিচারে বালু উত্তোলন করা হয়েছিল। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে খালের দুই পাড়ে ক্ষতচিহ্ন এখনো বিরাজমান। অনেকে হারিয়েছেন বসতভিটা ও ফসলি জমি। অনেক স্থানে খালপাড়ে চলাচলের রাস্তা ‘নাই’ হয়ে গেছে। বর্তমানে প্রায় এক মাস ধরে ইজারাদার জামছড়ি বালু মহাল ইজারা নিলেও টংকাবতী খালে কাছাকাছি ২টি শ্যালো মেশিন বসিয়ে নির্বিচারে বালু উত্তোলন করছেন। এতে খালের দুই পাড়ে নতুন করে ভাঙন দেখা দিয়েছে। পাশে কৃষিজমিতে স্তূপ করা হচ্ছে উত্তোলিত বালু। বালু পরিবহনের ভারী ট্রাক চলাচলের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গ্রামীণ সড়কের। শুরু থেকে এলাকাবাসী প্রতিবাদ করে আসছেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও অবহিত করেছেন। বালু উত্তোলনের স্থানে সংবাদকর্মীদের উপস্থিতি টের পেয়ে প্রায় শতাধিক এলাকাবাসী জড়ো হন। এ সময় তাদের আক্ষেপের কথা বলেন এবং টংকাবতী খাল থেকে বালু উত্তোলন বন্ধের জন্য বিভিন্ন স্লোগান দেন।
স্থানীয়রা জানান, জামছড়ি খালে ইজারা নিয়ে ইজারাদার টংকাবতী খাল থেকে নির্বিচারে বালু উত্তোলন করছেন। বালু উত্তোলনের প্রায় ৭শ ফুট দূরে রয়েছে আমিরাবাদ ও পদুয়া ইউনিয়নের সংযোগ সেতু। এছাড়া সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে মৌখিকভাবে জানানোর পরও কোনো প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন না। টংকাবতী খাল থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন দ্রুত বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
ইজারাদার মো. ইমতিয়াজ ফারুকী জানান, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জামছড়ি বালু মহাল ইজারা নিয়েছেন তিনি। কিন্তু ইজারা নেওয়া দাগের কিছু অংশ টংকাবতী খালে পড়েছে। তাই টংকাবতী খাল থেকে বালু উত্তোলন করছেন। তবে ইজারা নেওয়ার কাগজপত্র দেখতে চাইলে অপরাগতা প্রকাশ করেন তিনি। কাগজপত্র দেখতে চাইলে তার চট্টগ্রাম নগরীর অফিসে যেতে বলেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ ইনামুল হাছান বলেন, ইজাদার নির্দিষ্ট স্থান থেকে বালু উত্তোলন করছেন কিনা সেটা দেখার জন্য এসি ল্যান্ডকে পাঠানো হবে। পরবর্তীতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।