রাশিয়ার বিরুদ্ধে সুরক্ষার জন্য ‘ইউরোপীয় সেনাবাহিনী’ গড়ার আহ্বান জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র হয়ত আর ইউরোপের সহায়তায় এগিয়ে আসবে না।
জার্মানির মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে জেলেনস্কি ইউরোপীয় সেনাবাহিনী গড়ার এই ডাক দিয়ে আরও বলেন, ইউক্রেন কোনও শান্তি চুক্তি কখনও মেনে নেবে না যেটি তাদেরকে ছাড়া হবে। খবর বিডিনিউজের।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ফোনালাপ এবং দুই নেতার শান্তি আলোচনা শুরু করতে সম্মতির পর জেলেনস্কি একথা বললেন।
ওদিকে, মিউনিখ সম্মেলনে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স তার বক্তৃতায় সতর্ক করে বলেন, ইউরোপকে তার প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে ‘বড় পরিসরে উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।’ এরপরই জেলেনস্কি বললেন, আমি সত্যিই বিশ্বাস করি, সময় এসে গেছে। ইউরোপকে সশস্ত্র বাহিনী গঠন করতেই হবে। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মিউনিখে এসে স্পষ্ট করেই বলেছেন, ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার কয়েক দশকের পুরোনো সম্পর্কের অবসান হচ্ছে। এখন থেকে পরিস্থিতি ভিন্ন হবে। ইউরোপকে সে অনুযায়ী নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে হবে।
এ সপ্তাহের শুরুতে মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ বলেছিলেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন নেটোর জন্য একটি ‘ফ্যাক্টরি রিসেট’ (আসল সিস্টেম পুনরুদ্ধার) ছিল, যা ইঙ্গিত দেয় যে, জোটটিকে এখন থেকে সুগঠিত, শক্তিশালী ও বাস্তবিক হতে হবে। জেলেনস্কি বলেন, ইউরোপের জন্য হুমকি হতে পারে এমন বিষয়েও যুক্তরাষ্ট্র না বলতে পারে–সে সম্ভাবনা এখন আমরা নাকচ করতে পারি না। বহু নেতাই ইউরোপ প্রসঙ্গে বলেছেন যে, তাদের নিজস্ব সেনাবাহিনী (আর্মি) দরকার। একটি সেনাবাহিনী, ইউরোপের সেনাবাহিনী।
ইউরোপের একটি সেনাবাহিনী গড়া নিয়ে অন্য অনেক নেতাও প্রস্তাব দিয়েছেন। এর মধ্যে আছেন, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁও। তিনি দীর্ঘ সময় ধরে ইউরোপীয় ব্লকের নিজস্ব সামরিক বাহিনীর ধারণাকে সমর্থন করেছেন, যাতে ইউরোপের যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীলতা কমানো যায়। জেলেনস্কি বলেন, কিছুদিন আগে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আমাকে পুতিনের সঙ্গে তার আলাপ হওয়ার কথা বলেছিলেন। তিনি একবারও বলেননি, আলোচনার টেবিলে যুক্তরাষ্ট্রের ইউরোপকেও প্রয়োজন। এতেই অনেক কিছু বোঝা হয়ে যায়। পুরোনো সময় চলে গেছে, যখন যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপকে কেবল এ কারণেই সমর্থন করত, যে এ সমর্থন তাদের সব সময়ই ছিল, বলেন জেলেনস্কি।