যুদ্ধের মধ্যে ইউক্রেনে গিয়ে গোলার আঘাতে বিধ্বস্ত বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) জাহাজ ‘এমভি বাংলার সমৃদ্ধি’র জন্য ক্ষতিপূরণ মিলেছে। বিদেশি বীমা প্রতিষ্ঠান থেকে ক্ষতিপূরণের অর্থ রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান সাধারণ বীমা করপোরেশনের কাছে জমা হয়েছে। বিএসসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কমডোর মো. জিয়াউল হক গতকাল বৃহস্পতিবার বলেন, বীমা দাবির অর্থ হিসেবে বিদেশী বীমা প্রতিষ্ঠান থেকে ক্ষতিপূরণের ২২ দশমিক ৪৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পাওয়া গেছে। খবর বিডিনিউজের।
বৃহস্পতিবারের দর অনুযায়ী, ১০৫ দশমিক ১২ টাকা ডলারের দাম ধরলে তা বাংলাদেশি মুদ্রায় দাঁড়ায় ২৩৬ কোটি টাকার মতো। আমাদের ক্লেইম করা পুরো অর্থই পাওয়া গেছে, জানিয়ে কমডোর জিয়াউল বলেন, সাধারণ বীমা করপোরেশনের মাধ্যমে বিএসসির ব্যাংক হিসেবে জমা হবে এই অর্থ।
ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযান শুরুর পর সেখানে গিয়ে আটকে পড়েছিল বাংলাদেশের জাহাজটি। ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে নোঙর করা অবস্থায় গত বছরের ২ মার্চ জাহাজটিতে গোলার আঘাত হয়। তাতে জাহাজটির নেভিগেশন ব্রিজ পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নিহত হন জাহাজটির তৃতীয় প্রকৌশলী হাদিসুর রহমান।
জাহাজটিতে মোট দুই নারীসহ মোট ২৯ জন ক্রু ছিলেন। জাহাজের বাকি নাবিকদের উদ্ধার করে দেশে ফিরিয়ে আনার পর জাহাজটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। যুদ্ধকালীন উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা জাহাজটির বীমা করা ছিল। দুর্ঘটনার পরপরই বিএসসি’র পক্ষ থেকে জাহাজটির বীমা দাবি করা হয়।
বিএসসির জাহাজের বীমা করা হয় সাধারণ বীমা করপোরেশনে। রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানিটি বিদেশি প্রতিষ্ঠানে পুনঃবীমা করে। সাধারণ বীমার এক কর্মকর্তা তখন বলেছিলেন, বাংলার সমৃদ্ধির মোট মূল্যের উপর ভিত্তি করে বীমা করা হয়। পরে বেশিরভাগ অংশ গচ্ছিত রাখা হয় বিদেশি প্রতিষ্ঠানে। এ ক্ষেত্রে বিদেশি
প্রতিষ্ঠানটি টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশন ঠিক করে দেয়। কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে বা ক্ষতিপূরণের টাকা দাবি করলে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের নিয়োগকৃত সলিসিটারের মধ্যস্ততায় তা নির্ধারণ করা হয়।
সাড়ে চার বছর আগে বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজটি ২ কোটি ৬৩ লাখ ডলারে চীন থেকে কেনা হয়েছিল। দুর্ঘটনার সময় অবচয় শেষে জাহাজটির মূল্য ছিল ২ কোটি ২৫ লাখ ডলারের মতো। ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বিএসসির বহরে বাংলার সমৃদ্ধিসহ জাহাজ ছিল মোট আটটি।