প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল আহতদের যথাযথ চিকিৎসার আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে যাতে কেউ আর দেশবাসীর জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে। তিনি বলেন, ধ্বংসযজ্ঞ ও নৃশংসতাকারী অপরাধীদের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া উচিত যাতে দেশের মানুষের জীবন নিয়ে কেউ আর ছিনিমিনি খেলতে না পারে। শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে বিএনপি–জামায়াতের সহিংসতায় হামলার শিকার হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতদের দেখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। যারা এই ধরনের জঘন্য কাজ করেছে তাদের খুঁজে বের করার জন্য তিনি দেশবাসীর প্রতি তার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন। খবর বাসসের।
প্রধানমন্ত্রী জনগণের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা বন্ধ করার লক্ষ্যে সামপ্রতিক দেশব্যাপী নৃশংসতার জন্য দায়ী অপরাধীদের যথাযথ শাস্তির প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, এটি একটি খুব বেদনাদায়ক পরিস্থিতি। অনেক মানুষ হতাহত হয়েছে। এমন মৃত্যুর মিছিল হবে আমি কখনোই চাইনি। কিন্তু আজ বাংলাদেশে এমন ঘটনা ঘটেছে। আমি কখনো চাইনি এদেশে কেউ তাদের প্রিয়জনকে হারাবে।
তিনি আরো বলেন, আমার প্রশ্ন হল তারা এটা থেকে কী অর্জন করেছে। অথচ কত মানুষ প্রাণ হারিয়েছে! কত পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে! প্রধানমন্ত্রী নিহতদের আত্মার চির শান্তি এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন। তিনি বলেন, আহতদের চিকিৎসার জন্য যা যা প্রয়োজন আমরা তা করব যাতে তাদের চিকিৎসা দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো ত্রুটি না ঘটে। তিনি বলেন, চিকিৎসক, স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী আহত রোগীদের দেখতে গিয়ে তাদের যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করছেন। শেখ হাসিনা বলেন, তিনি আরো হাসপাতাল পরিদর্শন করবেন যেখানে আহতরা এখন চিকিৎসাধীন।
তিনি বলেন, কোটা আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে জামায়াত–শিবির, বিএনপি ও ছাত্রদল এসব নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড চালিয়েছে। তাদের মানবতাবোধ নেই, দেশের প্রতি ভালবাসা ও মমতা নেই, দেশের প্রতি দায়িত্ববোধ নেই এবং তারা মানুষকে মানুষ বলে মনে করে না।
তিনি বলেন, আমরা (ছাত্রদের) সব দাবি মেনে নিয়েছি তাহলে আবার (আন্দোলন) কেন? এটা আমার প্রশ্ন। এটা কি জঙ্গিবাদের সুযোগ তৈরি করার জন্য? শেখ হাসিনা আহতদের সেবা দেওয়ার জন্য চিকিৎসকদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
প্রধানমন্ত্রী গতকাল বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ঢামেক হাসপাতালের জরুরি ইউনিটে যান এবং সেখানে চিকিৎসাধীন আহত ব্যক্তিদের অবস্থার খোঁজখবর নেন। তিনি আহতদের সুচিকিৎসার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন।
এ সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডাঃ রোকেয়া সুলতানা ও স্থানীয় সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম উপস্থিত ছিলেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী ক্ষতি প্রত্যক্ষ করতে গত বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর মিরপুর ১০ নম্বরে মেট্রোরেল স্টেশন এবং গতকাল সকালে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ভবন পরিদর্শন করেন।