খুব কাছের দেশ জার্মানী থেকে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের ট্রফি জিতে দেশে ফিরেছে স্পেনের খেলোয়াড়রা। আর তাদের বরণ করতে পথে পথে লাখো মানুষ। প্রায় সবারই গায়ে দলের জার্সি কিংবা পতাকার রঙের পোশাক। হাতে হাতে পতাকা। গায়ে জড়ানো পতাকা তো আছেই। পতাকার রঙে ক্যাপ–হ্যাট, বিশালাকৃতির চশমা এবং নানা কিছু। সব মিলিয়ে লাল–হলুদের সমুদ্র যেন। বলা যায় গৌরব আর ভালোবাসার স্রোত। সেই জোয়ার দিয়েই ইউরোতে চ্যাম্পিয়ন হওয়া দলকে বরণ করে নিলেন স্প্যানিশরা। বার্লিনে গত রোববার ইউরোর ফাইনালে ইংল্যান্ডকে ২–১ গোলে হারায় স্পেন। মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের আসরে তাদের চতুর্থ শিরোপা এটি। ১৬ বছর আগেও যে দেশটির ইউরো শিরোপা ছিল মাত্র একটি। এখন তারাই রেকর্ড সর্বোচ্চ চার বারের চ্যাম্পিয়ন। ফাইনাল শেষে রাতেই আনন্দ–উল্লাস হয়েছে স্পেনজুড়ে। পরদিনও চলতে থাকে উদযাপনের পালা। সকাল থেকেই পথে নামতে থাকে মানুষ। চ্যাম্পিয়ন ফুটবলাররা জার্মানি থেকে দেশে ফিরেন সোমবার দুপুরে। আগে যদিও জানা গিয়েছিল, তারা ফিরবেন মঙ্গলবার। তবে সোমবার দুপুরেই বিজয়ী দল মাদ্রিদ বিমানবন্দরে পা রাখে। বিমানবন্দরে তাদেরকে বরণ করে নেওয়া হয় নানা আনুষ্ঠানিকতায়। পরে কিছুটা বিশ্রাম নিয়ে গোটা দল যায় সারসুয়েলা প্যালেসে রাজা ষষ্ঠ ফেলিপের সঙ্গে দেখা করতে। রোববারের ফাইনালে বার্লিনের স্টেডিয়ামেও ছিলেন রাজা ও রানী। রাজপ্রাসাদে ছিল বিশেষ আয়োজন। রানী ও দুই রাজকন্যার গায়ে ছিল জাতীয় দলের জার্সি। দলকে অভিনন্দন জানিয়ে রাজা ফেলিপে বলেন যেভাবে আপনারা চেষ্টা করেছেন এবং যে আনন্দ নিয়ে খেলেছেন ও গোটা দেশের জন্য খুশির উপলক্ষ বয়ে এনেছেন। এজন্য আমরা কৃতজ্ঞ। আমাদের জন্য এরকম আনন্দ দারুণ কিছু। সেখান থেকে গোটা দলকে নেওয়া হয় স্পেনের প্রধানমন্ত্রীর সরকারী বাসভবন মনক্লোয়া প্যালেসে। সেখানেও দলকে সংবর্ধনা দেন প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেস। এরপর শুরু হয় আসল উদযাপনের পালা। ছাদ খোলা দ্বিতল বাসে শহর প্রদক্ষিণ করেন চ্যাম্পিয়নরা। পথে পথে জনস্রোত তো ছিলই। বাড়ির ছাদ, ব্যালকনি, জানালা দিয়েও হাত নেড়ে, পতাকা উড়িয়ে দলের প্রতি ভালোবাসা জানান স্প্যানিশরা। অনেকের গায়েই পোশাক লেখা ছিল ‘ইউরোপের সেরা’ কিংবা ‘ইউরোপের রাজা।’ চতুর্থ শিরোপার জন্য বিশাল করে ‘৪’ লেখা ছিল অনেকের পোশাকে। ফুটবলাররাও নেচে–গেয়ে নানাভাবে উদযাপন করেন ও মানুষের শুভেচ্ছার জবাব দেন। সেই বিজয়যাত্রা শেষ হয় সিবেলেস প্যালেসে। যেখানে ছিল উদযাপনের মূল আয়োজন। সেখানে পৌঁছতে পৌঁছতেই দিনের আলো মিলিয়ে যায়। তবে রাতের আঁধার কেটে যায় আনন্দ–আলোর বন্যায়। ততক্ষণে সিবেলেস প্যালেসের চারপাশ লোকে লোকারণ্য। তিল ধারণের ঠাঁই নেই যেন কোথাও। ‘চ্যাম্পিয়ন, চ্যাম্পিয়ন’ গর্জনে প্রকম্পিত হয় চারপাশ।