বাংলাদেশ–ভারত সিরিজের আগেই রাসেল ডোমিঙ্গো নড়বড়ে ছিলেন বিসিবির কাছে। গুঞ্জন ছিল রাসেল ডোমিঙ্গোকে বাদ দেয়া হবে। কিন্তু তখন বাদ দেওয়া হয়নি তাকে। টেস্ট দলের কোচ হিসেবে তাকে রেখে দেওয়া হয়। তবে সদ্য শেষ হওয়া ভারত সিরিজের পর নিজের শেষটাও যেন বুঝে ফেলেছিলেন ডোমিঙ্গো। তাই বুঝি তিনি নিজে থেকেই ছেড়ে দিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের প্রধান কোচের দায়িত্ব। ডোমিঙ্গোর বিদায় বলার পর বাংলাদেশের ক্রিকেটে এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, জাতীয় দলের পরবর্তী প্রধান কোচ কে হবেন? ডোমিঙ্গোর পদত্যাগের পরপরই আলোচনায় এসেছেন সাবেক কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। বলা হয় তিনিই হতে পারেন সম্ভাব্য বিকল্প। তবে শুধুমাত্র হাথুরুসিংহেই নয়, বেশ কিছু নাম সামনে রেখে এগুনোর চেষ্টা করছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। অস্ট্রেলিয়ার সাবেক তারকা ক্রিকেটার মাইক হাসি বা প্রোটিয়া ল্যান্স ক্লুজনাররাও আছেন আলোচনায়।
গতকাল বৃহস্পতিবার মিরপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে এমনটাই ইঙ্গিত দিয়েছেন বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন। তবে, কাদের সঙ্গে তারা আলাপ করছেন, সম্ভাব্য তালিকায় কে কে আছেন– সে বিষয়ে কোনো কিছুই এখন জানাতে নারাজ বিসিবি প্রধান নির্বাহী। শুধু এটুকুই বলেছেন, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হোম সিরিজের আগেই কোচ চূড়ান্ত করার কাজটি শেষ করতে চান তারা। এক প্রশ্নের জবাবে বিসিবি প্রধান নির্বাহী বলেন, ‘আসলে হেড কোচ নিয়োগ কিন্তু এরকম করে হয় না যে এক্স্যাক্টলি আমি এখনই বলে দিতে পারবো। আমাদের একজন গতকালই পদত্যাগ করেছে। এ পজিশনটা যেহেতু খালি হয়েছে আমরা এ ব্যাপারে কাজ করবো। যখন বিষয়টা পুরোপুরি নিশ্চিত হবে ও ডকুমেন্টেড হবে তখনই হয়তো আমরা বলতে পারবো।’ প্রধান নির্বাহী অফিসিয়াল কোনো বক্তব্যের বাইরে ইঙ্গিতমূলক কোনো তথ্য তার মুখ থেকে বের করেননি। তিনি মনে করেন, আগে থেকে তথ্য জানিয়ে দিলে বিসিবি যাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে, বিষয়টা তাদের জন্য হবে বিব্রতকর। নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন বলেন, ‘এর আগে কোনো নাম আমাদের দিক থেকে বলা ঠিক হবে না। যাদের সঙ্গে যোগাযোগ হচ্ছে বা হবে তাদের জন্যও বিষয়টা বিব্রতকর হবে। আমরা চাইবো বিষয়টা আপনারা এভাবেই দেখেন। যেহেতু জাতীয় দলের হেড কোচ দরকার, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আনার ব্যাপারে কাজ করবো।’ ইংল্যান্ডের বাংলাদেশ সফরের আগেই কোচ নিয়োগ চূড়ান্ত করতে চান বলে জানান বিসিবি প্রধান নির্বাহী। তিনি বলেন, ‘ইংল্যান্ড–বাংলাদেশ সফর করবে। এখানে একটু সুবিধা আছে সময় পাচ্ছি মাঝে বিপিএলের সময়। চেষ্টা থাকবে ইংল্যান্ড সফরের আগে নির্ভরযোগ্য কাউকে জাতীয় দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে পারি কি না।’ যাকেই নিয়োগ দেয়া হোক না কেন তাকে লম্বা সময়ের জন্যই যেন দেয়া যায় সে বিষয়ে চিন্তা করছে বিসিবি। প্রধান নির্বাহী বলেন, ‘এটা কিন্তু পরিস্থিতি বলে দেবে। আমরা যদি এরকম সুইটেবল কাউকে পাই, যাকে নিয়ে মনে হবে লম্বা সময়ে যেতে পারবো, তখন অবশ্যই আমরা লম্বা সময়ের জন্যই যাবো। এটাই আমরা প্রেফার করি। জাতীয় দলের হেড কোচ লম্বা সময়ের জন্যই হওয়া দরকার।’ কী ধরনের কোচ নিয়োগ দেবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে সিইও বলেন, ‘আমরা যখন সব নাম পাবো, তখন সিদ্ধান্ত নেবো এর মধ্যে সেরা অপশন কোনটা হবে। অবশ্যই সেরা অপশনটাকেই নেবো।
সেক্ষেত্রে নাম, অভিজ্ঞতা; সবই বিবেচনা করা হবে। এই মুহূর্তে এটা বলা ঠিক হবে না। বোর্ড তখন সিদ্ধান্ত নেবে কিভাবে প্রসিড করবে।’ শুধু প্রধান কোচই নয়, বিসিবির পুরো কোচিং প্যানেলটা নিয়েই চিন্তা করছেন তারা। নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন বলেন, ‘বিষয়টা এরকম না ঠিক। আমাদের বোর্ড সভাপতি বলেছেন, চেষ্টা করবো পুরো সিস্টেমটাকে নতুন করে সাজিয়ে নেওয়ার জন্য। সে ক্ষেত্রে কয়েকটা পজিশনের জন্যই চিন্তা করছি। এর মধ্যে একটা হলো জাতীয় দল, ‘এ’ দল, হাই পারফরম্যান্স এসব প্রোগ্রামে সমন্বয়ে একটু ঘাটতি আছে। এটা কিভাবে করা যায়। সে ক্ষেত্রে হেড অব প্রোগ্রামসের জন্য একজন আনতে পারি। এ বিষয়গুলো বেশ কিছুদিন ধরে কাজ করছিলাম। চেষ্টা করবো কমপ্লিট সেটাপ নিয়ে আসা।’