আড়াই বছর পর বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তার সঙ্গে তার স্ত্রী তাহেরা খসরু আলম এবং ভায়রা (স্ত্রীর বোনের স্বামী) গোলাম সরোয়ারকেও তলব করা হয়েছে বলে দুদকের পরিচালক (জনসংযোগ) প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য জানিয়েছেন। খবর বিডিনিউজের।
আগামী ১ মার্চ তাদের রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদক প্রধান কার্যালয়ে উপস্থিত হতে অনুসন্ধান কর্মকর্তা কমিশনের উপ-পরিচালক সেলিনা আক্তার গতকাল মঙ্গলবার নোটিস পাঠিয়েছেন বলে জানান প্রনব।
২০১৮ সালের ১৬ অগাস্ট অবৈধ লেনদেন, অর্থপাচার, অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আমীর খসরুকে তলব করে নোটিস দিয়েছিলেন দুদকের তৎকালীন পরিচালক কাজী শফিকুল। ওই নোটিসে একই বছরের ২৮ অগাস্ট বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্যকে সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ে হাজির হতে বলা হয়।
আমীর খসরুর বিরুদ্ধে বেনামে পাঁচ তারকা হোটেল ব্যবসা, ব্যাংকে কোটি কোটি টাকা অবৈধ লেনদেনসহ বিভিন্ন দেশে অর্থপাচারের পাশাপাশি স্ত্রী, পরিবারের অন্যান্য সদস্য ও নিজের নামে শেয়ার ক্রয়সহ জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ পাওয়ার কথা ওই নোটিসে বলা হয়েছিল। ওই তলবে আমীর খসরু উপস্থিত না হওয়ায় পরে একই বছরের ১০ সেপ্টেম্বর হাজির হতে আরেকটি নোটিস পাঠিয়েছিল দুদক। কিন্তু তিনি নোটিসের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ওই বছরের ৩ সেপ্টেম্বর হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন।
এরপর ২০১৮ সালেরই ১০ সেপ্টেম্বর দুদকের জিজ্ঞাসাবাদে হাজির না হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে একটি চিঠি পাঠান তিনি। হাই কোর্টে এই রিট ‘বিচারাধীন’ জানিয়ে এর নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ না নিতে সেখানে অনুরোধ করা হয়। পরে একই বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর ওই রিট আবেদন বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের হাই কোর্ট বেঞ্চে শুনানির জন্য তোলা হলে তা সরাসরি খারিজ করে দেয় আদালত। এরপরও আমীর খসরু দুদকে উপস্থিত হননি বলে দুদক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। পরে ২০১৯ সালের ৬ অগাস্ট আমীর খসরু ও তার স্ত্রীকে সম্পদ বিবরণী দাখিল করতে পৃথক নোটিস দিয়েছিল দুদক। ওই নোটিসে অনুসন্ধানে আমীর খসরুর বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়ের বেশি নামে-বেনামে বিপুল সম্পদের প্রমাণ মিলেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। এর আগে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর আমির খসরু ও তার স্ত্রী তাহেরা খসরু আলমকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয় দুদক।