ইউক্রেন সংকট যে দামামা বাজিয়ে দিয়েছিল, রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে চলা অচলাবস্থা অবসানে আরও আলোচনার কথা বলায় এবং যুদ্ধ এড়াতে কিয়েভের কর্মকর্তাদের ছাড়ের ইঙ্গিত মেলায় সেই সঙ্কটের সুরে খানিকটা পরিবর্তন এসেছে। এরমধ্যে মস্কোয় জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শুলৎজের সঙ্গে বৈঠকের পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেন, রাশিয়া কোনও যুদ্ধ চায় না। ইউক্রেন সীমান্ত থেকে কিছু রুশ সরে যেতে শুরু করার পরই পুতিনের সঙ্গে জার্মান চ্যান্সেলরের এই বৈঠক হয়। এরপর শুলৎজের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে পুতিন বলেন, আমরা (যুদ্ধ) চাই, নাকি চাই না? যুদ্ধ চাই না বলেই আমরা আলোচনা প্রক্রিয়া শুরুর জন্য প্রস্তাব রেখেছি। কিন্তু রাশিয়ার এই প্রস্তাবে ইতিবাচক কোনও সাড়া মেলেনি বলে তিনি উল্লেখ করেন। খবর বিডিনিউজের।
সুর বদল : এর আগে সামরিক পদক্ষেপ শুরু করার পরিবর্তে ক্রেমলিন পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে আরও আলোচনা চায় বলে ইঙ্গিত দিয়েছে। রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে সামনে এখনও একটি কূটনৈতিক পথ আছে, এমনটি বলেছেন। আর প্রতিরক্ষামন্ত্রী সারজেই শোইগু পুতিনকে বলেছেন, ইউক্রেনের আশপাশে বড় ধরনের মহড়া শেষ হয়ে আসছে। পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে রাশিয়ার আলোচনার প্রসঙ্গে ল্যাভরভ বলেন, আমার বিশ্বাস আমাদের সম্ভাবনা এখনও শেষ হয়ে যায়নি। আমি সেগুলো চালিয়ে নেওয়ার ও তা আরও জোরদার করার প্রস্তাব করছি। পুতিন অস্পষ্টভাবে বলেন, ভালো।
সেনা সরানোর ঘোষণা : ইউক্রেন ঘিরে রাশিয়ার সামরিক শক্তি বৃদ্ধি নিয়ে উত্তেজনা এবং আগ্রাসনের আশঙ্কা বেড়ে যাওয়ার পর ইউক্রেন সীমান্ত থেকে কিছু সেনা ঘাঁটিতে ফিরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে মস্কো। গতকাল মঙ্গলবার রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইউক্রেন সংলগ্ন কয়েকটি এলাকা থেকে কিছু সেনা মহড়া শেষ করে ঘাঁটিতে ফিরে যাচ্ছে। রাশিয়ার ইন্টারফ্যাঙ বার্তা সংস্থা মন্ত্রণালয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, দেশজুড়ে ব্যাপক-মাত্রার সামরিক মহড়া এখনও চলছে। তবে দক্ষিণ এবং পশ্চিমাঞ্চলের সামরিক এলাকার কয়েকটি সেনা ইউনিটের মহড়া শেষ হয়েছে। এসব ইউনিটের সেনারাই ঘাঁটিতে ফিরে যেতে শুরু করেছে। তবে এই সেনাদের সংখ্যা কত তা মন্ত্রণালয় জানায়নি। আর এতে উত্তেজনা প্রশমন হবে কিনা তাও এখনও স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে না। মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা কিছু লোহালক্কড় ট্রাকে করে সরিয়ে নেবে আর সেনারা পদযাত্রা করে নিজেদের ঘাঁটিতে ফিরে যাবে। তবে রাশিয়ার এই কিছু সেনা সরে যাওয়াই ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন নিয়ে পশ্চিমাদের শঙ্কা কাটাতে যথেষ্ট হবে কিনা তা এখনও বোঝা যাচ্ছে না। ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস বলেছেন, রাশিয়ার আগ্রাসন চালানোর কোনও পরিকল্পনা নেই- একথা বিশ্বাস করতে হলে ইউক্রেন সীমান্ত থেকে পুরোমাত্রায়ই রুশ সেনাদের সরে যেতে দেখতে চায় যুক্তরাজ্য। ব্রিটিশ সরকারের এক কর্মকর্তা বলেন, কতসংখ্যক সেনা প্রত্যাহার করা হয় তা দেখার অপেক্ষায় আছেন তারা।